আনন্দবাজার পত্রিকা -র ধরণ, প্রকাশকাল, সম্পাদক, বহুল প্রচলিত পত্রিকা, সংখ্যা, পাঠক, পত্রিকার যাত্রা শুরু, আত্মপ্রকাশ, প্রথম সংখ্যা, বাংলার মুখপত্র, ইন্টারনেট সংস্করণ, পুরস্কার প্রাপ্তি, স্থানীয় খবরের প্রাধান্য, খবরের বাইরে খবর ইত্যাদি সম্পর্কে জানবো।
দৈনিক পত্রিকা আনন্দবাজার পত্রিকা
ধরণ | দৈনিক পত্রিকা |
মালিক | আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাইভেট লিমিটেড |
প্রকাশক | আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাইভেট লিমিটেড |
প্রধান সম্পাদক | অরূপ সরকার |
সম্পাদক | ঈশানী দত্ত রায় |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৩ মার্চ, ১৯২২ |
রাজনৈতিক মতাদর্শ | নিরপেক্ষ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
সদর দপ্তর | কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ |
ভূমিকা :- পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় দৈনিক পত্রিকা হল আনন্দবাজার পত্রিকা।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রকাশক
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাইভেট লিমিটেড এই পত্রিকার প্রকাশক।
আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক
বিভিন্ন সময়ে শতাব্দী প্রাচীন এই পত্রিকাটির সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন বিভিন্ন ব্যক্তি। এরা হলেন –
- (১) প্রফুল্লকুমার সরকার (১ জুন ১৯২২ খ্রি: – ৬ অক্টোবর ১৯২৩ খ্রি:)
- (২) সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (৭ অক্টোবর ১৯২৩ খ্রি: – ৩১ অক্টোবর ১৯৩০ খ্রি:)
- (৩) মাখনলাল সেন (১ নভেম্বর ১৯৩০ খ্রি: – ২৬ নভেম্বর ১৯৩০ খ্রি:)
- (৪) বঙ্কিমচন্দ্র সেন (২৭ নভেম্বর ১৯৩০ খ্রি: – ১০ জুন ১৯৩১ খ্রি:)
- (৫) সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার (১১ জুন ১৯৩১ খ্রি: – ৬ জানুয়ারি ১৯৪১ খ্রি:)
- (৬) প্রফুল্লকুমার সরকার (৭ জানুয়ারি – ১৪ এপ্রিল ১৯৪৪ খ্রি:)
- (৭) চপলাকান্ত ভট্টাচার্য (১৬ এপ্রিল ১৯৪৪ খ্রি: – ২৪ জুন ১৯৫৪ খ্রি:)
- (৮) নলিনীকিশোর গুহ (২৫ জুন – ৩ অক্টোবর ১৯৫৪ খ্রি:)
- (৯) চপলাকান্ত ভট্টাচার্য (৪ অক্টোবর ১৯৫৪ খ্রি: – ৩১ জানুয়ারি ১৯৫৯ খ্রি:)
- (১০) অশোক কুমার সরকার (১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৯ খ্রি: – ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ খ্রি:)
- (১১) অভীক সরকার (১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ খ্রি: – ২২ জুন ২০১৬ খ্রি:)
- (১২) অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায় (২৩ জুন ২০১৬ খ্রি: – ৩১ মে ২০২০ খ্রি:)
- (১৩) ঈশানী দত্তরায় (১ জুন ২০২০ খ্রি: – বর্তমান)
আনন্দবাজার পত্রিকা বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকা
প্রকাশ-সংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে বাংলা ভাষায় বহুল প্রচারিত দৈনিক পত্রিকা।
আনন্দবাজার পত্রিকার সংখ্যা
কলকাতা, নয়া দিল্লি, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, শিলিগুড়ি ও ভারত -এর অন্যান্য শহর থেকে নিয়মিত এটি দশ লক্ষেরও অধিক সংখ্যায় প্রচারিত হয়।
আনন্দবাজার পত্রিকার পাঠক
ইন্ডিয়ান রিডারশিপ সার্ভে অনুসারে, পত্রিকাটি ১৫৬ লাখ মানুষ পাঠ করেন।
আনন্দবাজার পত্রিকার যাত্রা শুরু
এই আনন্দবাজার পত্রিকা যাত্রা শুরু করেছিল ১৩ মার্চ, ১৯২২ (২৯ শে ফাল্গুন,১৩২৮ বঙ্গাব্দ)।
আনন্দবাজার পত্রিকার আত্মপ্রকাশ
এই আনন্দবাজার পত্রিকার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল দোলযাত্রার দিন সান্ধ্য দৈনিক হিসাবে। তখন মূল্য ছিল দু’পয়সা।
