সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন, সম্মেলনের স্থান, সময়কাল, সভাপতি, সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব সমূহ, অনিল শীলের অভিমত, অমলেশ ত্রিপাঠীর অভিমত, ইলবার্ট বিল আন্দোলনের প্রত্যুত্তর, আনন্দমোহন বসুর অভিমত, জাতীয় কংগ্রেসের মহড়া, সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন ও সম্মেলনের অনুকরণ সম্পর্কে জানবো।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন, সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের সময়কাল, সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের স্থান, সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের প্রথম সভাপতি, সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব সমূহ, ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের মহড়া সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন, সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে অনীল শীলের অভিমত, সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন, সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের অনুকরণ সম্পর্কে জানব।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন : ১৮৮৩ খ্রিঃ
ঐতিহাসিক ঘটনা | সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন |
সম্মেলনের সূচনাকাল | ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দ |
সম্মেলনের স্থান | কলকাতার অ্যালবার্ট হল |
আয়োজক | সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় |
দ্বিতীয় অধিবেশন | ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দ |
ভূমিকা :- সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারত সভার আন্দোলন জনজীবনে এক নতুন চেতনার সঞ্চার করে। তাকে রাষ্ট্রগুরু সম্মানে ভূষিত করা হয়।
সুরেন্দ্রনাথের উপলব্ধি
রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় উপলব্ধি করেন যে, সর্বভারতীয় কোনও প্রতিষ্ঠান ব্যতীত সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কার্যকরী সংগ্রাম পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন
প্রধানত সর্বভারতীয় প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে ভারত সভার উদ্যোগে এবং সুরেন্দ্রনাথ ও আনন্দমোহন বসুর চেষ্টায় একটি সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের স্থান
কলকাতার অ্যালবার্ট হলে (বর্তমান কলেজ স্ট্রিট কফি হাউস) জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় শতাধিক প্রতিনিধি নিয়ে এই সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের সময়কাল
১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ২৮ – ৩০ শে ডিসেম্বর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের সভাপতি
রামতনু লাহিড়ী সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব সমূহ
তিনদিন ব্যাপী এই সম্মেলনে স্বায়ত্তশাসন, প্রতিনিধিত্বমূলক ব্যবস্থা পরিষদ, সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষা, বৃহত্তর কর্মসংস্থান, বিচারব্যবস্থার স্বতন্ত্রীকরণ, উচ্চপদে অধিকসংখ্যক ভারতীয় নিয়োগ, অস্ত্র আইন রহিত ও জাতীয় আন্দোলন পরিচালনার জন্য ‘জাতীয় ধনভাণ্ডার’ স্থাপনের প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে অনিল শীলের অভিমত
ঐতিহাসিক ডঃ অনিল শীল বলেন যে, এই সম্মেলন আদৌ প্রতিনিধিত্বমূলক ছিল না। তাঁর মতে, বোম্বাই, মাদ্রাজ প্রভৃতি অঞ্চলের প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল যথেষ্ট কম এবং অধিকাংশ প্রতিনিধিই ছিলেন বাঙালি।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে অমলেশ ত্রিপাঠীর অভিমত
ঐতিহাসিক ডঃ অমলেশ ত্রিপাঠী বলেন যে, এই সম্মেলনে কতজন প্রতিনিধি ছিলেন সেটা বড় কথা নয়, সম্মেলন বসাতে পারাটাই ছিল বড় কথা।
ইউরোপীয় ইলবার্ট বিল আন্দোলনের প্রত্যুত্তর
ঐতিহাসিক তারা চাঁদ-এর মতে, এই সম্মেলন ছিল ইউরোপীয়দের ইলবার্ট বিল আন্দোলন -এর বিরুদ্ধে শিক্ষিত ভারতবাসীর যোগ্য প্রত্যুত্তর।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে আনন্দমোহন বসুর অভিমত
আনন্দমোহন বসু জাতীয় সম্মেলনকে ‘জাতীয় পার্লামেন্টের দিকে প্রথম পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন।
জাতীয় কংগ্রেসের মহড়া সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন
প্রকৃতপক্ষে এই সম্মেলনই ছিল জাতীয় কংগ্রেসের ভিত্তিস্বরূপ। ডঃ অমলেশ ত্রিপাঠী জাতীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনকে “জাতীয় কংগ্রেসের মহড়া” বলে অভিহিত করেছেন।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের সাফল্যে সুরেন্দ্রনাথের উত্তর ভারত ভ্রমণ
এই সম্মেলনের সাফল্যে উৎসাহিত সুরেন্দ্রনাথ একে স্থায়ী রূপ দেবার জন্য ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে সমগ্র উত্তর ভারত পরিভ্রমণ করেন।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন
১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের২৫-২৭শে ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন সমাপ্ত হওয়ার পরদিনই জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের অনুকরণ
জাতীয় কংগ্রেসের উদ্যোক্তাগণ সুরেন্দ্রনাথের কাছ থেকে জাতীয় সম্মেলনের কার্যবিবরণী সংগ্রহ করেন এবং এই অধিবেশনে ‘জাতীয় সম্মেলনে’র অনুকরণে বিভিন্ন প্রস্তাব পাশ করা হয়।
উপসংহার :- খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে, ‘জাতীয় সম্মেলন‘ থেকেই ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা-র প্রেরণা আসে। এখানেই সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনের গুরুত্ব।
(FAQ) সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলন সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ২৮ – ৩০ ডিসেম্বর।
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়।
সর্বভারতীয় জাতীয় সম্মেলনকে।
১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫-২৭ ডিসেম্বর।