পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য প্রসঙ্গে বেদাঙ্গ, শাস্ত্রের সূচনা, কল্পসূত্র, শ্রৌতসূত্র, গৃহ্যসূত্র, ধর্ম সূত্র, শুল্ব সূত্র, সংহিতার পরিপুরক ও নিরুক্ত সম্পর্কে জানবো।

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য

ঐতিহাসিক বিষয়পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য
বেদান্তউপনিষদ
অষ্টাধ্যায়ীপাণিনি
নিরুক্তযাস্ক
বেদাঙ্গছয়টি
পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য

ভূমিকা :- পরবর্তী বৈদিক যুগ -এর সাহিত্য বলতে সাধারণত উপনিষদ ও বেদাঙ্গকে বোঝায়। উপনিষদগুলিকে সম্মিলিতভাবে বলা হয় বেদান্ত অর্থাৎ বেদ-এর উপসংহার ভাগ।

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য বেদাঙ্গ

বেদাধ্যয়নের সাহায্যকারী শাস্ত্র বা বেদাঙ্গ আছে ছ’টি। যথা –

  • (১) শিক্ষা – শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ নির্ধারণের পদ্ধতি।
  • (২) কল্প – ধর্মীয় রীতিনীতি নির্ধারক শাস্ত্র।
  • (৩) ব্যাকরণ – ভাষার পদ বিশ্লেষণ-সংকলন।
  • (৪) নিরুক্ত – শব্দের উৎপত্তি নির্ধারক শাস্ত্র।
  • (৫) ছন্দ – পংক্তির পঠনছন্দ বিষয়ক।
  • (৬) জ্যোতিষ – যজ্ঞাদির জ্যোতির্বিজ্ঞান নির্ভর কাল পরিমাপন।

ভারতে পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য শাস্ত্রের সূচনা

এই সকল শাস্ত্রের সূচনা হয়েছে ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক গুলিতে। এগুলি সূত্রের আকারে রচিত। সূত্রের অর্থ স্তুতির সহায়ক সংক্ষিপ্ত শব্দসমষ্টি।

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য কল্পসূত্র

ছয় বেদাঙ্গের মধ্যে কল্পসূত্র গুলিতেই সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিক ক্রিয়াকলাপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু হয়। কল্প সূত্র ব্রাহ্মণ ভাগের পরিপূরক।

ভারতে বৈদিক সাহিত্য শ্রৌত সূত্র

যে সুত্রগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ যাগযজ্ঞের বর্ণনা মাছে তার নাম শ্রৌত সূত্র।

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য গৃহ্য সূত্র

যে সূত্রগুলিতে গার্হস্থ্য অনুষ্ঠান তথা দৈনন্দিন জীবনের যজ্ঞাদির আলোচনা আছে তাদেরকে বলা হয় গৃহ্য সূত্র। এই রচনাসমূহ ধর্মতত্ত্ব ও নৃতত্ত্ব উভয় শাস্ত্রের পণ্ডিতদের নিকট বিশেষ মূল্যবান তথ্যের উৎস।

ভারতে বৈদিক সাহিত্য ধর্ম সূত্র

গৃহ্য সূত্রের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আছে ধর্ম সূত্র। এতে ধর্মীয় ও সামাজিক বিধিনিষেধ আলোচিত হয়েছে।

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য শুল্ব সূত্র

শ্রৌত সুত্রের সাথে যুক্ত শুল্ব সূত্রে বেদী ও যজ্ঞস্থানের মাপজোপ সম্বন্ধে নির্দেশ আছে। এই সূত্রগুলিকে জ্যামিতি সম্বন্ধীয় সর্বপ্রাচীন ভারতীয় রচনা বলা যায়।

সংহিতার পরিপুরক বৈদিক সাহিত্য

শিক্ষা সম্বন্ধীয় সূত্রগুলি সংহিতার পরিপুরক। এই বিষয়ে প্রাচীনতম রচনা হল প্রতিশাখ্য সমূহ। এদের মধ্যে সংহিতা গুলি কি ভাবে আবৃত্তি করতে হবে তা আলোচিত হয়েছে।

পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য নিরুক্ত

বৈদিক শব্দার্থ বিধি সম্বন্ধে একটি মাত্র গ্রন্থ বিদ্যমান। তা হল যাস্ক রচিত নিরুক্ত। পরিমাপ বিদ্যা (Metrics), গ্রহবিজ্ঞান ও ব্যাকরণ সম্বন্ধীয় পুরাতন রচনাদি হারিয়ে গেছে।

উপসংহার :- বর্তমানে প্রচলিত ব্যাকরণগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা পুরাতন পাণিনির ব্যাকরণ। এতে মূলতঃ পরবর্তী যুগের সংস্কৃত ভাষার বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচিত হয়েছে। বৈদিক ভাষার প্রসঙ্গ এতে কদাচিৎ কখনও উল্লিখিত হয়েছে।

(FAQ) পরবর্তী বৈদিক সাহিত্য সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. সর্বাপেক্ষা পুরাতন ব্যাকরণ গ্ৰন্থের নাম কি?

অষ্টাধ্যায়ী।

২. সর্বাপেক্ষা পুরাতন ব্যাকরণ অষ্টাধ্যায়ী রচনা করেন কে?

পাণিনি।

৩. নিরুক্ত কার রচনা?

যাস্ক।

৪. উপনিষদগুলি কি নামে পরিচিত?

বেদান্ত।

Leave a Comment