মারাঠা নায়ক তৃতীয় শিবাজি প্রসঙ্গে তার শাসনকালে প্রকৃত শাসক তারাবাঈ, তারাবাঈয়ের বিরোধিতা, মোগলদের মারাঠা দুর্গ দখল, মোগলদের ক্ষয়ক্ষতি, ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু, মারাঠাদের সম্পর্কে ভীমসেনের মন্তব্য, মারাঠা নায়ক শাহুর পলায়ন ও মোগলদের আশা সম্পর্কে জানবো।
তৃতীয় শিবাজি
ঐতিহাসিক চরিত্র | তৃতীয় শিবাজি |
রাজত্বকাল | ১৭০০-১৭১২ খ্রি |
পূর্বসূরি | রাজারাম |
প্রতিদ্বন্দ্বী | দ্বিতীয় শম্ভুজী |
অভিভাবক | তারাবাঈ |
ভূমিকা :- রাজারামের মৃত্যুর পরে তার পত্নী তারাবাঈ-এর পুত্র তৃতীয় শিবাজীকে সিংহাসনে বসানো হয়। অপর পত্নী রাজস বাঈ-এর পুত্র দ্বিতীয় শম্ভুজীকে সিংহাসনে বসাবার চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
তৃতীয় শিবাজির শাসনকালে প্রকৃত শাসক তারাবাঈ
তারাবাঈ-এর শক্তি এবং যোগ্যতা তাঁকে মারাঠা রাষ্ট্রের প্রকৃত শাসকে পরিণত করে। তিনি তার নাবালক পুত্রের নামে রাজকার্য পরিচালনা করতেন।
তারাবাঈ-এর বিরোধিতা
রামচন্দ্র পন্থ এবং ধনাজী যাদব তাঁর বিরোধিতা করেন। তাঁরা শাহুকে মুঘল শিবির থেকে তার পিতার রাজ্য শাসনের জন্য ফিরিয়ে আনতে চান।
যোগ্য নেতৃত্ব তারাবাঈ
এইরূপ বিরোধিতা সত্ত্বেও তারাবাঈ যে কেবলমাত্র নিজের ক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখেন তাই নয়, তিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও যোগ্য নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হন।
তারাবাঈ সম্পর্কে কাফি খাঁর মন্তব্য
ঐতিহাসিক কাফি খাঁ তার রাজনৈতিক বিজ্ঞতা, প্রশাসনিক যোগ্যত এবং সৈন্যবাহিনীতে জনপ্রিয়তা সম্পর্কে প্রশংসা করেছেন।
মোগলদের মারাঠা দুর্গ দখল
১৬৯৯-১৭০৫ খ্রীস্টাব্দের মধ্যে মুঘলরা সাতারা, পার্লি, পানহালা, খেলনা, কোণ্ডানা, রাজগড়, তোর্না, ওয়াগিনজেরা প্রভৃতি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ দখল করে।
মারাঠাদের ক্ষয়ক্ষতি
দীর্ঘকালব্যাপী যুদ্ধে মারাঠাদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তাছাড়া মহামারী ও দুর্ভিক্ষে দুই লক্ষের বেশী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু
১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেব আহম্মদনগরে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৭০৭ খ্রীস্টাব্দে সেইখানে তাঁহার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি উপলব্ধি করেন যে মারাঠাদেরকে ধ্বংস করতে তার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
মারাঠাদের সম্পর্কে ভীমসেনের মন্তব্য
মারাঠারা কয়েকটি দুর্গ হারিয়েছিল বটে, কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শী ঐতিহাসিক ভীমসেন বলেছেন, ‘সমগ্র রাজ্যে তারা সম্পূর্ণভাবে ক্ষমতাশালী হয় এবং পথ বন্ধ করে।
ঔরঙ্গজেবের পিছনে ধ্বংস ও অরাজকতা
মারাঠারা কেবলমাত্র দাক্ষিণাত্যে ছয়টি মুঘল সুবা বিধ্বস্ত করে নি, মালব এবং গুজরাটও বিধ্বস্ত করে। মৃত্যুপথযাত্রী মোগল সম্রাট তার পিছনে রেখে গেলেন ধ্বংস এবং অরাজকতা।
মারাঠা নায়ক শাহুর পলায়ন
১৬৮১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু পর্যন্ত মুঘল শিবিরে শাহুকে সম্মানের সাথে বন্দী রাখা হয়। সম্রাটের মৃত্যুর পরে তার পুত্র আজম সিংহাসনের জন্য ভ্রাতাদের সাথে যুদ্ধ করবার প্রস্তুতির সময়ে মুখল শিবির থেকে শাহুর পলায়ন মেনে নেন।
মুঘলদের আশা
আশা করেছিল ছিল যে মারাঠা রঙ্গমঞ্চে শাহুর উপস্থিতি মারাঠাদের ঐক্য দুর্বল করে এবং তারাবাঈকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে মুঘলদেরকে সাহায্য করবে।
উপসংহার :- ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু এবং শাহুর স্বরাজ্যে প্রত্যাবর্তনের (১৭০৮) সঙ্গে সঙ্গেই মারাঠা স্বাধীনতা যুদ্ধের অবসান হয়।
(FAQ) মারাঠা নায়ক তৃতীয় শিবাজি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
তৃতীয় শিবাজি।
মাতা তারাবাঈ।
দ্বিতীয় শম্ভুজী।