শিবাজীর রাজ্য জয় প্রসঙ্গে শিবাজীর জীবনকালের ৪টি পর্যায়, শিবাজীর রাজ্য জয় নীতির উচ্চতর লক্ষ্য, হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা ভ্রান্ত, রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বিজাপুর আক্রমণ, পুরন্দর ও সাতারা অধিকার, মুঘল অধিকৃত অঞ্চলে শিবাজীর আক্রমণ, শিবাজীর কোঙ্কন জয় ও আফজল খাঁর হত্যা সম্পর্কে জানবো।
শিবাজীর রাজ্য জয়
ঐতিহাসিক ঘটনা | শিবাজীর রাজ্য জয় |
সময়কাল | ১৬৪৭-১৬৬২ খ্রি |
মারাঠা নেতা | শিবাজি |
তোরণা দুর্গ | ১৬৪৭ খ্রি |
রায়গড় দুর্গ | ১৬৫৬ খ্রি |
ভূমিকা :- শিবাজীর রাজ্য জয়ের পশ্চাতে শুধুমাত্র সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্য অথবা অন্য কোনো উচ্চ লক্ষ্য ছিল কিনা সে সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে।
শিবাজীর জীবনকালের ৪টি পর্যায়
বিখ্যাত মারাঠা ঐতিহাসিক মহাদেব গোবিন্দ রানাডে শিবাজীর রাজনৈতিক জীবনকে ৪টি পর্যায়ে ভাগ করেছেন। যথা –
- (১) ১৬৪৭-১৬৫২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৬ বছর তিনি সেনা সংগঠন ও মারাঠা সর্দারদের ওপর আধিপত্য স্থাপন করেন। এই ব্যবস্থাগুলির দ্বারা তিনি তাঁর রাজনৈতিক ক্ষমতার ভিত্তি তৈরি করেন।
- (২) ১৬৫৩-১৬৬২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই দশ বছর কাল তিনি মারাঠা জাতীয়তাবাদকে দৃঢ় করেন এবং প্রতিবেশী বিজাপুরের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হন। এই সময় তাঁর রাজ্যসীমা বাড়তে থাকে।
- (৩) ১৬৬২-১৬৭২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি দাক্ষিণাত্যে মুঘল শক্তির সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন এবং আংশিক সফলতা পান।
- (৪) ১৬৭২-১৬৮০ খ্রিস্টাব্দ তার মৃত্যুকাল পর্যন্ত শিবাজী মুঘলের হাত থেকে তার রাজ্যের বহু অংশ উদ্ধার করেন এবং নতুন অঞ্চল জয় করেন। এই সময় তার অভিষেক হয় এবং তিনি “শিব ছত্রপতি” উপাধি নেন।
শিবাজীর রাজ্য জয় নীতির উচ্চতর লক্ষ্য
জি. এস. সরদেশাই তার ‘নিউ হিস্ট্রি অব দি মারাঠা পিপলস’ গ্রন্থে অভিমত দিয়েছেন যে, সমগ্র ভারত-এ সার্বভৌম হিন্দু রাষ্ট্র স্থাপন করাই ছিল শিবাজীর রাজ্য জয় নীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য।’ সরদেশাই তার মতের সমর্থনে বলেন যে,
- (১) শিবাজীর সমকালীন পরিবেশ হিন্দু রাষ্ট্র স্থাপনের অনুকূল ছিল। সমগ্র উত্তর ভারতে ইসলামীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করার ফলে, হিন্দুরা নির্যাতিত হয় ও এজন্য বিদ্রোহী মনোভাব দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে হিন্দুদের নেতৃত্ব দানের জন্য এক নেতার প্রয়োজন দেখা দেয়।
- (২) শিবাজীর যুদ্ধ-বিগ্রহ, পরিকল্পনা ও তার বিজয়ের গতি, তার ব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে কেবলমাত্র মহারাষ্ট্রের মধ্যে তিনি তার দৃষ্টি আবদ্ধ রাখেন। তিনি কর্ণাটকে আদিলশাহী শাসিত অঞ্চলকে তার পরিকল্পিত হিন্দু রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করেন।
