ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা প্রসঙ্গে বড় রকমের ষড়যন্ত্র দাঁড় করাবার চেষ্টা, পুলিনবিহারী দাসের ফিরে আসা, বিচার শুরু, মামলার রায়, মামলার পর বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপ বৃদ্ধি ও মামলার ব্যর্থতা সম্পর্কে সিডিসন কমিটির মন্তব্য সম্পর্কে জানবো।
ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা
ঐতিহাসিক ঘটনা | ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা |
সময়কাল | জুলাই, ১৯১০ খ্রি: |
বিপ্লবী দল | ঢাকার অনুশীলন সমিতি |
প্রতিষ্ঠাতা | পুলিনবিহারী দাস |
ভূমিকা :- ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা ‘ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা’। ইতিপূর্বে ঢাকা জেলায় যে সকল বড় বড় ডাকাতি ও অন্যান্য বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেগুলির প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও দলকে প্রমাণসহ গ্রেপ্তার করতে না পেরে এবং এই প্রকার ঘটনার ক্রমবৃদ্ধির ফলে পুলিশ বিশেষভাবে অপদস্থ হয়।
বড় রকমের ষড়যন্ত্র দাঁড় করাবার চেষ্টা
উপযুক্ত প্রমাণ না থাকলেও ব্রিটিশ শক্তি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিল যে এইসব কাজ ঢাকার ‘অনুশীলন সমিতির’। সুতরাং এই সমিতিকে একটা মারাত্মক আঘাত দেবার উদ্দেশ্যে পুলিশ “সম্রাটের বিরুদ্ধে যুদ্ধোদ্যম’ প্রভৃতি বহু অভিযোগ একত্র করে একটি বড় রকমের ষড়যন্ত্র দাঁড় করাবার চেষ্টা করে।
ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলার পূর্বে পুলিনবিহারী দাসের ফিরে আসা
১৯১০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে অনুশীলন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালক পুলিনবিহারী দাসও নির্বাসন দণ্ড ভোগ করে ফিরে আসেন। সুতরাং কালবিলম্ব না করে পুলিশ কাজ আরম্ভ করে দেয়।
ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলার বিচার শুরু
চারদিকে গ্রেপ্তার ও খানাতল্লাসী পূর্ণোদ্যমে চলতে থাকে। পুলিন দাস এবং আরও ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার পর জুলাই মাসে এদের নিয়ে “সম্রাটের বিরুদ্ধে যুদ্ধোদ্যম”, ডাকাতি, নরহত্যা প্রভৃতির অভিযোগে ‘ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা’র বিচার আরম্ভ হয়।
ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলার রায়
দীর্ঘকাল ধরে বিচারের পর মাত্র পনের জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। পুলিন দাস মহাশয় সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং অপর চোদ্দ জনকে দুই থেকে সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অন্য সকলে মুক্তিলাভ করেন। এইভাবে বিখ্যাত ‘ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা’র পরিসমাপ্তি ঘটে।
ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলার পর বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপ বৃদ্ধি
কিন্তু এত করেও ঢাকার অনুশীলন সমিতির বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করা গেল না, বরং তা ক্রমশ বেড়েই চলতে থাকে।
ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলার ব্যর্থতা সম্পর্কে সিডিসন কমিটির মন্তব্য
সিডিসন কমিটি সখেদে মন্তব্য করেছে, “দুঃখের বিষয়, এই বিচার ও শাস্তিবিধান এই জেলার অপরাধ নিবারণের দিক থেকে নিষ্ফল হয়। সম্ভবত এই ব্যর্থতার কারণ এই যে, ষড়যন্ত্রকারীদের সংখ্যা অত্যন্ত বেশী এবং তাদের সংগঠন বড় বেশী রকমে বিস্তৃত, আর গ্রেপ্তারের জালও বেশী দূর বিস্তৃত করা যায় নি।”
উপসংহার :- ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ‘ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা’ আরম্ভ হবার পর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ে বহু বড় বড় ডাকাতি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ একটি ছাড়া আর কোনো ডাকাতি উপলক্ষে কাউকেও গ্রেপ্তার করতে বা শাস্তি দিতে পারে নি।
(FAQ) ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
১৯১০ সালে।
ঢাকার অনুশীলন সমিতি।
পুলিনবিহারী দাস।