উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেমপত্র

বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের পরিচিতি, উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের খ্যাতি, উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেম, উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেমিকা ও উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।

ইংরেজ সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেমপত্র

ঐতিহাসিক প্রেমপত্রউইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেমপত্র
দেশইংল্যান্ড
পরিচিতিখ্যাতনামা সাহিত্যিক
বিখ্যাত রচনাRomeo Juliet, Hamlet, Julius Caesar
স্ত্রীএ্যানে হাথওয়ে
উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেমপত্র

মহাকবি শেক্সপিয়ার বিশ্ববিখ্যাত। কিন্তু তাঁর জীবন একটি বিরাট ট্রাজিডি। প্রেমিক কবি নিজের প্রেমিক জীবনে যে বিরহানুভূতি লাভ করেছিলেন তাঁর রচিত গ্রন্থরাজির অধিকাংশের মধ্যে সে বিরহের কাহিনী রূপ পরিগ্রহ করেছে বলেই মনে হয়। কবিপত্নী এ্যানে হাথওয়ে কবি অপেক্ষা বয়সে ৮ বছরের বড় ছিলেন। এই বয়সের পার্থক্য কবির প্রেমিক চিত্তকে শান্ত করতে পারে নি। পত্নী প্রেমলাভ তাঁর ভাগ্যে ছিল না, তাই বিবাহের অল্প কয়েক বছর পরই তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে। কবি পুনরায় দার পরিগ্রহ করেছিলেন কিনা বলা যায় না। বিবাহের পর যে কোনো কারণেই হোক কবি জন্মভূমি স্ট্রাটফোর্ড (Stratford) ত্যাগ করতে বাধ্য হন। দাম্পত্য জীবনে যে মনোমালিন্য় দেখা দিয়েছিল তা আজীবন তাঁর জীবনে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রেখেছিল মিলনের, প্রবল আকাঙ্খা তবু মিলন হয় না। চির বুভুক্ষু হৃদয় তাই যতবার কাব্যের মধ্য দিয়ে আপন প্রেমিকার সাথে মিলনের আশা করেছেন, ততবারই ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছেন।

তাঁর একখানা চিঠি নীচে দেওয়া হল।

সুপ্রিয়াসু,

তোমাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাই। আশা করি ভালই আছ। কোনো অভাগার কথা মনে করে মনকে ব্যথাতুর করবার মত দুর্ভাগ্য তোমার হয় নি তো? তোমাকে পাবার অধিকার আমার আছে কিনা জানি না – শুধু এইটুকু মনে করেই আমার তৃপ্তি যে একদিন তোমাকে আমার আপনার ভাবতে পেরেছিলাম। সে দিন হয়ত তুমি আমায় আত্মদান করে ছিলে, অন্তত আমি তা মনে ভেবেছিলাম; তাতেই আমার তৃপ্তি।

আমার অস্থির জীবনে তোমার স্মৃতিই আমার একমাত্র সম্বল। বিচিত্র পরিবেশ – বিচিত্র নরনারী নটনটী নাটক ও অভিনয় নিয়ে জীবনের এই যে অনুভূতি এ অতি অভিনব। জানিনা সাংসারিক জীবন এর চেয়ে মধুময় কিনা! ঘর আমি বাঁধতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ঘর আমায় বাঁধতে পারলে না! বেশ আছি -। তবু মাঝে মাঝে মন ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে – অভিনয় দেখতে দেখতে সমস্ত জীবনটা অভিনয় বলে মনে হয়। নায়ক নায়িকার প্রেমাভিনয় দেখে সমস্ত জীবন মাধুর্যে ভরা বলে বোধ হয়। কিন্তু পরক্ষণে নেপথ্যের নগ্নতা আমার সমস্ত স্বপ্ন চুরমার করে দিয়ে যায়। আমার মনের নেপথ্যে সমস্ত অভিনয় আজ শেষ হয়েছে – তাতে কোনো মাধুর্য নেই, মাদকতা নেই।

উইলিয়ম আজ আর নাট্যসম্প্রদায়ের বালক-পরিচালক নয় – সে আজ সম্প্রদায়ের পরিচালক। মনে আশা আছে একদিন সে হবে নাট্যকার, তার নাটক অভিনয় হবে, দেশে দেশে দিগ দিগন্তে ছড়িয়ে পড়বে তার যশ। প্রেমের অভিনয় ও প্রেমিক-প্রেমিকার চরিত্র চিত্রণ করেই কাটবে তার জীবন – বাস্তবের সঙ্গে তার কোনো সামঞ্জস্য থাকবে না, এ্যানে হেথওয়ে থাকবে দূরে বহুদূরে।

বাইরের দৈন্য আমার আজ নেই। কিন্তু অন্তরে আমি বড় দীন, অন্তরের সকল ঐশ্বর্য তুমি নিয়েছ কেড়ে, তোমায় অভিশাপ দিতে ইচ্ছা হয় মাঝে মাঝে, পারি না শুধু একদিন তুমি আমার আপনার হতে চেয়েছিলে বলে। যা পেতে চেয়েছিলাম তা পাই নি, কেন পাই নি তা বলতে পারি না। কে যে দায়ী তা কি করে বলি, দায়ী নিয়তি – ভাগ্য। আমার ‘চাওয়া’ তোমার হৃদয় দখল করতে পারেনি আর তোমার ‘পাওয়া’ও মনকে অভিভূত করে নি। চাওয়া পাওয়ার এই যে প্রতিকূল আচরণ এরই নাম নিয়তি। ভাবি, দুঃখ করব না – কিন্তু পেরে উঠি না; দুঃখ আমায় করতেই হয় – এও আবার ভাগ্য! দুঃখ পাওয়াটাই মানুষের একান্ত নিজস্ব অধিকার, আর তার জন্য ক্ষোভ এবং অন্যকে দোষারোপ করাও তার প্রকৃতি।

কি যে লিখছি তা নিজেই বুঝতে পারছি না, তুমিও বুঝবে কিনা জানি না তবু লিখি, কারণ মনের তৃপ্তি। সব ভুলে যেও। কোনো দিন কোনো কিশোর তোমার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছিল একথা যেন মনে ঠাই না পায়। ডাক পড়েছে এবার থিয়েটার-এ যেতে হবে। আজ বিচ্ছেদ সম্পূর্ণ হোক, আর তোমার কাছে কোনো দিন কোনো কিছু আশা আমি করব না। কোথায় কি ভাবে থাকব তা বলতে পারি না – Stratford এ ফিরব কিনা কে জানে! মিলন আমাদের হয় নি কিন্তু তোমার সঙ্গে যে একদিন আমার বাহ্য মিলনের অনুষ্ঠান হয়েছিল সে কথা লোকে মনে রাখবে। হয়ত মানুষের ইতিহাসে থাকবে তোমার নাম আমার নামের সঙ্গে জড়িত হয়ে – একথা ভাবতে যেন কি রকম বোধ হয়। তবু মনকে সান্ত্বনা দিই –

উইলিয়াম

(FAQ) উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

1. উইলিয়াম শেক্সপিয়ার কে ছিলেন?

একজন বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক।

২. উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের দুটি উল্লেখযোগ্য রচনার নাম লেখ।

Romeo Juliet, Hamlet.

৩. উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের স্ত্রীর নাম কী?

এ্যানে হাথওয়ে।

Leave a Comment