- (৩) তার চৌথ ও সরদেশমুখী আদায়ের মধ্যে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তিনি মুঘল সাম্রাজ্য থেকে এই করগুলি চান। তাঁর চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল হিন্দু সাম্রাজ্য স্থাপন।
- (৪) শিবাজী হিন্দু রাজাদের সঙ্গে মিত্রতা রেখে চলতেন। তিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেও রাজপুত সেনাপতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন নি।
- (৫) সরদেশাই-এর মতে, মুঘল সাম্রাজ্যের মধ্যে হিন্দু প্রজা থাকলেও তিনি সকলের ওপর চৌথ চাপাতেন এজন্য যে তিনি এর দ্বারা মুঘল সাম্রাজ্য ভেঙে দিতে চান।
শিবাজীর রাজ্য জয় সম্পর্কে জে.এন সরকারের অভিমত
- (১) স্যার জে. এন. সরকার (যদুনাথ সরকার) সরদেশাইয়ের এই মত খণ্ডন করেছেন। এই প্রখ্যাত ঐতিহাসিকের মতে, শিবাজী সর্বদাই বিজাপুর ও পরে মুঘলের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার যুদ্ধে ব্যাপৃত থাকায় সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা করার মত সুযোগ তিনি কখনও পান নি।
- (২) তাকে সারা জীবন মুঘলদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়। ফলে তার পক্ষে তথাকথিত সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য স্থাপনের কোনো প্রশ্ন তখন অবান্তর ছিল। সুপরিকল্পিত রাষ্ট্র গঠনের মত সময় ও সুযোগ তিনি কখনও পান নি।
শিবাজীর রাজ্য জয় সম্পর্কে ঈশ্বরীপ্রসাদের অভিমত
ডঃ ঈশ্বরীপ্রসাদ বলেছেন যে, শিবাজী হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন, এই মতের সমর্থনে যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য প্রমাণ নেই। শিবাজীর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার মূলে গুরু রামদাসের প্রেরণা ছিল এই মতের স্বপক্ষেও কোনো প্রমাণ নেই।
শিবাজীর হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা ভ্রান্ত
মারাঠা নায়ক শিবাজী সুরাটের হিন্দু ব্যবসায়ীদের সম্পদ লুঠ করেন। তিনি দুবার সুরাট লুঠ করেন। তিনি প্রতিবেশী হিন্দুদের কাছ থেকে চৌথ আদায় করতেন। তিনি মুঘলের বিরুদ্ধে অপর মুসলিম রাষ্ট্র গোলকুণ্ডার সঙ্গে ১৬৭৭ খ্ৰিস্টাব্দে মিত্রতা স্থাপন করেন। এর দ্বারা প্রমাণ হয় না যে, তিনি হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করেন।
শিবাজির রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা
মারাঠা নায়ক শিবাজী গোড়া থেকেই রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে তাঁর সাম্রাজ্য শুরু করেন। হিন্দু আদর্শবাদের জন্যই তিনি রাজ্য বিস্তার ও মুঘলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন তা বলা যায় না।
শিবাজীর রাজ্য জয় সম্পর্কে হিন্দু রাষ্ট্রত্ববাদের তত্ত্ব
- (১) শিবাজীর হিন্দু রাষ্ট্রত্ববাদের তত্ত্ব কেবলমাত্র মারাঠা ঐতিহাসিকরাই প্রচার করেন। কিন্তু তার পশ্চাতে তেমন কোনো জোরালো প্রমাণ নেই। আসলে শিবাজী মারাঠা জাতীয়তাবাদকে কাজে লাগিয়ে তার ক্ষমতা বিস্তার করেন। নতুবা তিনি পুরন্দরের সন্ধির পর ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে আপোষের কথা ভাবতেন না।
