শিবাজীর প্রথম জীবন

মারাঠা নেতা শিবাজীর প্রথম জীবন প্রসঙ্গে জন্ম, শিবাজীর বংশ পরিচয়, শিবাজীর বাল্যজীবন, শিবাজীর শিক্ষা, নিরক্ষর শিবাজী ও শিবাজীর স্বাধীন থাকার ইচ্ছা প্রকাশ সম্পর্কে জানবো।

মারাঠা নেতা শিবাজীর প্রথম জীবন

ঐতিহাসিক ঘটনাশিবাজীর প্রথম জীবন
মারাঠা নেতাশিবাজি
জন্ম১০ এপ্রিল, ১৬২৭ খ্রি
পিতাশাহজী ভোঁসলে
মাতাজীজাবাঈ
মারাঠা নেতা শিবাজীর প্রথম জীবন

ভূমিকা :- মারাঠা জাতির জাগরণের ক্ষেত্র তৈরি হলেও নেতার অভাব ছিল। শিবাজীর আবির্ভাবের ফলে সেই অভাব দূর হয়। এর ফলে মারাঠা জাতির অভ্যুত্থান ঘটে।

শিবাজীর জন্ম

মহারাষ্ট্রের পুণের নিকটে শিবনারের পার্বত্য দুর্গে ১৬২৭ খ্রিস্টাব্দের ১০ই এপ্রিল শিবাজীর জন্ম হয়।

শিবাজীর বংশ পরিচয়

  • (১) শিবাজীর পিতা ছিলেন শাহজী ভোঁসলে এবং মাতা ছিলেন জীজাবাঈ। শিবাজীর পূর্বপুরুষরা ছিলেন প্যাটেল বা গ্রামের প্রধান। শিবাজীর পিতা শাহজী প্রথমে আহমদনগরের অধীনে ও পরে বিজাপুরের অধীনে ক্ষমতাশালী জায়গীরদার ছিলেন।
  • (২) শিবাজীর মাতা জীজাবাঈ ছিলেন প্রাচীন যাদব বংশীয় জায়গীরদার যাদব রাওয়ের কন্যা। পিতা ও মাতার দিক হতে শিবাজীর দেহে ভূম্যাধিকারীর রক্ত ছিল।

শিবাজীর বাল্যজীবন

শাহজী তুকাবাঈ নামে এক রমণীকে বিবাহ করার ফলে তার প্রথমা পত্নী জীজাবাঈ তার শিশু পুত্র শিবাজীকে নিয়ে পুণায় আলাদাভাবে বাস করতে থাকেন। তাদের ভরণপোষণের জন্য শাহজী পুণার জায়গীরটি ছেড়ে দেন এবং তাদের দেখাশোনার জন্য দাদাজী কোণ্ডদেব নামে এক ব্রাহ্মণকে নিয়োগ করেন।

শিবাজীর শিক্ষা

  • (১) শাহজী যখন জীজাবাঈকে পরিত্যাগ করেন তখন জীজাবাঈয়ের বয়স ছিল ৪১ বছর। জীজাবাঈ তার শিশু পুত্র শিবাজীর শিক্ষা-দীক্ষা এবং নিজের ধর্ম পালনে দিন কাটান। তিনি প্রায় সন্ন্যাসীর মতই জীবন কাটাতেন।
  • (২) তার চরিত্রের এই ধর্মভাব শিবাজীকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। জীজাবাঈ তাঁর পুত্রকে মহাভারত, রামায়ণ-এর কাহিনী ও ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে মুখে মুখে শিক্ষা দেন। মাতার প্রেরণা শিবাজীকে আজীবন অনুপ্রাণিত করে।

নিরক্ষর শিবাজী

  • (১) দাদাজী কোণ্ডদেব শিরাজীকে অস্ত্রচালনা, অশ্বারোহণ প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষা দেন। কিন্তু জীজাবাঈ বা দাদাজী কেহই শিবাজীকে স্বাক্ষরতা ও পুঁথিগত বিদ্যা শিক্ষাদানের চেষ্টা করেন নি। হায়দার আলি, রণজিৎ সিংহ-এর মত শিবাজীও নিরক্ষর ছিলেন।
  • (২) তবে চক্ষু দ্বারা জ্ঞান আহরণ না করে কর্ণের দ্বারা তিনি কম জ্ঞান আহরণ করেন নি। রামায়ণ, মহাভারত শাস্ত্রের বহুতত্ত্ব শুনে তিনি মনে ধরে নেন। তার বাস্তব বুদ্ধি ও স্বাভাবিক জ্ঞান পুঁথিগত শিক্ষার চাপে বিকৃত হয় নি।

শিবাজীর স্বাধীন থাকার ইচ্ছা প্রকাশ

শিবাজী যৌবনে পৌঁছালে তিনি মাওয়ালীদের দ্বারা স্বাধীন সেনাদল গড়ে স্বাধীনভাবে থাকবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

উপসংহার :- শিবাজী তাঁর পিতার নির্দেশ অমান্য করে নিজ পথে চলতে থাকেন। এইভাবে শিবাজীর রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত হয়।

(FAQ) মারাঠা নেতা শিবাজীর প্রথম জীবন সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কখন কোথায় শিবাজীর জন্ম হয়?

২০ এপ্রিল, ১৬২৭ খ্রিস্টাব্দে পুণের নিকটে শিবনারের পার্বত্য দুর্গে।

২. শিবাজীর পিতা ও মাতা কে ছিলেন?

শাহজী ভোঁসলে ও জীজাবাঈ।

৩. শিবাজীর গুরু কে ছিলেন?

রামদাস।

৪. শিবাজীর রাজনৈতিক গুরু কে ছিলেন?

দাদাজী কোণ্ডদেব।

Leave a Comment