ব্লুচারের প্রেমপত্র

বিখ্যাত প্রাশিয়ান সেনাপতি ব্লুচারের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে ব্লুচারের পরিচিতি, ব্লুচারের খ্যাতি, ব্লুচারের প্রেম, ব্লুচারের প্রেমিকা ও তার মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।

সেনাপতি ব্লুচারের প্রেমপত্র

ঐতিহাসিক প্রেমপত্রব্লুচারের প্রেমপত্র
পরিচিতিবিখ্যাত প্রশিয়ান সেনাপতি
দেশপ্রাশিয়া
যুদ্ধে যোগদানওয়াটারলুর যুদ্ধ
প্রেমিকাআপন সহধর্মিণী
ব্লুচারের প্রেমপত্র

ব্লুচার ছিলেন বিখ্যাত প্রাশিয়ান সেনাপতি। প্রথম জীবনে সামান্য় সৈনিক – পরে আপন অধ্যবসায় বলে তিনি সিপাহশালারের পদে উন্নীত হন এবং তারপর নেপোলিয়ন-এর বিরুদ্ধে, ডিউক অব ওয়েলিংটনকে সাহায্য করেন। প্রকৃতপক্ষে ব্লুচারের সহযোগিতা ব্যতীত ওয়াটারলুর যুদ্ধ জয় করা ডিউকের পক্ষে একরূপ অসম্ভব বললেও অত্যুক্তি হয় না।

তাঁর প্রথম জীবনের কোনো পত্রই পাওয়া যায় না। প্রৌঢ়ত্বের প্রান্তে এসে Brieme-এর যুদ্ধের পর তিনি তাঁর সহধর্মিণীকে যে পত্র লিখেন তারই ভাবানুবাদ আমরা প্রকাশ করলাম। বৃদ্ধ সৈনিক একদিকে যেমন সরল ছিলেন অন্য়দিকে বেশ আত্মম্ভরী ছিলেন। পত্রখানি পাঠ করলে তা বুঝতে পারা যায়।

প্রিয়তমাসু,

বিপুল বিক্রমে আক্রমণ চলছে। গতকাল নেপোলিয়নের প্রতি প্রথম আঘাত আমিই হেনেছিলাম জান? যুদ্ধ আরম্ভ হবার পরই রাশিয়ার অধীশ্বর এবং আমাদের সম্রাট এসে পড়লেন – দুজনেই আমার হাতে সব নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে আমার বীরত্ব দেখতে লাগলেন। বেলা প্রায় একটার সময় আমি শত্রু-সৈন্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লাম – যুদ্ধ চলল অনেক রাত্রি পর্যন্ত। রাত্রি দশটার মধ্যে নেপোলিয়নের প্রায় সব ঘাঁটিগুলোই আমি অধিকার করলাম। কম করে প্রায় ষাটটি কামান আমার হস্তগত হল – আর যুদ্ধে বন্দী হল প্রায় তিন হাজার সৈন্য – বোঝ একবার কি কাণ্ডটাই না হয়ে গেল! আর হতাহতের সংখ্যা অগণ্য! ভেবে দেখ একবার ব্যাপারখানা! চারিদিকে ধন্য ধন্য রব উঠল – রাজারা ত অবাক। আলেকজান্ডার ছুটে এলেন – আমার হাতে হাত দিয়ে উল্লাসে চেঁচিয়ে উঠলেন “ধন্য ব্লুচার, তুমি আজ রাজাকে বিজয়ী করেছ, লোকে তোমার জয়গান করছে – আশীর্বাদ করছি তোমার মঙ্গল হোক।”

আমার ক্লান্তি ঘুচে গেল – পাঁচঘণ্টা ধরে নিশ্চিত হয়ে ঘুমালাম, কথাছিল আজ সকালে আর একবার আক্রমণ করে শত্রুকে একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে, কিন্তু তা হলো না; নেপোলিয়ন পিছনে হঠছেন – পালাচ্ছেন ফ্রান্স-এর দিকে। আমরা তাঁকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দেখব একবার কেমন তিনি ফ্রান্সের সম্রাট, কেমন করে আবার ফ্রান্সের সিংহাসনে বসেন? তাঁর মাথার মুকুট আর স্বাধীন সম্রাটের সম্মানস্বরূপ থাকবে না – এখন থেকে তা হবে পরাধীন সামন্ত নৃপতির প্রতি বিজয়ী রাজাধিরাজের অনুগ্রহ চিহ্ন।

আশ্চর্য আমার সৈন্যেরা প্রায় সকলেই অক্ষত – তারা তোমাকে স্মরণ করছে – তোমায় দেখতে চাইছে। এবার শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে তুমি নিশ্চিত জেনো। কবে তোমার সঙ্গে আবার আমার মিলন হবে সেই শুভদিনের প্রতিক্ষা করছি প্রিয়তমে। আমাদের প্রিয়জন যে যেখানে আছেন সকলকে এই সংবাদ দিও – দেখ, কেউ যেন বাদ না পড়ে! এতবড় একটা ব্যাপার, এতখানি আনন্দ, এর থেকে কাউকে বঞ্চিত করো না।

আনন্দে অধীর আমার যেন হাত কাঁপছে আর লিখতে পারছি না, কিছু মনে করো না। আমি তোমারই – মনে প্রাণে অন্তরে অন্তরে একান্ত তোমারই।

(FAQ) ব্লুচারের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ব্লুচার কে ছিলেন?

একজন বিখ্যাত প্রাশিয়ান সেনাপতি।

২. ব্লুচার কোন যুদ্ধে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন?

ওয়াটারলুর যুদ্ধ।

৩. ব্লুচারের প্রেমপত্রটি কাকে লেখা?

তার সধর্মিণীকে।

Leave a Comment