আনন্দবাজার পত্রিকার ঠিকানা
6 Prafulla Sarkar Street Kolkata – 700001 West Bengal, India.
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম সংখ্যা
প্রথম সংখ্যাটি ছাপা হয়েছিল পুরোপুরি লাল কালিতে, যাকে ব্রিটিশ সরকারের মুখপত্র ইংলিশম্যান এক ‘বিপদ সংকেত’ বলে ভেবেছিল।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিতে কম্পন সৃষ্টি
আনন্দবাজার পত্রিকা দেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে নির্ভীক ও আপসহীন মনোভাব নিয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য-এর ভিতে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রেস
এই পত্রিকা ছাপা হত ১৯১৪ সালে সুরেশচন্দ্র মজুমদার প্রতিষ্ঠিত ৭১/১, মির্জাপুর স্ট্রিটের শ্রীগৌরাঙ্গ প্রেস থেকে।
আনন্দবাজার পত্রিকার সকালে প্রকাশনা
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ১লা জুন থেকে এই পত্রিকার প্রকাশনা সকালে হতে থাকে।
জাতীয়তাবাদের উদ্গাতা
প্রাক্-স্বাধীনতা যুগে আনন্দবাজার পত্রিকা ছিল জাতীয়তাবাদের উদ্গাতা, স্বাধীনতা পরবর্তী কালে সে দাঁড়িয়েছে এই বাংলা ও তার মানুষদের সার্বিক উন্নয়নের পক্ষে।
আনন্দবাজার পত্রিকা বাংলার মুখপত্র
পক্ষপাতহীন মতামত, গঠনমূলক সমালোচনা, অদম্য সাহস ও আপসহীন মনোভাব প্রভৃতি দিকগুলি আনন্দবাজার পত্রিকাকে করে তুলেছে ‘বাংলার মুখপত্র’।
আনন্দবাজার পত্রিকা সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র
১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে প্রেস কমিশন আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেশের একক সংস্করণের সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র হিসাবে ঘোষণা করে।
আনন্দবাজার পত্রিকার বানান
- (১) আনন্দবাজার পত্রিকায় অধিকাংশ বাংলা শব্দের ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি কর্তৃক সংস্কারকৃত বানানবিধি গৃহীত হয়েছে।
- (২) অবঙ্গভাষী ব্যক্তিবর্গের নাম এবং বহির্বঙ্গের কোনো স্থাননামের ক্ষেত্রে এই পত্রিকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বের মাতৃভাষায় অথবা সংশ্লিষ্ট স্থানে প্রচলিত ভাষায় প্রচলিত বানান এবং উচ্চারণ অনুসারে শব্দটির প্রতিবর্ণীকরণ করে থাকে।
আনন্দবাজার পত্রিকার ইন্টারনেট সংস্করণ
এই পত্রিকার একটি জনপ্রিয় ওয়েব সংস্করণ আছে। এর পূর্ববর্তী সংস্করণটি কেবলমাত্র ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্রাউজারের মাধ্যমে দেখা সম্ভব ছিল। ১ জুন, ২০১১ থেকে সাইটটি ইউনিকোডে রূপান্তরিত হওয়ায় যে কোন ব্রাউজার ব্যবহারের মাধ্যমে পত্রিকাটি পাঠ করা সম্ভব।
আনন্দবাজার পত্রিকার পুরস্কার
সাম্প্রতিক কালে আনন্দবাজার পত্রিকা তার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য একাধিক সম্মানে স্বীকৃত হয়েছে। যেমন –
- (১) ইন্ডিয়াজ মোস্ট অ্যাট্রাকটিভ র্ব্যান্ড ২০১৩ ইন প্রিন্ট – এই সম্মান দিয়েছে ভারতের একটি অগ্রগণ্য রিসার্চ এজেন্সি ট্রাস্ট রিসার্চ অ্যাডভাইসরি।
- (২) ইন্ডিয়াজ মোস্ট ট্রাস্টেড নিউজপেপার ইন রিজিওনাল ল্যাঙগুয়েজ ২০১৪ – এই সম্মান দিয়েছে ভারতের একটি অগ্রগণ্য রিসার্চ এজেন্সি ট্রাস্ট রিসার্চ অ্যাডভাইসরি।
আনন্দবাজার পত্রিকায় স্থানীয় খবরের প্রাধান্য
আজ আপনার পাড়া, শহর বা জেলায় কী ঘটছে, তা বিশ্ব -এর বিভিন্ন প্রান্তে ঘটা খবরের মতোই এক রকম গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় খবরের এই প্রয়োজনীয়তার জন্যই এখন আনন্দবাজার পত্রিকায় চারটি পাতা সপ্তাহে ৬ দিন প্রকাশিত হয়, যেখানে শুধুই আপনার জেলা বা শহরের খবর থাকে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় খবরের বাইরের খবর
সংবাদপত্রে প্রতিদিনের বিভিন্ন খবর এবং জেলা অথবা শহরের বিশেষ পাতা ছাড়াও আনন্দবাজার পত্রিকা সারা সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন বিষয়ের উপর নানারকম ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। যেমন –
- (১) প্রতি মঙ্গলবার জীবন যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে ‘প্রস্তুতি’ পাতাটি প্রকাশিত হয়।
- (২) প্রতি শনিবার প্রকাশিত হয় ‘পত্রিকা’ নামের বিশেষ পাতাটি।
- (৩) প্রতি রবিবার পরিবারের সকলের জন্য প্রকাশিত হয় রবিবাসরীয় পাতাটি।
উপসংহার :- বছরের পর বছর ধরে আনন্দবাজার পত্রিকা যে সম্মান এবং স্বীকৃতি পেয়ে এসেছে, তার থেকেই প্রমাণ হয় সাধারণ মানুষের মনে এই সংবাদপত্রের প্রতি কী অপরিসীম ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা রয়েছে।
(FAQ) আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মার্চ।
প্রফুল্ল কুমার সরকার।
ঈশানী দত্তরায়।