মেটারনিকের প্রেমপত্র

অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রিন্স মেটারনিকের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে মেটারনিকের পরিচিতি, মেটারনিকের খ্যাতি, মেটারনিকের প্রেম, মেটারনিকের প্রেমিকা ও মেটারনিকের মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।

প্রিন্স মেটারনিকের প্রেমপত্র

ঐতিহাসিক প্রেমপত্রমেটারনিকের প্রেমপত্র
পরিচিতিঅস্ট্রিয়ার বিখ্যাত রাজনীতিবিদ
ওয়াটারলুর যুদ্ধ১৮১৫ খ্রি
অভিধাপ্রিন্স
প্রেমিকাকাউন্টেস্ লিভেন
মেটারনিকের প্রেমপত্র

মেটারনিক্ ছিলেন অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত রাজনৈতিক (Statesman) ব্যক্তিত্ব। অস্ট্রিয়ার স্বার্থ কায়েমী করতে আর্কডাচেস মেরী লুই-এর সঙ্গে নেপোলিয়ন-এর বিবাহ সংঘটন ব্যাপারই তাঁর রাজনৈতিক জ্ঞান ও দূরদর্শিতার পরিচায়ক। নেপোলিয়নের বিপক্ষে চতুঃশক্তির মিত্রতা ও শেষ পর্যন্ত ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ওয়াটারলুর যুদ্ধে নেপোলিয়নের পরাজয়ও যে এই বিবাহের গৌণফল সে বিষয়ে ঐতিহাসিকগণ প্রায় একমত। শেন্ট জেমসের দরবারে রাশিয়ার যিনি রাষ্ট্রদূত ছিলেন তাঁরই পত্নী কাউন্টেস্ লিভেন। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে একদিন কংগ্রেস অধিবেসনে উভয়ের সাক্ষাৎ হয় – যেমন সাক্ষাৎ অমনি প্রেমের মোহ।

ব্রাসেলস্ থেকে একসার মেটারনিক্ কাউন্টেস্ লিভেনকে একখানা পত্র লিখেছিলেন এবং সেই বোধহয় তাঁর প্রথম পত্র। মেটারনিক লিখেছিলেন –

তুমি লণ্ডনে, তোমাকে এই প্রথম পত্র লিখছি। এই যে আমার একমাত্র চিঠি তা ভেবো না। তুমি প্যারীতে গেলে সেখানেও তোমায় চিঠি দেব। তবে এই পত্রই হবে আমাদের মিলনের সোপান যেখানেই তুমি যাওনা কেন এই চিঠির কথা তোমায় ভাবতেই হবে।

মানুষ যখন প্রেমে পড়ে তখন তার মনে কতই না ভাবের উদয় হয়। তাই আমার মনে হচ্ছে যেহেতু লন্ডনে তোমার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা সেই জন্যই প্যারীর চেয়ে লণ্ডনে থাকলেই যেন তোমায় বেশী করে ভাল লাগে।

তোমার চিঠি বার বার পড়েছি – আকুল হয়ে কেঁদেছি, কেন তা জানি না। তুমি আমায় প্রেম দিয়েছ, সেই প্রেমই তোমায় আমি ফিরিয়ে দিচ্ছি। আচ্ছা বলত এ তোমার কী শক্তি যার দ্বারা তুমি আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করছ? এ শক্তিই বা এত শীঘ্র তোমার কেমন করে হল!

সেদিন তোমায় প্রথম দেখলাম উৎসব-এর মাঝে – তোমার কাছে বসে যেটুকু সময় কাটালাম তার মধ্যেই মনে হল – বাঃ এত বেশ জায়গা! তারপর বাড়ী ফেরবার পথে আমার মান হতে লাগল – তোমার সঙ্গে যেন আমার কত দিনের পরিচয়। অল্প সময়ের মধ্যেই তোমাকে জেনে ফেললাম, মনে হল আমার জীবনের চেয়ে তোমাকেই যেন বেশী ভালবাসি। যে সমস্ত নারী অভিনব ও অসাধারণ মহীয়সী তাদের চরিত্রের যে সব সদ্‌গুণের সামাবেশ সম্ভব সেই সমস্তই যেন তোমার মধ্যে নিহিত বলে মনে হল।

তোমার গৃহ যেন শূন্য বলে বোধ হচ্ছে, না? সেই শূন্যতা যেন পূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। তোমার স্বামী ভাল লোক, তোমার অনুগত, তবু স্বামীর যা হওয়া উচিত তিনি যেন তা নন – পত্নীর সুখ সাচ্ছন্দ্য তিনি যেন লক্ষ্য করেন না। না?

তুমি সম্পূর্ণ একান্ত ভাবে আমার। আমার মনে আজ পরম পরিতৃপ্তি। মনের যে অবস্থা মানুষকে সুখী প্রতিপন্ন করায়, আমার মনের আজ সেই ভাবাবেশ। প্রিয়তমে প্রাণেশ্বরি, আমাকে যে কেউ ভালবাসবে এ কথা আমি কোনদিনই বিশ্বাস করতে পারি নি, কিন্তু আজ তোমাকে একেবারে নিজেদের মত পেয়েছি ভেবে, আমার সে ভুল ভেঙ্গেছে। আমার মনের এই ভাবাবেগকে আজ কোনো দুঃশ্চিন্তাই রোধ করতে পারছে না, – রোধ করা তো দূরের কথা কোনো চিন্তাই আজ আর মাথায় প্রবেশ করতে সাহস করছে না। এমন মোহিনী শক্তি তো কারো দেখি নি! আমি যে ভালবাসা পেয়েছি প্রতিদানে তোমাকে তেমনি ভালবাসতে পারব বলে কি তোমার মনে হয় প্রিয়তমে! লোকের বোধহয় সেই ধারণা, না; লোকে যে যাই বলুক, কিছু যায় আসে না, আমি জানি তুমি আমার – তোমারই আমি।

মেটারনিক

(FAQ) মেটারনিকের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. মেটারনিক কে ছিলেন?

অস্ট্রিয়ার বিখ্যাত রাজনৈতিক (Statesman) ব্যক্তিত্ব।

২. মেটারনিকের প্রেমিকার নাম কী?

কাউন্টেস্ লিভেন

৩. কোন যুদ্ধে নেপোলিয়নের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে?

১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ওয়াটারলুর যুদ্ধে।

Leave a Comment