অতীত ভারতের ঐতিহ্য সন্ধান প্রসঙ্গে ভারতীয়দের সম্পর্কে ব্রিটিশ রাজকর্মচারী ও ইংরাজ লেখকদের রচনা, ভারতবাসী গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার অনুপযুক্ত, ভারতের জাতীয় নেতাদের প্রচার, জাতীয় নেতাদের কাছে ভারতের রাজনৈতিক ঐতিহ্য, ভারতীয় অতীত তথ্য আবিষ্কার, জাতীয় নেতৃবৃন্দের রচনা, জাতীয়তাবাদীদের বাড়াবাড়ি রকমের গর্ববোধ , ভারতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা, ভারতের উপর পাশ্চাত্য সভ্যতার আগ্রাসী প্রভাব, ভারতীয়দের মিথ্যা গর্ববোধ ও আত্মতুষ্টি সম্পর্কে জানবো।
অতীত ভারতের ঐতিহ্য সন্ধান
ঐতিহাসিক ঘটনা | অতীত ভারতের ঐতিহ্য সন্ধান |
ব্রিটিশ রচনা | ভারতবাসী স্বাধীনতার অনুপযুক্ত |
ভারতীয়দের রচনা | সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের চিত্র |
রাজনৈতিক ঐতিহ্য | অশোক, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, আকবর |
ভূমিকা :- বহু ভারতীয় মানুষ হীনাবস্থায় পড়ে তাদের আত্মবিশ্বাস একেবারে হারিয়ে ফেলেছিল। তারা যে কোনো দিন স্বাধীন হয়ে দেশের শাসনকার্যের ভার নিতে পারবে এ বিশ্বাস তাদের ছিল না।
ভারতীয়দের সম্পর্কে ব্রিটিশ রাজকর্মচারী ও ইংরাজ লেখকদের রচনা
বহু ব্রিটিশ রাজকর্মচারী ও অন্যান্য ইংরাজ লেখক তাদের রচনায় প্রায়ই লিখতেন যে অতীতে ভারতীয়রা কখনই নিজেদের শাসন করেনি, হিন্দু মুসলমানে অবিরত লড়াই চলত। অপরের অধীনে থাকার জন্যই ভারতীয়দের সৃষ্টি।
ভারতবাসী গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার অনুপযুক্ত
ভারতবাসীর ধর্ম, সামাজিক অবস্থা সবই নীচু স্তরের। মোটের উপর ভারতবাসী এত অসভ্য যে তারা গণতন্ত্র অথবা স্বাধীনতার অনুপযুক্ত।
ভারতের জাতীয় নেতাদের প্রচার
বহু জাতীয় নেতা এই ধরনের প্রচারের বিরোধিতা করে জনসাধারণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা চালাতেন। তারা গর্বের সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের চিত্র দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতেন।
জাতীয় নেতাদের কাছে ভারতের রাজনৈতিক ঐতিহ্য
ভারতের রাজনৈতিক ঐতিহ প্রসঙ্গে জাতীয় নেতাদের কাছে অশোক, চন্দ্রগুপ্ত, বিক্রমাদিত্য এবং আকবরের বিষয় তুলে ধরা হত।
ভারতীয় অতীত তথ্য আবিষ্কার
বহু ভারতীয় ও ইউরোপীয় লেখক এই সময় অতীত ভারতের চারুকলা, স্থাপত্য, সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান ও রাজনীতি বিষয়ে তথ্য আবিষ্কার করে এই তথ্যগুলি পুস্তক বা প্রবন্ধাকারে প্রকাশ করেন।
জাতীয় নেতৃবৃন্দের রচনা
জনসাধারণের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা জাগ্রত করার প্রচেষ্টায় জাতীয় নেতৃবৃন্দের রচনাগুলি প্রভূত সহায়তা দিয়েছিল।
জাতীয়তাবাদীদের বাড়াবাড়ি রকমের গর্ববোধ
তবে দুর্ভাগ্যবশতঃ কিছু জাতীয়তাবাদী ব্যক্তি এই বিষয়ে কিছু বাড়াবাড়ি রকম গর্ববোধ জাগাবার চেষ্টা করেছিলেন। অতীত ভারতের সামাজিক দোষত্রুটি ও দুর্বলতার দিকগুলি সমালোচনা না করে এঁরা অতীতের সবকিছুকেই আদর্শস্থানীয় রূপে দেখাতে চাইতেন।
ভারতে হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা
- (১) মধ্যযুগীর ভারতে বহু বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ঘটনাগুলি উপেক্ষা করে শুধু প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্য নিয়ে মাতামাতির ফল শুভকর হয় নি। এর জন্য হিন্দুসমাজের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছিল।
- (২) হিন্দু- সমাজ তাদের অতীত ঐতিহ্য নিয়ে অহঙ্কারে স্ফীত হয়ে উঠেছিল এবং তারই প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ভারতের মুসলমান সমাজে সাম্প্রদায়িক মনোভাব জেগে উঠেছিল।
- (৩) পাল্টা হিসেবে, মুসলমান সমাজ তুর্কী ও আরব জাতির ইতিহাস থেকে সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক প্রেরণা সংগ্রহ করতে প্রয়াসী হয়েছিল।
ভারতের উপর পাশ্চাত্য সভ্যতার আগ্রাসী প্রভাব
পাশ্চাত্য সভ্যতার আগ্রাসী প্রভাবের সম্মুখীন হবার চেষ্টায় বহু ভারতীয় মানুষ একথা ভুলেই যেত যে সংস্কৃতির দিক থেকে পাশ্চাত্যের তুলনায় তাদের অনগ্রসরতা বর্তমান রয়েছে।
ভারতীয়দের মিথ্যা গর্ববোধ ও আত্মতুষ্টি
একটা মিথ্যা গর্ববোধ এবং আত্মতুষ্টির ফলে এরা নিজেদের সামাজিক দোষত্রুটিগুলি সম্বন্ধে অনবহিতই থেকে গিয়েছিল। এই আত্মতুষ্টি ও বৃথা গর্ববোধ ভারতের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনগ্রসরতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের পক্ষে হানিকর প্রমাণিত হয়েছিল।
উপসংহার :- বহু মানুষ বাইরের জগৎ থেকে আগত শুভদায়ক ভাবনাচিন্তার সঙ্গে একাত্ম না হয়ে কৃপমণ্ডূকের মত জীবনযাত্রা বেছে নিয়েছিল।
(FAQ) অতীত ভারতের ঐতিহ্য সন্ধান সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
অপরের অধীন ও গণতন্ত্র বা স্বাধীনতার অনুপযুক্ত রূপে।
দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
অশোক, চন্দ্রগুপ্ত, বিক্রমাদিত্য, আকবর।