পুনার শেষ বৈপ্লবিক কর্মোদ্যম প্রসঙ্গে নতুন ভাবে মহারাষ্ট্রে বৈপ্লবিক চাঞ্চল্য, পুনার বৈপ্লবিক প্রচেষ্টা, পুনার বিপ্লবীদের ইস্তাহার ও পুস্তিকা প্রকাশের ব্যবস্থা, পুনায় প্রথম ইস্তাহার প্রকাশ, পুনার প্রথম ইস্তাহারে যুবকদের প্রতি আহ্বান, পুনার বিজ্ঞান ও কৃষি কলেজে ইস্তাহার প্রচার সম্পর্কে জানবো।
পুনার শেষ বৈপ্লবিক কর্মোদ্যম
ঐতিহাসিক ঘটনা | পুনার শেষ বৈপ্লবিক কর্মোদ্যম |
নিষ্ক্রিয় মহারাষ্ট্র | ১৯১১ খ্রি: |
পুনরায় চাঞ্চল্য | ১৯১২ মধ্যভাগ |
পুনার প্রথম ইস্তাহার | ১ জানুয়ারি ১৯১৩ খ্রি |
বিপ্লব প্রচেষ্টার অবসান | ১৯১৪ খ্রি: |
ভূমিকা :- পর পর তিনটি ষড়যন্ত্র মামলা এবং বহু বিপ্লবী নায়ক ও কর্মীর কারাদণ্ডের ফলে মহারাষ্ট্রের বিপ্লব-প্রচেষ্টা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এর পর ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের কোথাও কোনো বৈপ্লবিক কর্ম প্রচেষ্টার লক্ষণ দেখা যায় নি।
নতুন ভাবে মহারাষ্ট্রে বৈপ্লবিক চাঞ্চল্য
কিন্তু অন্য দিকে এই সময় সারা ভারত-এ, বিশেষত বাংলাদেশ-এ, বিপ্লব-প্রচেষ্টা ব্যাপক ভাবে আরম্ভ হয়। যখন সমগ্র ভারতবর্ষ মহারাষ্ট্রের বৈপ্লবিক মন্ত্রে দীক্ষিত হয়, ঠিক তখনই মহারাষ্ট্র সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় – এটা উপলব্ধি করে মহারাষ্ট্রের যুবসম্প্রদায়ের মধ্যেও আবার বৈপ্লবিক চাঞ্চল্য জেগে উঠে।
পুনার বৈপ্লবিক প্রচেষ্টা
মহারাষ্ট্রের কেশরী, তিলক-এর কর্মস্থান পুনার যুবকগণই মহারাষ্ট্রের এই কলঙ্ক মোচনের জন্য অগ্রসর হন। সম্ভবত ১৯১২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যভাগ থেকে তারা আবার নূতন করে বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপ আরম্ভ করেন।
পুনার বিপ্লবীদের ইস্তাহার ও পুস্তিকা প্রকাশের ব্যবস্থা
- (১) কিন্তু তখন আর প্রকাশ্যভাবে সংবাদ পত্রে প্রবন্ধ লিখে যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে বৈপ্লবিক প্রেরণা জাগিয়ে তুলবার সুযোগ ছিল না। সরকার পূর্বেই এই পথ বন্ধ করে দিয়েছিল।
- (২) সুতরাং পুনার বিপ্লবীরা গোপনে একটি ছাপাখানা বসিয়ে মারাঠী ভাষায় ইস্তাহার ও পুস্তিকা প্রকাশের ব্যবস্থা করেন। দুজন মারাঠী যুবক এই গোপন ছাপাখানায় দিন রাত কাজ করতেন।
পুনায় প্রথম ইস্তাহার প্রকাশ
প্রথম ইস্তাহারটি প্রকাশিত হয় ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারী। এর কয়েক দিন পূর্বে দিল্লীতে বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জের উপর বোমা নিক্ষিপ্ত হয় এবং বড়লাট ভীষণ আহত হন। এই ঘটনাই ছিল প্রথম ইস্তাহারের উপলক্ষ্য। ইস্তাহারটির উপরে মারাঠী ভাষায় লিখিত ছিল, “মারাঠাবাসীদের প্রতি আহ্বান”, আর তার নীচে স্বাক্ষর ছিল – “বাঙলার বিপ্লবিগণ”।
পুনার প্রথম ইস্তাহারে যুবকদের প্রতি আহ্বান
এই ইস্তাহারে পুনরায় বিপ্লব প্রচেষ্টা আরম্ভ করবার জন্য মারাঠী যুবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয় –
“মারাঠীরা এখনও চুপ করে বসে আছে কেন? মহারাষ্ট্রে দুই বছর পূর্বে কয়েকটি স্বদেশপ্রেমিক তারকা জ্বলে উঠে অস্তমিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই কি তারা স্বাধীনতা লাভের প্রচেষ্টা ত্যাগ করেছে ? সমস্ত দেশ আশা করেছিল যে, মহারাষ্ট্র কিছু অসাধারণ কর্মের দ্বারা অক্ষয় খ্যাতি অর্জন করবে, সেই আসা কি তবে মিথ্যা ? সেতুবন্ধ থেকে হিমালয় পর্যন্ত সমগ্র দেশ আজ মরিয়া হয়ে উঠেছে, আজকের এই শুভ দিনটিতে (১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারী) সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ হবে।”
পুনার বিজ্ঞান ও কৃষি কলেজে ইস্তাহার প্রচার
- (১) মহারাষ্ট্রীয় বিপ্লবীরা ‘স্বাধীনতা’ শীর্ষক বহু ইস্তাহার প্রকাশ করেছিলেন। তাঁরা পুনার ফার্গুসন কলেজের ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েও বহু ইস্তাহার কলেজের মধ্যে প্রচার করেন।
- (২) এই প্রকারের বহু ইস্তাহার পুনার বিজ্ঞান কলেজ এবং কৃষি কলেজের মধ্যে প্রচার করা হয়। সর্বসমেত চারখানি ‘স্বাধীনতা’ শীর্ষক ইস্তাহার প্রকাশিত হয়েছিল।
উপসংহার :- চতুর্থ ইস্তাহার মুদ্রণের সময় ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশ এই ছাপাখানাটি আবিষ্কার করে। এর সঙ্গে সঙ্গেই পুনা এবং সমগ্র মহারাষ্ট্রের বৈপ্লবিক প্রচেষ্টার অবসান ঘটে।
(FAQ) পুনার শেষ বৈপ্লবিক কর্মোদ্যম সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৯১২ সালের মধ্যভাগ।
মহারাষ্ট্র।
১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারী।