ঔরঙ্গজেবের শেষ জীবন

ঔরঙ্গজেবের শেষ জীবন প্রসঙ্গে অক্লান্ত সৈনিক, স্বজন বিয়োগ পুত্রদের মধ্যে বিদ্রোহ, স্বতন্ত্র চেতনা ব্যক্ত, পুত্র আজমকে চিঠি, পুত্র কামবক্সকে পত্র, সচেতন বিলাপ, মৃত্যু ও দৌলতাবাদের কবরস্থ সম্পর্কে জানবো।

ঔরঙ্গজেবের শেষ জীবন

বিষয়ঔরঙ্গজেবের শেষজীবন
মুঘল বাদশাঔরঙ্গজেব
মৃত্যু১৭০৭ খ্রি
স্থানআহমদনগর
সমাধিদৌলতাবাদ
ঔরঙ্গজেবের শেষ জীবন

ভূমিকা :- সর্ববৃহৎ ভারত সাম্রাজ্য-এর সর্বপ্রথম অধীশ্বর ছিলেন ঔরঙ্গজেব। অবশ্য ঔরঙ্গজেবের শেষ জীবন মোটেই শান্তির ছিল না।

অক্লান্ত সৈনিক ঔরঙ্গজেব

চারদিকে সাম্রাজ্যের বিদ্রোহ দমনে দীর্ঘ পঁচিশ বছর তাঁকে অক্লান্ত সৈনিক হিসেবে দাক্ষিণাত্যে শহর পিছনে ছুটতে হয়েছে। একদিনও তিনি বিশ্রাম পান নি। তাঁকে ঘোড়ার পিঠে নামাজ পড়তে হয়েছে। শত্রুরাও এই দৃশ্য দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে।

ঔরঙ্গজেবের স্বজন বিয়োগ

অন্যদিকে স্বজন বিয়োগের ব্যথা তাকে পীড়িত করেছে। ১৭০২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বিদুষী কন্যা জেবন্নিসার মৃত্যু হয় এবং ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বিদ্রোহী জ্যেষ্ঠপুত্র আকবর পারস্যে পরলোকগমন করেন।

ঔরঙ্গজেবের পুত্রদের মধ্যে বিদ্রোহ

সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার নিয়ে পুত্রদের মধ্যে বিদ্রোহী মনোভাব দেখে, তাঁদের সাম্রাজ্য বন্টন করে নেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু পিতার এই পরামর্শে কেউই কর্ণপাত করে নি।

ঔরঙ্গজেবের স্বতন্ত্র চেতনা ব্যক্ত

সাম্রাজ্যের আসন্ন বিপদ সম্বন্ধে তাঁর স্বতন্ত্র চেতনার কথা পুত্রদের কাছে তাঁর লিখিত পত্রাবলি থেকে জানা যায়।

পুত্র আজমকে ঔরঙ্গজেবের পত্র

তিনি তাঁর পুত্র আজমকে এক পত্রে লেখেন “আমি একাকী এসেছিলাম, একাকী প্রত্যাবর্তন করছি। আমি প্রজাদের কোনো উপকার করতে পারিনি এবং ভবিষ্যৎ সম্বন্ধেও কোনো আশা পোষণ করতে পারছি না।”

পুত্র কামবক্সকে ঔরঙ্গজেবের পত্র

পুত্র কামবক্সকে অন্য এক পত্রে লেখেন “আমার ত্রুটির ভার আমি নিজেই সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছি… যাই ঘটুক, আমি যাত্রা করলাম।”

ঔরঙ্গজেবের সচেতন বিলাপ

বার্ধক্যে ও নানা দুশ্চিতার ভারে অবনত মৃত্যুপথযাত্রী অসহায় সম্রাটের সচেতন বিলাপ আমাদের চিত্তে তাঁর জন্য করুণার উদ্রেক করে।

ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু

ইতিমধ্যে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। দেহ ও মনের পীড়া নিয়ে ভারতবর্ষের সর্বপ্রথম সবচেয়ে বৃহত্তম সাম্রাজ্যের স্রষ্টা ঔরঙ্গজেব ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দের ৩ মার্চ শুক্রবার দাক্ষিণাত্যের আহম্মদনগরে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

দৌলতাবাদে ঔরঙ্গজেবকে সমাধিস্থ

তাঁর মৃতদেহ দৌলতাবাদে এনে, মুসলিম সাধক বুরহানউদ্দিনের সমাধিস্থানের পাশে সমাধিস্থ করা হয়।

উপসংহার :- যে কর্মবহুল দাক্ষিণাত্যের ভূমিতে যাঁর গৌরব-রবি প্রথম বিকশিত হয়, জীবনসায়াহ্নে পুনরায় সেখানেই তাঁর নিজের ও মুঘলদের সযত্নে গঠিত সাম্রাজ্যের জীবন সূর্য অস্তমিত হয়।

(FAQ) ঔরঙ্গজেবের শেষ জীবন সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু হয় কখন?

১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে।

২. ঔরঙ্গজেব কোথায় মৃত্যুবরণ করেন?

দাক্ষিণাত্যের আহমদনগরে।

৩. ঔরঙ্গজেবের মৃতদেহ কোথায় সমাধিস্থ করা হয়?

দৌলতাবাদে।

Leave a Comment