ফিরোজ শাহ তুঘলকের প্রথম জীবন ও সিংহাসন লাভ প্রসঙ্গে বংশ পরিচয়, উত্তরাধিকার মনোনীত, মহম্মদের মৃত্যু, সুলতানের অনুগত বাহিনী, ফিরোজের নির্বাচন, জাল উত্তরাধিকারী, ফিরোজের দিল্লি প্রবেশ ও সিংহাসন লাভ সম্পর্কে জানবো।
ফিরোজ শাহ তুঘলকের প্রথম জীবন ও সিংহাসন লাভ
ঐতিহাসিক ঘটনা | ফিরোজ শাহ তুঘলকের প্রথম জীবন ও সিংহাসন লাভ |
রাজত্ব | ১৩৫১-১৩৮৮ খ্রি: |
বংশ | তুঘলক বংশ |
পূর্বসূরি | মহম্মদ বিন তুঘলক |
উত্তরসূরি | তুঘলক শাহ |
ভূমিকা :- সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক তার জনহিতকর কাজের জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত। সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের মৃত্যুর পর তিনি দিল্লী সুলতানির সিংহাসনে আরোহণ করেন।
বংশ পরিচয়
গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের ভ্রাতা মালিক রজবের পুত্র ছিলেন সুলতান ফিরোজ শাহ। পাঞ্জাবের আবোহারের জাঠ সর্দার রণমলের এক পরমাসুন্দরী কন্যা ছিলেন। গিয়াসুদ্দিন তার ভ্রাতা রজবের সঙ্গে এই কন্যার বিবাহ দেন। এই বিবাহজাত পুত্র ছিলেন ফিরোজ শাহ।
উত্তরাধিকারী মনোনীত
সামস-ই-সিরাজ আফিফের মতে সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের পুত্র সন্তান না থাকায় তিনি তার এই খুল্লতাত পুত্রকে নিজ উত্তরাধিকারী বলে গণ্য করতেন।
মহম্মদের মৃত্যু
থাট্টা বা সিন্ধু অভিযানের সময় মহম্মদের অকস্মাৎ মৃত্যু হলে সিংহাসন শূন্য হয়ে যায়। আফিফের মতে, এই সুযোগে সুলতানের বাহিনীতে যে সকল মোঙ্গল সেনা ছিল তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং মৃত সুলতানের হারেম ও সম্পদ লুঠের চেষ্টা করে। সিন্ধুর বিদ্রোহী সেনাপতি আমীর তার্ঘিও আক্রমণে যোগ দেয়।
সুলতানের অনুগত বাহিনী
সুলতানের প্রতি অনুগত বাকি বাহিনীর নেতা মালিক ও আমীররা উপলব্ধি করে যে, এই অবস্থায় মহম্মদের উত্তরাধিকারী নির্বাচন দ্রুত না করলে সেনাদল ছত্রভঙ্গ হয়ে যাবে।
মালিকগণের অনুরোধ
সেনাদল স্থির করে যে, মহম্মদের খুল্লতাত পুত্র ফিরোজ শাহ হলেন যোগ্য উত্তরাধিকারী। সুতরাং মালিকগণ সিংহাসন গ্রহণের জন্য ফিরোজকে অনুরোধ করেন।
ফিরোজের নির্বাচন
আফিফের মতে, ফিরোজ প্রথমে সিংহাসনে বসতে অনিচ্ছা দেখান। কিন্তু সেনাপতিদের চাপে তিনি শেষ পর্যন্ত রাজী হন। ২৪শে মার্চ, ১৩৫১ খ্রিস্টাব্দে সিন্ধুর পূর্ব তীরে সেনা শিবিরে তার অভিষেক হয়। ফিরোজ শাহের বয়স তখন ছিল ৪৫ বৎসর।
উজির খান-ই-জাহান
এদিকে দিল্লীতে উজীর খান-ই-জাহান মহম্মদের মৃত্যুর খবর পেয়ে এক শিশুকে মহম্মদের পুত্র হিসেবে পরিচয় দিয়ে সিংহাসনে বসিয়ে দেন এবং নিজে তার অভিভাবক হিসেবে বসেন।
জাল উত্তরাধিকারী
সম্ভবত এই শিশু মহম্মদের প্রকৃত পুত্র ছিল না। কারণ ঐতিহাসিক আফিফের মতে মহম্মদের এক কন্যা ছাড়া আর কোনো সন্তান ছিল না। কাজেই মালিক ও উলেমারা মহম্মদের কোনো পুত্র সন্তানের অস্তিত্ব অস্বীকার করেন। খান-ই-জাহানের নির্বাচিত শিশুকে তারা জাল উত্তরাধিকারী বলে ঘোষণা করেন।
ফিরোজের দিল্লী প্রবেশ
ফিরোজ শাহ তুঘলক সিন্ধু থেকে দিল্লী আসার পথে উলেমাদের প্রভূত দান-ধ্যান করেন। তিনি সাধু-সন্তদের মাজার বা কবরখানায় শ্রদ্ধা জানান। ফলে দুই প্রবল শক্তি অভিজাত ও উলেমারা তার পক্ষ দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন।
উপসংহার :- ফিরোজ শাহ তুঘলক দিল্লীর নিকট উপস্থিত হলে খান-ই-জাহান তার বশ্যতা স্বীকার করেন। ফিরোজ মালিক ও উলেমাদের সমর্থন নিয়ে দিল্লীর সিংহাসনে বসেন।
(FAQ) ফিরোজ শাহ তুঘলকের প্রথম জীবন ও সিংহাসন লাভ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
ফিরোজ শাহ তুঘলক।
সিন্ধু তীরে সেনা শিবিরে।
১৩৫১ খ্রিস্টাব্দে।
ফিরোজ শাহ তুঘলক।