বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের বিপ্লবী কার্যকলাপ প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা, সংকল্প গ্ৰহণ, রামোসিসদের মতবিরোধিতা, কর্মসূচি পরিবর্তন, সৈন সংগ্ৰহ, পুলিশের হাতে বন্দী, দ্বীপান্তর ও তার পলায়ন সম্পর্কে জানবো।
বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের বিপ্লবী কার্যকলাপ
ঐতিহাসিক ঘটনা | বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের বিপ্লবী কার্যকলাপ |
দক্ষিণ ভারতে দুর্ভিক্ষ | ১৮৭৬-৭৭ খ্রি: |
বন্দী | ২১ জুলাই ১৮৭৯ খ্রি: |
দ্বীপান্তর | এডেনের জেল |
মৃত্যু | ১৮৮৩ খ্রি: |
ভূমিকা :- ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ফাড়কের রোজনামচা থেকেই তাঁর চিন্তাধারা ও কর্মপদ্ধতির পরিচয় পাওয়া যায়।
বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা
ব্যাপক এক সংগঠনের সাহায্যে ওয়াহাবিগণ যে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেন, ব্যক্তিগতভাবে একক প্রচেষ্টার দ্বারা বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে বোম্বাই অঞ্চলে তা সম্পাদন করার চেষ্টা করেন।
বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের সংকল্প গ্ৰহণ
১৮৭৬-১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষে দক্ষিণ ভারত-এর অধিবাসীদের দুর্দশা চরম সীমায় উপনীত হয়। ফাড়কে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, ভারতবাসীর এই দুর্দশার জন্য ব্রিটিশ শাসনই সম্পূর্ণভাবে দায়ী। সুতরাং তিনি এদেশ থেকে ইংরেজদের বিতাড়িত করার জন্য সংকল্প গ্রহণ করেন।
বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের প্রতি শিক্ষিতদের অসহযোগিতা
শিক্ষিত ব্যক্তিগণ তাঁকে এই কাজে সাহায্য করতে অসম্মত হলে তিনি সমাজে অবহেলিত রামোসিস সম্প্রদায় ও কৃষকদের স্বদলে আনার চেষ্টা করেন।
ফাড়কের সঙ্গে রামোসিসদের মতবিরোধিতা
ডাকাতি ও লুণ্ঠনের দ্বারা তিনি এই প্রচেষ্টার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের কর্মসূচী গ্রহণ করেন। কিছু কিছু অস্ত্রশস্ত্রও তিনি সংগ্রহ করেন। কিন্তু ডাকাতি শুরু করার পরই ফাড়কের সঙ্গে রামোসিসদের মতবিরোধিতা শুরু হয়।
বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের কর্মসূচি পরিবর্তন
ফাড়কের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর দলভূক্ত হওয়ার পরিবর্তে অনেকেই অর্থের লোভে তাঁর প্রচেষ্টার অংশীদার হয়। সুতরাং রামোসিসদের ব্যবহারে ক্ষুব্ধ হয়ে বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে তার কর্মসূচী পরিবর্তন করেন।
বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের সৈন্য সংগ্রহ
ইতিমধ্যে ব্রিটিশ সরকার ফাড়কেকে বন্দী করার জন্য তিন হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। কিন্তু এই সময় ফাড়কে তাঁর বন্ধু রঘুনাথ মোরেশ্বর ভাটের সাহায্যে ইসমাইল খান রোহিলার সঙ্গে পরিচিত হন। ইসমাইল খান রোহিলা তাঁকে পাঁচশ সশস্ত্র সৈন্য সরবরাহ করেন। আরও চারশ সশস্ত্র সৈন্য এই দলে যোগদান করে।
গৃহ থেকে বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের পলায়ন
কিন্তু ইতিমধ্যে গুপ্তচরের কাছে সংবাদ পেয়ে মেজর ড্যানিয়েল ফাড়কের বাসস্থান গাসুরে উপস্থিত হন। বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে পলায়ন করতে সক্ষম হলেও তাঁর রোজনামচা ও অন্যান্য কাগজ-পত্র ইংরেজদের হস্তগত হয়।
পুলিশের হাতে বন্দী ফাড়কে
রোজনামচা ও অন্যান্য কাগজপত্র পুলিশের হাতে আসার ফলে ফাড়কের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সকলই তারা অবগত হতে সমর্থ হয়। ইংরেজদের সঙ্গে নিজামের পুলিশ বাহিনী যোগ দিয়ে পলাতক ফাড়কেকে বন্দী করার চেষ্টা শুরু করে।
বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের দ্বীপান্তর
১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দের ২১শে জুলাই এক মন্দিরে নিদ্রিত অবস্থায় ফাড়কে পুলিশ বাহিনী কর্তৃক বন্দী হন। অস্ত্র সংগ্রহ, লুণ্ঠন, ডাকাতি প্রভৃতি অপরাধে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয় এবং বিচারে তাঁর দ্বীপান্তর হয়।
কারাগার ফাড়কের থেকে পলায়ন
আন্দামানের পরিবর্তে এডেনের জেলে তাঁকে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু তিনি কারাগার থেকে পলায়ন করতে সক্ষম হন। পরে পুনরায় তাঁকে বন্দী করা হয়।
উপসংহার :- বন্দী অবস্থায় বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কে স্বেচ্ছায় আহারের পরিমাণ হ্রাস করে ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন।
(FAQ) বাসুদেব বলবন্ত ফাড়কের বিপ্লবী কার্যকলাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৮৭৬-৭৭ খ্রিস্টাব্দে।
২১ জুলাই ১৮৭৯ খ্রি:।
এডেনের জেলে।
১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে।