বিহার প্রদেশের বিপ্লব প্রচেষ্টা

বিহার প্রদেশের বিপ্লব প্রচেষ্টা প্রসঙ্গে ঢাকার অনুশীলন সমিতির সভ‌্য রেবতী নাগ, বিহার প্রদেশের ছাত্রদের সামনে রেবতী নাগের প্রচার, রেবতী নাগের দ্বারা বিহারে সমিতি স্থাপন, রেবতী নাগের দ্বারা বিহারের ভাগলপুরে গোপন আশ্রয়ের ব্যবস্থা, বিহার থেকে রেবতী নাগের পলায়ন, বিহারের ভাগলপুর সমিতির সকল সভ্য গ্ৰেপ্তার ও বিহার প্রদেশে বিপ্লব প্রচেষ্টার অবসান সম্পর্কে জানবো।

বিহার প্রদেশের বিপ্লব প্রচেষ্টা

ঐতিহাসিক ঘটনাবিহার প্রদেশের বিপ্লব প্রচেষ্টা
প্রধান উদ্যোক্তারেবতী নাগ
ভাগলপুর সমিতি১৯১৬ খ্রি:
রেবতী নাগ হত্যা১৯১৭ খ্রি:
বিহার প্রদেশের বিপ্লব প্রচেষ্টা

ভূমিকা :- বেনারস ষড়যন্ত্র মামলার পর ঢাকার অনুশীলন সমিতি সরাসরি বিহারে সংগঠন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা আরম্ভ করে। এই উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে কয়েকজন সভ্যকে একের পর এক বিহারে পাঠান হয়।

ঢাকার অনুশীলন সমিতির সভ্য রেবতী নাগ

কিন্তু এদের মধ্যে রেবতী নাগ ব্যতীত অন্য কারও চেষ্টা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। রেবতী ছিলেন একজন পলাতক বিপ্লবী। বাংলাদেশ-এ কয়েকটি বৈপ্লবিক ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ তাঁর অনুসন্ধান করছিল।

বিহার প্রদেশের ছাত্রদের সামনে রেবতী নাগের প্রচার

  • (১) ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে রেবতী ভাগলপুরকে কেন্দ্র করে একটি বৈপ্লবিক সমিতি গঠনের চেষ্টা আরম্ভ করেন। তিনি ভাগলপুর কলেজের ও ভাগলপুরের বাররী উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রের সাথে পরিচয় করে তাদের সাথে রাজনীতিক আলোচনা চালাতে থাকেন।
  • (২) রেবতী তাদের সামনে বাংলার বিপ্লবীদের সাহসিকতাপূর্ণ কার্যকলাপের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তাদের উদ্বুদ্ধ করে তুলতেন এবং ইংরেজ শাসকদের শোষণ ও উৎপীড়নের নগ্ন চিত্র অঙ্কিত করে তাদের মনে ক্রোধের আগুন জ্বালিয়ে দিতেন।

রেবতী নাগের দ্বারা বিহারে সমিতি স্থাপন

এইভাবে রেবতী কয়েকটি ছাত্র সংগ্রহ করতে সক্ষম হন এবং তাদের নিয়ে একটি সমিতি স্থাপন করেন। ক্রমশ অন্যান্য শহরেও সমিতির শাখা স্থাপিত হয়।

রেবতী নাগের দ্বারা বিহারের ভাগলপুরে গোপন আশ্রয়ের ব্যবস্থা

বাংলাদেশের বিপ্লবীরা প্রয়োজন হলে যাতে পালিয়ে এসে ভাগলপুরে আশ্রয় নিতে পারেন তার জন্য রেবতী একটি গোপন আশ্রয়স্থলও সংগ্রহ করেন।

বিহার থেকে রেবতী নাগের পলায়ন

১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে রেবতীর সন্ধান পেয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করবার জন্য বাংলাদেশ থেকে একজন গোয়েন্দা অফিসার ভাগলপুরে উপস্থিত হলে রেবতী গ্রেপ্তার এড়াইবার জন্য পলায়ন করেন।

বিহারের ভাগলপুর সমিতির সকল সভ্য গ্ৰেপ্তার

কিছুদিন পর পুলিশের সাথে সহযোগিতার সন্দেহে রেবতী বিপ্লবীদের দ্বারা নিহত হন। রেবতীর পলায়নের কিছুদিন পরে ভাগলপুর সমিতির সকল সভ্য পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।

বিহার প্রদেশে বিপ্লব প্রচেষ্টার অবসান

১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে এদের বিচার হয়। বিচারে এদের কয়েকজনকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়, আর কয়েকজনকে কিছুকাল নজরবন্দী করে রাখা হয়। এইভাবে এই সময় বিহার প্রদেশে বিপ্লব প্রচেষ্টার অবসান ঘটে।

উপসংহার :- এরপর ভারতের বিপ্লব প্রচেষ্টা কঠোর হাতে দমনের উদ্দেশ্যে ভারত সরকার কুখ্যাত ‘রাউলাট কমিটি’ বা ‘সিডিসন কমিটি’ গঠন করে।

(FAQ) বিহার প্রদেশের বিপ্লব প্রচেষ্টা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কোন সমিতির প্রচেষ্টায় বিহার প্রদেশে বৈপ্লবিক সংগ্ৰাম শুরু হয়?

ঢাকার অনুশীলন সমিতি।

২. ভাগলপুরে সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন কে?

রেবতী নাগ।

৩. রেবতী নাগের মৃত্যু কিভাবে হয়?

পুলিশের সাথে সহযোগিতার সন্দেহে বিপ্লবীদের হাতে নিহত হন।

Leave a Comment