- (২) যদি ঔরঙ্গজেব তাকে দক্ষিণে তার প্রার্থনামত জায়গীর দিতে রাজী হতেন ও তাকে উচ্চ মনসবদারের স্বীকৃতি দিতেন তবে শিবাজীর উচ্চাকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্ত হত। ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দের পর তিনি মুঘলের বিরুদ্ধে জঙ্গী মনোভাব নেন। তার আগে নয়। যখন তিনি দেখেন যে ঔরঙ্গজেব তাঁকে ধ্বংস করতে চান তখন তিনি চূড়ান্ত দৃষ্টিভঙ্গি নেন।
শিবাজি কর্তৃক হিন্দু ধর্ম রক্ষা ও রাজ্য বিস্তার
- (১) শিবাজী যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন তারা ছিলেন মুসলিম শক্তি। শিবাজীকে তার রাজ্য স্থাপন করার জন্য স্থানীয় হিন্দু অধিবাসীদের সমর্থন যোগাড় করতে হয়। তাকে হিন্দু ধর্মের স্বপক্ষে দাঁড়াতে হয়।
- (২) শেষ পর্যন্ত সাম্রাজ্য বিস্তার ও হিন্দুধর্মের রক্ষা তার রাজ্য বিস্তার নীতির মুদ্রার দুই পিঠে পরিণত হয়। একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি সম্পন্ন করা যায় না একথা তিনি বুঝতে পারেন। তবে তাঁর কাছে হিন্দুধর্ম রক্ষা বা রাজ্য বিস্তার কোনটি মুখ্য ছিল তা বলা যায় না।
শিবাজির বিজাপুর আক্রমণ
- (১) শিবাজী সর্বপ্রথম বিজাপুর সুলতানের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালান। এই সময় বিজাপুরের সুলতানি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। শিবাজী সেই সুযোগে (১৬৪৭ খ্রি) তোরণা দুর্গ অধিকার করেন। তোরণার নিকটে তিনি রাজগড় নামে এক দুর্গ তৈরি করেন।
- (২) তিনি বিজাপুরের কোন্ডালা দুর্গটিও অধিকার করেন। বিজাপুর সুলতান শিবাজীকে দমনের জন্য শিবাজীর পিতা শাহজীকে জিঞ্জি দুর্গে বন্দী করেন। শেষ পর্যন্ত শিবাজী তিনটি দুর্গ ছেড়ে দিলে শাহজীকে কারামুক্ত করা হয়।
শিবাজির পুরন্দর ও সাতারা অধিকার
শিবাজী এর পর পুরন্দর দুর্গ অধিকার করেন। চন্দ্ররাও মোরে নামে বিজাপুরের এক সামন্তকে নিহত করে তিনি জাবলী বা সাতারা জেলা ও কোঙ্কনের কিছু অংশ অধিকার করেন। জাবলী বা সাতারা অধিকারের পর শিবাজী এই স্থানে প্রতাপগড় দুর্গ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে রায়গড় দুর্গ অধিকার করেন। এই দুর্গে শিবাজীর রাজধানী স্থাপিত হয়।
ঔরঙ্গজেবের বিজাপুর আক্রমণ
১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে বিজাপুরের সুলতান মহম্মদ আদিল শাহের মৃত্যু হলে বিজাপুরের সিংহাসনে এক অপরিণতবুদ্ধি যুবক বসেন। ফলে বিজাপুরের শাসনে দুর্বলতা দেখা দেয়। এই সুযোগে সম্রাট ঔরঙ্গজেব বিজাপুর আক্রমণ করেন।
মুঘল অধিকৃত অঞ্চলে শিবাজীর আক্রমণ
শিবাজী তাঁর দূরদৃষ্টির দ্বারা বুঝতে পারেন যে, দক্ষিণ ভারতে মুঘলদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে পরিণামে তাঁর অসুবিধা হবে। সুতরাং তিনি মুঘলকে বিব্রত করার জন্য আহমদনগরে মুঘল অধিকৃত অঞ্চলে আক্রমণ চালান এবং মুঘল গ্রামগুলি লুঠ করেন। তিনি জুনার দুর্গ লুঠ করে ১২ লক্ষ টাকা, ২০০ ঘোড়া ও বহু মূল্যবান অলঙ্কার পান।
