রাষ্ট্রকূট বংশের কৃতিত্ব

রাষ্ট্রকূট বংশের কৃতিত্ব প্রসঙ্গে রাজনৈতিক ঐক্য, সাংস্কৃতিক বিকাশ, ধর্মীয় উদারতা, ভূয়সী প্রশংসা, কৈলাসনাথ মন্দির নির্মাণ ও সাহিত্যের বিকাশ সম্পর্কে জানবো।

রাষ্ট্রকূট বংশের কৃতিত্ব

ঐতিহাসিক ঘটনারাষ্ট্রকূট বংশের কৃতিত্ব
বংশরাষ্ট্রকূট বংশ
প্রতিষ্ঠাতাদন্তিদুর্গ
কৈলাসনাথ মন্দিরপ্রথম কৃষ্ণ
পর্যটকসুলেমান
রাষ্ট্রকূট বংশের কৃতিত্ব

ভূমিকা :- রাষ্ট্রকূটগণ প্রায় দুই শতাব্দীকাল দাক্ষিণাত্যের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রায় দুশ বছর ধরে দাক্ষিণাত্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তাঁদের প্রভুত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

রাজনৈতিক ঐক্য স্থাপনে রাষ্ট্রকূট বংশের কৃতিত্ব

দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক ঐক্য তাঁরা সুদৃঢ় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। উত্তর ভারত অভিযান ব্যর্থ হলেও কিছু অংশে তাঁদের আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

রাষ্ট্রকূট যুগে সাংস্কৃতিক বিকাশ

দাক্ষিণাত্যের রাজনীতিতেই তাঁরা শুধু প্রাধান্য অর্জন করেননি, দাক্ষিণাত্যের সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও তাঁরা অভাবনীয় উন্নতিসাধন করেছিলেন। রাষ্ট্রকূট রাজগণ সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যের পরম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

রাষ্ট্রকূট বংশের ধর্মীয় উদারতা

ধর্মের ব্যাপারে তাঁরা ছিলেন সব থেকে উদার। তাঁরা শৈব, বৈষ্ণব ধর্মজৈন ধর্ম -এর প্রতি সহনশীল ছিলেন। এমনকি তাঁরা বহু মঠ ও মন্দির নির্মাণ করলেও মুসলমানদের প্রার্থনার জন্য মসজিদ ছিল এবং সেখানে নিয়মিত যে পাঁচ বার প্রার্থনা হত তা মাসুদি ও সুলেমানের বিবরণে পাওয়া যায়। রাষ্ট্রকূটগণ ইসলাম ধর্মেরও পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন যা তাঁদের ধর্মীয় সহনশীলতার ক্ষেত্রে অভাবনীয় মর্যাদা এনে দিয়েছিল।

রাষ্ট্রকূট রাজাদের ভূয়সী প্রশংসা

মুসলমান পরিব্রাজকরা রাষ্ট্রকূট রাজাদের শক্তি ও উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। শাসনক্ষেত্রেও তাঁরা চরম দক্ষতার পরিচয় রেখে গেছেন। তাঁদের সময় দাক্ষিণাত্যে শান্তি অব্যাহত ছিল।

রাষ্ট্রকূট যুগে কৈলাসনাথ মন্দির নির্মাণ

সাহিত্য ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক হিসাবে দাক্ষিণাত্যে তাদের কৃতিত্ব আজও বিরাজমান। প্রথম কৃষ্ণ ইলোরার বিখ্যাত কৈলাসনাথের মন্দিরটি নির্মাণ করেন। ভিনসেন্ট স্মিথসহ অন্যান্য শিল্পবিশেষজ্ঞগণ এই মন্দিরটিকে স্থাপত্য শিল্পের এক চরম নিদর্শন বলে অভিহিত করেছেন। ভিনসেন্ট স্মিথ মন্দিরটিকে ‘Pride of India’ বলে অভিহিত করেছেন।

রাষ্ট্রকূট যুগে সাহিত্যের বিকাশ

রাষ্ট্রকুটরাজ অমোঘবর্ষ শিল্প ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। তিনি স্বয়ং কানাড়ি ভাষায় রত্নমালিকা ও কবিরাজ মার্গ গ্রন্থ দুটি রচনা করেন। আরব পর্যটক সুলেমান আমোঘবর্ষকে বিশ্বের তিন নরপতির অন্যতম বলে মনে করেন।

উপসংহার :- রাষ্ট্রকূটগণ আরবীয়দের সঙ্গে সখ্যতা স্থাপন করেছিলেন। এর ফলে দক্ষিণ ভারতীয়দের সঙ্গে আরবীয় জাতির বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে সুসম্পর্ক স্থাপিত হয় তার দ্বারা দাক্ষিণাত্যে বাণিজ্যের সমুন্নতি ঘটে। এর ফলে দাক্ষিণাত্যের অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধি ঘটে।

(FAQ) রাষ্ট্রকূট বংশের কৃতিত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ইলোরার কৈলাসনাথ মন্দির নির্মাণ করেন কে?

প্রথম কৃষ্ণ।

২. আরব পর্যটক সুলেমান কার রাজত্বকালে রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্যে আসেন?

অমোঘবর্ষ।

৩. রাষ্ট্রকূট রাজা অমোঘবর্ষ রচিত গ্ৰন্থের নাম লেখ।

রত্নমালিকা, কবিরাজমার্গ।

Leave a Comment