সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা -র সম্পাদক, প্রকাশকাল, উদ্দেশ্য, পত্রিকা প্রকাশের প্রেক্ষাপট, প্রকাশনার বিভিন্ন দিক, পত্রিকার জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জানবো।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার প্রকাশকাল, সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদক, সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার উদ্দেশ্য, সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার উন্নতি, সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার অস্তিত্ব, সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা প্রকাশের প্রেক্ষাপট, সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার আবির্ভাব, সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার শেষ সংখ্যা ও সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার জনপ্রিয়তা।

সাপ্তাহিক সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা

ধরণসাপ্তাহিক পত্রিকা
প্রকাশকাল৫ মার্চ ১৮২২ খ্রিস্টাব্দ
সম্পাদকভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশনা স্থানকলকাতা
সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা

ভূমিকা :- ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা হল সমাচার চন্দ্রিকা।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার প্রকাশকাল

এই পত্রিকাটি ১৮২২ সালের ৫ই মার্চ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদক

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদকের পূর্ব পরিচিতি

পূর্বে সম্বাদ কৌমুদী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার সাথে রাজা রামমোহন রায়ের মত-পার্থক্য দেখা দিলে তিনি সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার উদ্দেশ্য

প্রধানত ‘সম্বাদ কৌমুদী’ পত্রিকার সতীদাহ নিবারণ চেষ্টার বিরোধিতা করার উদ্দেশ্যেই এই পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার উন্নতি

ভবানীচরণ ছিলেন সমকালে প্রভাবশালী ব্যক্তি ও গদ্যসাহিত্য প্রণেতাদের মধ্যে একজন। ফলে ধীরে ধীরে পত্রিকাটির প্রচার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং ১৮২৯ সালের এপ্রিল থেকে সাপ্তাহিক পত্রিকাটি সপ্তাহে দুই দিন প্রকাশ হতে শুরু করে।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার অস্তিত্ব

প্রথম প্রকাশের পর ২৫ বছর পর্যন্ত এই পত্রিকাটি টিকে ছিল বলে জানা যায়।

সমাচার দর্পণ পত্রিকার বিরোধিতা

রামমোহন রায়ের বিরোধিতা করতে গিয়ে এই পত্রিকাটি রক্ষণশীল মতের প্রতি ঝুঁকে যায় এবং এব্যপারে সমাচার দর্পণ পত্রিকার অনেক প্রতিবেদনের বিপক্ষেও লেখা প্রকাশ করা শুরু করে।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকাটি প্রকাশের প্রেক্ষাপট

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকাটি প্রকাশের প্রেক্ষাপটগুলি হল-

সম্বাদ কৌমুদী পত্রিকার ভূমিকা

এই পত্রিকা প্রকাশের পিছনে  সাপ্তাহিক সম্বাদ কৌমুদী পত্রিকা -র বিশেষ ভূমিকা ছিল। এই পত্রিকায় হিন্দু ধর্মের প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধে লেখা প্রচার করা হয়।

সহমরণ প্রথার বিরোধিতা

বিশেষ করে, সহমরণ-প্রথার বিরুদ্ধে রাজা রামমোহন রায়-এর আন্দোলনকে এই পত্রিকা সমর্থন করতে থাকে। সহমরণ প্রথার বিরুদ্ধে এই পত্রিকা ক্রমাগত বহু রচনা প্রকাশ করে।

রক্ষণশীল হিন্দুদের উদ্দ্যোগ

ফলে রক্ষণশীল হিন্দুরা, এর প্রতিবাদের জন্য একটি পত্রিকা প্রকাশের প্রয়োজন অনুভব করে। এই সূত্রেই ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই মার্চে আত্মপ্রকাশ করে সমাচার চন্দ্রিকা।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার আবির্ভাব

রামমোহনের হিন্দুধর্ম ও সমাজ সম্বন্ধে অতিশয় আধুনিক ও প্রগতিশীল মতের সঙ্গে কিছু রক্ষণশীল স্বভাব ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাল মিলিয়ে চলতে না পারার ফলে দু’জনের মতভেদ ঘটে। তাই রামমোহন এবং ‘সম্বাদ কৌমুদী’র সংস্পর্শ ত্যাগ করে ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮২২ সালে ‘সমাচার চন্দ্রিকা নামে সুপ্রসিদ্ধ পত্রিকা বার করেন।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা প্রকাশনার বিভিন্ন দিক

  • (১) রক্ষণশীল হিন্দুরা এই পত্রিকাটি সাদরে গ্রহণ করেছিলেন। এই কারণে দ্রুত এর গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
  • (২) ১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দের ৪ ডিসেম্বরে সতীদাহ প্রথা আইন দ্বারা বিলুপ্ত হয়ে গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে সতীদাহের পক্ষে লেখা দুষ্কর হয়ে পড়ে।
  • (৩) এরপর থেকে পত্রিকাটি রক্ষণশীল হিন্দুদের জন্য হিন্দুধর্মের অন্যান্য প্রথার বিষয়ে লেখা হত। এই অবস্থায় পত্রিকার গ্রাহক সংখ্যা কমতে থাকে।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার স্বত্ব বিক্রি

১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ভবানীচরণের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় পত্রিকার সম্পাদক হন। কিন্তু তিনি বিভিন্নভাবে ঋণাগ্রস্ত হয়ে পড়লে ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে ভগবতী চট্টোপাধ্যায় -এর কাছে পত্রিকার স্বত্ব বিক্রি করে দেন।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার শেষ সংখ্যা

১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে এই পত্রিকায় ভগবতী চট্টোপাধ্যায়ের নাম প্রকাশক হিসেবে পাওয়া যায়। এর সর্বশেষ সংখ্যা কবে প্রকাশিত হয়েছিল, তা জানা যায় না। 

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকাটির স্থান

এই পত্রিকাটি রক্ষণশীল সমাজে বিশেষ স্থান অধিকার করেছিল। এদিক থেকে রামমোহন বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন ভবানীচরণ। তাঁর প্রতিভাও ছিল অনস্বীকার্য।

সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার জনপ্রিয়তা

পত্রিকাটি ছিল হিন্দু ধর্মসভার মুখপাত্র। এই পত্রিকা ও পত্রিকার সম্পাদক রক্ষণশীল গোঁড়া হিন্দুদের মনোভাবের পোষকতা করতেন বলে এই পত্রিকা সেই সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

উপসংহার :- ভবানীচরণের গোঁড়ামি সমর্থনযোগ্য না হলেও তাঁর সাংবাদিক নিষ্ঠা এবং রসজ্ঞ জীবনদৃষ্টি ও মননশীলতা নবযুগ উন্মেষের সেই প্রথম লগ্নে এক বিস্ময়ের বস্তু ছিল।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যেকোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে  তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. সমাচার চন্দ্রিকা কবে প্রকাশিত হয়?

৫ মার্চ, ১৮২২ খ্রিস্টাব্দ।

২. সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

৩. কোন পত্রিকার বিরোধিতা করার উদ্দেশ্যে সমাচার চন্দ্রিকা পত্রিকা প্রকাশিত হয়?

সম্বাদ কৌমুদী।

Leave a Comment