শেলীর প্রেমপত্র

বিখ্যাত রোমান্টিক কবি শেলীর প্রেমপত্র প্রসঙ্গে শেলীর পরিচিতি, শেলীর কবি হিসেবে খ্যাতি, শেলীর প্রেম, শেলীর প্রেমিকা, শেলীর স্ত্রী ও শেলীর মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।

রোমান্টিক কবি শেলীর প্রেমপত্র

ঐতিহাসিক প্রেমপত্রশেলীর প্রেমপত্র
পরিচিতিবিখ্যাত রোমান্টিক কবি
দেশইংল্যান্ড
স্ত্রীহেরিয়েট ওয়েষ্টব্রুক
প্রেমিকামেরি উলষ্টন গডুইন
শেলীর প্রেমপত্র

উনবিংশ শতকের বিখ্যাত রোমান্টিক কবি শেলী। মেরি উলষ্টন গডুইনের সাহচর্যে এসে তাঁর জীবনের ধারা পরিবর্তিত হয়। ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথমা স্ত্রী হেরিয়েট ওয়েষ্টব্রুকের মৃত্যুর পর শেলী মেরীকে বিবাহ করেন। যুগান্তকারী বিখ্যাত গ্রন্থ Frankenstein-এর রচয়িত্রী মিসেস শেলী যে অসাধারণ কল্পনাশক্তির অধিকারিণী ছিলেন সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। মেরি গডুইনকে লেখা শেলীর একটি পত্রের সারাংশ দেওয়া হল, স্ত্রীর জন্য স্বামীর ব্যাকুলতা এর লক্ষ্য করার বিষয়।

মেরী গডুইনকে শেলীর পত্র

Bagni De Lucca, Sunday, 23rd Aug, 1818

প্রিয়তমা মেরী,

আমরা কাল রাত্রে বারটায় এখানে এসে পৌঁছেছি। এখন বেলা ৯ টাও বাজে নি, তোমায় চিঠি লিখতে বসেছি। পরে কি করব না করব অবশ্য সে কথা তোমায় লিখছি না। তবে এইটুকু জানি তোমায় চিঠি লিখছি – ডাক যাবার আগে পর্যন্ত লিখব। যদিও জানি না কটায় ডাক যায় – তবু লিখে চলেছি, লিখবও। লেখা হয়ত আজ শেষ হবে না – চিঠি পড়লেই বুঝতে পারবে – বিভিন্ন তারিখে ভিন্ন ভিন্ন লেখা।

তোমায় টাকা পাঠাব বলে ব্যাঙ্কে যাচ্ছি। ফ্লোরেন্স পোষ্ট-অফিস থেকে তোমায় লিখব। তুমি এখনি ‘ইষ্টি’তে চলে এসো, সেখানে আমি তোমার আশা পথে ব্যাকুল হয়ে চেয়ে থাকব। এই চিঠি পাবার সঙ্গে সঙ্গেই তুমি সব উদ্যোগ করে বেরিয়ে পড়তে পার। তোমার পরামর্শ না নিয়েই আমি এ সকল ব্যবস্থা করলাম, কিছু মনে করো না প্রিয়ে।

প্রাণাধিক, তোমার ভালর জন্যই এ সব ব্যবস্থা করলাম; যদি কোনো দোষ হয়ে থাকে তুমি এসে আমায় ভর্ৎসনা করতে হয় করো। কিন্তু যদি আমার কাজ ঠিক বলে মনে কর তবে কিন্তু আমায় চুমো দিতে হবে। ভাল কি মন্দ করলাম বুঝতে পারছি না – দেখা যাক ফল কি দাঁড়ায়।

একটা কথা বলি, আমার এখানে এক ভদ্রমহিলার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তাকে দেখতে শুনতে বেশ ভালো সুন্দর। চোখে তার তোমারই চোখের ছায়া – তার কথাবার্তা চলা ফেরাও ঠিক তোমারই মতন। দেখো, এলেই বুঝতে পারবে।

এ চিঠি কি করে লেখা হয়েছে জান? খাপছাড়া ভাবে, প্রতি মুহূর্তেই বাধা। ব্যাঙ্কে নিয়ে যাবার জন্য় একজন লোক এখনই আসবে। এটি বেশ ছোট-খাট জায়গা। বাড়ী খুঁজতে বিশেষ বেগ পেতে হয় নি। আজ থেকে চারদিন আমি দিন গুণব। একদিন যাবে তোমার গোছগাছ করতে – আর তিনদিন লাগবে তোমার এখানে আসতে। আচ্ছা যাক দশ দিন সময় দিলাম এর মধ্যে যেন আমাদের দুজনের মিলন হয়।

চিঠি ফেলতে হয়ত দেরী হয়ে গেল। সেই জন্য এক্সপ্রেস ডাকেই দিলাম। প্রিয়ে, তুমি সুখী হও – ভাল থাক – আমার কাছে এস! তোমার চির আদরের শেলীকে ভুলো না, মনে রেখো।

শেলী

শেলীর আর একখানি চিঠি :

প্রিয়ে, তোমার জন্য আমি সব ত্যাগ করতে পারি। আত্মীয় বান্ধব সকলকে ছেড়ে তোমায় নিয়ে আমি সুখে থাকব। ইচ্ছা হয় তোমাকে আর খোকাকে নিয়ে কোনো নির্জন সাগরের বুকে ছোট একটি দ্বীপে গিয়ে বাস করি। একখানা ছোট নৌকা – তাতে চড়ে জগতের সব কথা ভুলে কেমন বেড়াব। চাই না কাব্য – চাই না কোন কবির সঙ্গ।

ভালবাসা-প্রেম-জগতে কিছুই থাকত না যদি তুমি না থাকতে। তোমা হতেই ভালবাসার উৎস – তাই ভালবাসা এত মধুর। –

তোমার শেলী

(FAQ) শেলীর প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. শেলী কে ছিলেন?

বিখ্যাত রোমান্টিক কবি।

২. শেলী কোন দেশের নাগরিক?

ইংল্যান্ড।

৩. শেলীর প্রথমা স্ত্রীর নাম কী?

হেরিয়েট ওয়েষ্টব্রুক।

৪. শেলীর প্রেমিকা তথা দ্বিতীয়া স্ত্রীর নাম কী?

মেরি উলষ্টন গডুইন।

Leave a Comment