মারাঠা নায়ক রাজারাম প্রসঙ্গে তার রাজসভা, মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, মারাঠাদের পানহালা উদ্ধার , মুঘলদের জিঞ্জি অবরোধ, রাজারামের পলায়ন, ব্যাপক আক্রমণের পরিকল্পনা ও তার মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।
মারাঠা নায়ক রাজারাম
ঐতিহাসিক চরিত্র | রাজারাম |
রাজত্বকাল | ১৬৮৯-১৭০০ খ্রি: |
পূর্বসূরি | শম্ভুজী |
উত্তরসূরি | তৃতীয় শিবাজি |
মৃত্যু | ১৭০০ খ্রি: |
ভূমিকা :- এগার বছর ধরে রাজারাম ছিলেন মারাঠাদের নামেমাত্র শাসক। ত্রিশ বছর বয়সে তাঁর অকালমৃত্যু হয়। যুদ্ধ বা প্রশাসন, কোনো ক্ষেত্রেই নেতৃত্বের যোগ্যতা তিনি দেখাতে পারেন নি।
রাজারামের বিজ্ঞ পরামর্শদাতা
তাঁর বিজ্ঞ পরামর্শদাতা ছিলেন রামচন্দ্র পন্থ এবং প্রহ্লাদ নিরাজী, আর সাহসী যোদ্ধা ছিলেন শান্তাজী ঘোরপাড়ে এবং ধনাজী যাদব।
রাজারামের রাজসভা
রাজারামের রাজসভা ছিল জিঞ্জিতে। পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই দুর্গটি সেই অঞ্চলে তাঁর কার্যকলাপের কেন্দ্রে পরিণত হয়।
মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ
পশ্চিমে মহারাষ্ট্রে মারাঠা সেনাপতি এবং কর্মচারীগণ তাদের নিজ উদ্যোগে এবং সম্পদে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগঠিত করেন। নিয়মিতভাবে সংগঠিত কোনো কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব না থাকায় এই প্রতিরোধ ‘জন যুদ্ধে’র রূপ নেয়।
মুঘলদের বিরুদ্ধে মারাঠা দলের উত্তেজনা
মুঘলদের বিধ্বংসী কার্যকলাপের প্রতিশোধ নেবার বাসনায় উত্তেজিত হয়ে মারাঠা দলগুলি মুঘল অধিকৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ল, মুঘল সৈন্যবাহিনীকে ব্যতিবস্ত করল, তাদের ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করল, তাদের অস্ত্র ও সম্পদ লুণ্ঠন করল এবং জনগণের কাছ থেকে অর্থ আদায় করল।
আক্রমণের মোকাবিলায় মুঘলদের অসামর্থ্য
মুঘলরা কার্যকরীভাবে এই সব আক্রমণের মোকাবিলা করতে পারল না; তারা সন্মুখ যুদ্ধ করতে পারত (যা মারাঠারা এড়িয়ে যেত) এবং দুর্গ অবরোধ করতে পারত। মুঘলরা একটি দুর্গ দখল করলে সাধারণতঃ মারাঠারা তা পুনরুদ্ধার করত, আবার মুঘলরা তা দখল করত।
চূড়ান্ত সাফল্য লাভে ঔরঙ্গজেবের অসামর্থ্য
ঔরঙ্গজেব কোনো চূড়ান্ত সাফল্য লাভ করতে পারলেন না, এমন কোনো রাষ্ট্রীয় বাহিনী অথবা মারাঠা সরকার ছিল না যা তিনি ধ্বংস করতে পারতেন।
মারাঠাদের পানহালা উদ্ধার
১৬১০ খ্রিস্টাব্দে মারাঠারা একজন নেতৃস্থানীয় মুঘল সেনাপতিকে বন্দী করে। ১৬৯২ খ্রিস্টাব্দে তারা মুঘলদের হাত থেকে পানহালা উদ্ধার করে।
গেরিলা যুদ্ধে অভিজ্ঞ নায়ক শান্তাজী
- (১) ১৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে শান্তাজী দুজন উচ্চপদস্থ মুঘল সেনাপতিকে পরাজিত এবং হত্যা করেন। গেরিলা যুদ্ধের এই অভিজ্ঞ নায়ক মুঘলদের মধ্যে এমন এক আতঙ্ক সৃষ্টি করেন যে কোনো মুঘল সেনাপতি তাকে বাধা দিতে সাহস করতেন না।
- (২) কিন্তু তিনি কটুভাষী এবং অহঙ্কারী ছিলেন। এইজন্য তিনি রাজারামের অপ্রীতিভাজন হয়েছিলেন। ধনাজী যাদব তাঁর ব্যক্তিগত শত্রু ছিলেন। ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দে তাকে হত্যা করা হয়। মারাঠাদের সংগ্রামের প্রতি এটা ছিল একটি বড় আঘাত, কিন্তু তাদের তখনও আত্মরক্ষা করার মত যথেষ্ট জীবনীশক্তি ছিল।
মুঘলদের জিঞ্জি অবরোধ
জুলফিকর খাঁ নামে একজন নেতৃস্থানীয় মুঘল সেনাপতি জিঞ্জি অবরোধ শুরু করেন, কিন্তু ১৬৯৮ খ্রিস্টাব্দের আগে এই বিখ্যাত পার্বত্য দুর্গের পতন ঘটে নি।
রাজারামের পলায়ণ
মুঘলরা বহু লুন্ঠিত দ্রব্য পেল, কিন্তু রাজারামকে বন্দী করতে পারল না, কারণ তিনি ইতিমধ্যেই পালিয়ে গিয়েছিলেন।
রাজারামের ব্যাপক আক্রমণের পরিকল্পনা
তিনি সাতারায় যান, কোঙ্কনের দুর্গগুলি পরিদর্শন করেন এবং খান্দেশ ও বেরারে একটি ব্যাপক আক্রমণ করবার পরিকল্পনা করেন। এই অভিযান অবশ্য কার্যকরী হয় নি।
রাজারামের মৃত্যু
ব্যাপক আক্রমণের পরিকল্পনা গ্ৰহণের অল্প দিন পরেই রাজারামের মৃত্যু হয় (১৭০০)।
উপসংহার :- অযোগ্য শাসক রাজারামের মৃত্যু হলে তার পরী তারাবাই-এর পুত্র তৃতীয় শিবাজীকে সিংহাসনে বসানো হয়।
(FAQ) মারাঠা নায়ক রাজারাম সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
রাজারাম।
রাজারাম
মোঘল সেনাপতি জুলফিকার খান।
১৭০০ খ্রিস্টাব্দে।