বীঠোফেনের প্রেমপত্র

পৃথিবীর অন্য়তম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত-প্রতিভা লুডউইগ ভি বীঠোফেনের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে বীঠোফেনের পরিচিতি, বীঠোফেনের খ্যাতি, বীঠোফেনের প্রেম, বীঠোফেনের প্রেমিকা ও বীঠোফেনের মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।

লুডউইগ বীঠোফেনের প্রেমপত্র

ঐতিহাসিক প্রেমপত্রবীঠোফেনের প্রেমপত্র
পরিচিতিপৃথিবীর অন্য়তম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত-প্রতিভা
দেশজার্মানি
প্রেমিকাঅমর প্রণয়িণী
প্রেমপত্র রচনা৬ জুলাই
বীঠোফেনের প্রেমপত্র

পৃথিবীর অন্য়তম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত-প্রতিভা বীঠোফেনের জীবন ছিল দুঃখতাপ-ভরা। তার জন্য অবশ্য তাঁর আপন অনিয়ন্ত্রিত হৃদয়াবেগ ও রুক্ষ মেজাজ বহুলাংশে দায়ী। তার উপর মাত্র আঠাশ বছর বয়সে তিনি শ্রবণশক্তি হারান, এবং পরবর্তীকালে অন্যবিধ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে স্বীয় আন্তর-জীবনের উপর তাঁকে নির্ভর করতে হয় তাঁর অপরিসীম নিঃসঙ্গতা ভরে দেওয়ার জন্য। সাতান্ন বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর পুথিপত্রের মধ্যে তিনটি প্রেমপত্র পাওয়া যায় – সম্ভবত যে “অমর প্রণয়িণীর” উদ্দেশে সেগুলো রচিত হয়েছিল, তাঁকে পাঠান হয় নি। কিন্তু কে সে নারী যে তাঁর হৃদয় অভিষিক্ত করেছিল প্রেমে, বলা দুষ্কর। তিনি কখনও বিবাহ করেন নি। তিনি ছিলেন একান্তই সাথীহীন, একা, আপন প্রতিভার সৌরভের মধ্যেই সমাহিত।

‘অমর প্রণয়িণী’কে লিখিত একখানি পত্র –

৬ই জুলাই সকাল

দেবী আমার, সর্বস্ব আমার, আমার আপন সত্তা – আজ মাত্র ক’টি কথা, আর তাও তোমার একটি পেন্সিল দিয়ে লেখা – আগামী কাল আমার থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাদি পাকা না হওয়া পর্যন্ত শুধু এইটুকুই। এইসব বাজে কাজে কী ঘৃণ্য কালক্ষেপ, প্রয়োজন যেখানে মুখর সেখানে কেন বৃথা এই গভীর বেদনা? ত্যাগ ছাড়া বা সর্বস্ব দাবি না করা ছাড়া কি আমাদের এই প্রেম বাঁচতে পারে? তুমি আমার জীবনসর্বস্ব নও, আমি তোমার জীবনসর্বস্ব নই – এ কি তুমি ইচ্ছা করলেই ফেরাতে পার? হা ঈশ্বর, ঐ সুন্দর প্রকৃতির দিকে তাকাও, আর যা অবশ্যম্ভাবী তার জন্য তোমার হৃদয়কে প্রস্তুত করো, শান্ত করো। প্রেমের দাবি – সর্বস্বই দিতে হবে, এবং যথার্থ তাই; আমার জন্য তুমি তাই, তোমার জন্য আমি তাই – শুধু তুমি সহজেই বিস্মৃত হও যে তোমার জন্য এবং আমার নিজের জন্য় আমাকে বাঁচতে হবে। যদি আমরা পরিপূর্ণভাবে মিলিত হতে পারতাম, তাহলে এই বেদনা-হত অনুভব আমি যত কম লক্ষ্য করি তুমিও তাই করতে।

আমার এবারকার যাত্রাটি হয়েছে ভয়ঙ্কর। ঘোড়া কম থাকায় আমাদের গাড়িটাকে অন্য এক পথ ঘুরে যেতে হয়েছে, কিন্তু কী ভয়ানক সে পথ। শেষের স্টেশনের আগের স্টেশনে ওরা আমাকে রাত্রিতে একটা বিশেষ ঝোপের পাশ দিয়ে যাওয়া সম্পর্কে সতর্ক করে দেয়। কিন্তু তাতে আমার আগ্রহ বরং বাড়লই। আমি ভুলই করলাম, কারণ ঐ দুর্গম ভয়ঙ্কর পথের মাঝখানে অন্ধকার রাত্রিতে আবাদের গাড়ি ভেঙ্গে চৌচির। বরাত ভাল যে রাস্তায় ছিটকে পড়ি নি।

যাক, কপাল জোরে যে বেঁচে গিয়েছি তাতে আমি বেশ খুশী, যেমন চিরকাল হয়ে থাকি। এবার বাহির ছেড়ে ভেতরের কথায় আসা যাক; হয়তো শীঘ্রই আমাদের দেখা হবে। এক দিন আমার জীবন সম্পর্কে যে সব কথা আমি ভেবেছি তা আজও আমি তোমাকে জানাতে পারছি না। যদি আমাদের হৃদয় আরও কাছাকাছি বাঁধা থাকত তো হয়ত এ সঙ্কোচ আমি অনুভব করতাম না। আমার হৃদয় ভরে উঠেছে তোমাকে সব বলার জন্য; আঃ আবার কখনও কখনও আমার মনে হয় আমাদের কথার কী-ই বা মূল্য! প্রফুল্ল হও, আর আমি যেমন তোমার একান্ত ও সর্বস্ব, হদয়ের মণি, তেমনি তুমি আমার তাই হয়ে ওঠ। বাকী সব ভবিতব্যের হাতে ছেড়ে দাও -যা হবেই আমাদের আর যা হব তা হতে দাও।

অনন্তকালের তোমার

লুডউইগ

(FAQ) বীঠোফেনের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. বীঠোফেন কে ছিলেন?

পৃথিবীর অন্য়তম শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত-প্রতিভা।

২. বীঠোফেন কোন দেশের নাগরিক?

জার্মানি।

৩. বীঠোফেন প্রেমিকা কে ছিলেন?

অমর প্রণয়িণী

Leave a Comment