শাহজাহানের শেষ জীবন প্রসঙ্গে পুত্রের হাতে বন্দি, ঔরঙ্গজেবের সাথে সম্পর্ক, ঔরঙ্গজেবের প্রতিহিংসা মূলক মনোভাব, সম্রাটের দেখাশোনা, কন্যার সেবা, স্বাধীন ভাবে চলাফেরা নিষিদ্ধ, অসহায় অবস্থা, গুরুতর অসুস্থ ও তার মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।
শাহজাহানের শেষ জীবন
ঐতিহাসিক ঘটনা | শাহজাহানের শেষ জীবন |
বন্দী | আগ্ৰা দুর্গ |
সময়কাল | ১৬৫৮-৬৬ খ্রি |
মৃত্যু | ১৬৬৬ খ্রি |
ভূমিকা :- ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট শাহজাহান তাঁর জীবনের ৬৬ বৎসরে পা রাখেন। এই বৎসর দারার শোচনীয় পরাজয়ের পর সম্রাটের তৃতীয় পুত্র ঔরঙ্গজেব ভ্রাতৃ যুদ্ধে জয়ী হন।
পুত্রের হাতে বন্দী
ঔরঙ্গজেব যুদ্ধে জেতার পর পুত্র মহম্মদকে আগ্রায় পাঠিয়ে দুর্গে নিজের বিশ্বস্ত প্রহরী বসিয়ে সম্রাটকে গৃহবন্দী করেন। এর ফলে শাহজাহান প্রায় ৮ বৎসর পুত্রের অধীনে বন্দী দশায় জীবন কাটান।
ঔরঙ্গজেবের সাথে সম্পর্ক
এই বিলাসী, আড়ম্বর-প্রিয় সম্রাটের শেষ দিনগুলি খুবই করুণভাবে কাটে। ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে তাঁর পিতার শাহজাহানের সম্পর্ক গোড়া থেকেই ভাল ছিল না।
ঔরঙ্গজেবের প্রতিহিংসা মূলক মনোভাব
ঔরঙ্গজের বরাবর মনে করতেন যে, সম্রাট দারার প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখিয়ে তাঁর প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করেছেন। এখন তিনি বন্দী পিতার প্রতি যথোচিত মর্যাদা ও উদারতা দেখাতে কৃপণতা করে তার প্রতিহিংসামূলক মনোভাব দেখান।
সম্রাটের দেখাশোনা
ঔরঙ্গজেব সম্রাটকে যথেষ্ট হাত খরচ ও দরকারি জিনিষ দিতেন না। তিনি সম্রাটের দেখাশোনার দায়িত্ব খোজা পাহারাওয়ালা ও ভৃত্যদের ওপর ছেড়ে দেন। তৈমুর পরিবারের কেউ এই বৃদ্ধ সম্রাটের দেখাশোনা করত না।
কন্যার সেবা
এই বিপদে সম্রাটের কন্যা জাহানারা বেগম একমাত্র তাঁর পিতার পাশে থাকেন এবং তার দুঃখকষ্টে সান্ত্বনা দেন এবং তাকে মাতার মত যত্নে সেবা করেন।
স্বাধীন ভাবে চলাফেরা নিষিদ্ধ
ঔরঙ্গজেব সম্রাটের স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও কাজকর্মের ওপর বাধা-নিষেধ আরোপ করেন। সম্রাটের রত্নভাণ্ডার তিনি চাবিতালা দিয়ে আটক করেন। শাহজাহানের শত অভিসম্পাতেও শাহজাহানের অসহায় অবস্থা ঔরঙ্গজেব কর্ণপাত করেন নি।
অসহায় অবস্থা
বৃদ্ধ সম্রাটের অসহায় কান্না আগ্রা দুর্গের গম্বুজে বৃথাই ধ্বনিত হয়, যমুনার লহরীতে তা মিশে যায়। সম্রাট তার লুপ্ত ক্ষমতা ও ঐশ্বর্য আর ফিরে পান নি। ঔরঙ্গজেব দিল্লীতে মহাসমারোহে রাজত্ব করতে থাকেন।
গুরুতর অসুস্থ
শাহজাহানের মন তার প্রিয় পত্নী মমতাজ ও পুত্র দারার বিয়োগে ভেঙে পড়েছিল। ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে জানুয়ারিতে তিনি গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্ঞান লাভ করার পর তিনি জাহানারাকে তাঁর শেষ ইচ্ছা জানান এবং ঔরঙ্গজেবের ব্যবহারের জন্য একটি ক্ষমাপত্র দেন।
উপসংহার :- ২২শে জানুয়ারি, ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দে ৭৪ বৎসর বয়সে এই মহান সম্রাটের দেহাবসান ঘটে।
(FAQ) শাহজাহানের শেষ জীবন সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
ঔরঙ্গজেব।
আগ্ৰা দুর্গে।
১৬৫৮-৬৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় আট বছর।
তার কন্যা জাহানারা বেগম।