নলিনী বাগচীর যুদ্ধ প্রসঙ্গে নলিনী বাগচীর ঢাকা আগমন, তার বাড়ি ঘেরাও, পলায়নের চেষ্টা, গুলিবিদ্ধ তারিনী, পুলিশের সাথে নলিনী বাগচীর যুদ্ধ, গুলিবিদ্ধ নলিনী বাগচী ও পুলিশের হাতে বন্দী নলিনী বাগচী সম্পর্কে জানবো।
নলিনী বাগচীর যুদ্ধ
ঐতিহাসিক যুদ্ধ | নলিনী বাগচীর যুদ্ধ |
গৌহাটি পাহাড়ের যুদ্ধ | ডিসেম্বর ১৯১৭ খ্রি: |
সঙ্গী | তারিনী মজুমদার |
মৃত্যু | পুলিশের গুলি |
ভূমিকা :- গৌহাটি পাহাড়ের যুদ্ধের পর নলিনী বাগচী বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। কিছুটা সুস্থ হওয়া মাত্র ঢাকার সমিতির দুরবস্থার সংবাদ শুনে অবিলম্বে ঢাকা যাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠেন।
সতীশ পাকড়াশীর গ্ৰপ্তার
এই সময় সতীশ পাকড়াশী মহাশয়ও বাইরে ছিলেন না। তিনি দীর্ঘ পাঁচ বৎসরকাল আত্মগোপন করে থাকবার পর ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারী মাসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
নলিনী বাগচীর ঢাকা আগমন
কাজেই অসুস্থতা সত্ত্বেও নলিনী নিজেই পালিয়ে ঢাকায় উপস্থিত হন এবং ঢাকার ফলতাবাজারের এক বাড়িতে গোপনে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
নলিনী বাগচীর বাড়ি ঘেরাও
ঢাকার পুলিশ কোনো প্রকারে এই সংবাদ অবগত হয়। একদিন শেষরাত্রিতে পুলিশ সেই বাড়িটি ঘিরে ফেলে। নলিনী ও তার সঙ্গী তারিণী মজুমদার বুঝলেন, বাড়ির মধ্যে বসে থাকলে গ্রেপ্তার এড়ানো অসম্ভব।
নলিনী বাগচীর পলায়নের চেষ্টা
কাজেই নলিনী ও তার সঙ্গী পলায়নের শেষ চেষ্টা করবার সিদ্ধান্ত নেন। ভোর হলে দরজা খুলে বের হওয়া মাত্র তাঁরা একটি হাবিলদারের দিকে গুলি ছুঁড়ে দ্রুত পলায়নের চেষ্টা করেন।
গুলিবিদ্ধ তারিনী
নলিনী বাগচীর গুলিতে হাবিলদার ধরাশায়ী হয়, কিন্তু অসংখ্য পুলিশ রাইফেল হতে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি বর্ষণ করতে থাকে। তারিণীর গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
পুলিশের সাথে নলিনী বাগচীর যুদ্ধ
পলায়ন অসম্ভব বুঝে নলিনী ঘরে ফিরে যান এবং জানলা দিয়ে গোয়েন্দা ইনস্পেকটরকে লক্ষ্য করে গুলি করেন, ইনস্পেক্টর ধরাশায়ী হয়। এই সময় ঘরের মধ্যে থেকে নলিনী পুলিশের সাথে কিছুক্ষণ যুদ্ধ চালান।
গুলিবিদ্ধ নলিনী বাগচী
অবশেষে পুলিশদল রাইফেল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুঁড়ে কাঠের দরজা ভেঙে ফেলে এবং গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে ঘরে প্রবেশ করে। তখন নলিনীর সর্বাঙ্গ গুলিবিদ্ধ, প্রচুর রক্তপাতের ফলে তাঁর দেহ অবশ হয়ে পড়েছে। তাঁর হাতের মুঠার মধ্যে মশার পিস্তল, কিন্তু তা চালাবার শক্তি নেই।
পুলিশের হাতে বন্দী নলিনী বাগচী
পুলিশ তাঁকে প্রায় মূর্ছিত অবস্থায় ধরাধরি করে গাড়িতে তুলে নেয়। হাসপাতালে যখন অর্ধচেতন অবস্থায় নলিনীর জীবনের শেষ মুহূর্ত উপস্থিত তখন গোয়েন্দারা অসংখ্য প্রশ্নবাণে তাঁকে জর্জরিত করছিল।
উপসংহার :- নলিনী জীবনের শেষ মুহূর্তেও অখ্যাত, অজ্ঞাত থাকতে বদ্ধপরিকর। মৃত্যুপথযাত্রী নলিনীর এক উত্তর – “Let me die peacefully” (আমাকে শান্তিতে মরতে দাও)। কয়েক মুহূর্ত পরেই নলিনী ভারত-এর বৈপ্লবিক স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অম্লান স্বাক্ষর রেখে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন।
(FAQ) নলিনী বাগচীর যুদ্ধ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
ডিসেম্বর ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে।
বসন্ত।
ঢাকায়।
তারিনী মজুমদার।
পুলিশের গুলিতে