শিবাজীর কোঙ্কণ জয়
ঔরঙ্গজেব সেনাদল পাঠিয়ে শিবাজীকে বিতাড়িত করেন। ইতিমধ্যে বিজাপুরের সঙ্গে মুঘলের সন্ধি স্থাপিত হলে শিবাজীও রণে ক্ষান্তি দেন। ঔরঙ্গজেব উত্তরাধিকারের যুদ্ধে যোগ দিতে আগ্রা যাত্রা করেন। সম্রাটের অনুপস্থিতির সুযোগে শিবাজী উত্তর কোঙ্কণ জয় করেন।
শিবাজীর বিরুদ্ধে আফজল খাঁর অভিযান
- (১) শিবাজীকে দমনের জন্য বিজাপুরের সুলতানের নির্দেশে বিখ্যাত সেনাপতি আফজল খাঁ দশ হাজার সেনা, কামান সহ (১৬৫৯ খ্রি) শিবাজীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন। আফজল খাঁ শিবাজীর রাজ্যের কিছু অংশ লুঠ করে শিবাজীকে কোণঠাসা করেন।
- (২) কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন যে, শিবাজী গেরিলা কায়দায় লড়াই করছেন। সহজে তাকে দমান যাবে না। এজন্য আফজল খাঁ আপোষ মীমাংসার ছল করে শিবাজীকে শিবিরে ডেকে এনে হত্যা করার চক্রান্ত করেন। তিনি কৃষ্ণাজী ভাস্কর নামে এক ব্রাহ্মণকে দূত হিসেবে শিবাজীর কাছে পাঠান।
- (৩) এই দূতের কাছে শিবাজী, আফজল খাঁর গোপন অভিসন্ধির কথা জানতে পারেন। শিবাজী প্রতাপগড় দুর্গের কাছেই আফজলের সঙ্গে সাক্ষাতের স্থান স্থির করেন।
শিবাজি কর্তৃক আফজল খাঁর হত্যা
- (১) শিবাজী নিজের দেহকে লোহার জালে আচ্ছাদন করে, বাম হাতের আঙুলে ধারাল ‘বাঘনখ’ নামে অস্ত্র ও ডান হাতের আস্তিনে ‘বিছুয়া’ নামে ছুরি নিয়ে সাক্ষাৎ করতে আসেন। তাঁর সঙ্গে মাত্র দুই তলোয়ারবাজ দেহরক্ষী ছিল। আফজল ছিলেন খুবই শক্তিশালী।
- (২) আফজল খাঁ খর্বকায় রুগ্ন শিবাজীকে আলিঙ্গনের ছলে বাম হাত দ্বারা পিষ্ট করে ডান হাতের তরবারি দ্বারা শিবাজীর দেহে আঘাত করেন। কিন্তু শিবাজীর দেহের ওপর আটক করা লোহার জালে তা প্রতিহত হয়। এই সুযোগে ‘বাঘনখ’ দ্বারা শিবাজী, আফজলের উদর বিদীর্ণ করেন এবং ‘বিছুয়া’ তাঁর বক্ষে বসিয়ে দেন।
- (৩) আফজলের দেহরক্ষী তলোয়ারবাজ সৈয়দ বান্দা শিবাজীর মাথায় তলোয়ারের কোপ মারার চেষ্টা করলে, শিবাজীর দেহরক্ষী জীব মহালা দ্রুত তলোয়ার চালিয়ে তাঁর হাত ও মাথা কেটে ফেলেন।
- (৪) সেনাপতির অকস্মাৎ মৃত্যুতে হতচকিত বিজাপুরী সেনাদলকে মারাঠা বাহিনী আক্রমণ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিজাপুরী শিবির থেকে প্রচুর গোলাগুলি, রোগ, হাতী, ঘোড়া, দশ লক্ষ টাকা শিবাজী পান। শিরাজীর বিজয়ী বাহিনী কোঙ্কণ, কোলাপুর ও পাহালা দুর্গ অধিকার করে।
উপসংহার :- শেষ পর্যন্ত ১৬৬২ খ্রিস্টাব্দে বিজাপুর সুলতান শিবাজীর সঙ্গে সন্ধি স্থাপন করতে বাধ্য হন এবং শিবাজীর অধিকৃত অঞ্চলগুলির ওপর শিবাজীর কর্তৃত্ব স্বীকার করা হয়।
(FAQ) শিবাজীর রাজ্য জয় সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
মারাঠা সাম্রাজ্য বিস্তার।
১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে।
মোগল সেনাপতি জয়সিংহ ও শিবাজির মধ্যে।
মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব।