বিখ্যাত ইংরেজ কবি ও লেখক এলিজাবেথ ব্যারেটের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে এলিজাবেথ ব্যারেটের পরিচয়, এলিজাবেথ ব্যারেটের দেশ, এলিজাবেথ ব্যারেটের খ্যাতি, এলিজাবেথ ব্যারেটের প্রেম, এলিজাবেথ ব্যারেটের প্রেমিক ও এলিজাবেথ ব্যারেটের মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।
কবি এলিজাবেথ ব্যারেটের প্রেমপত্র
ঐতিহাসিক প্রেমপত্র | এলিজাবেথ ব্যারেটের প্রেমপত্র |
দেশ | ইংল্যান্ড |
পরিচিতি | বিখ্যাত কবি ও লেখক |
প্রেমিক | রবার্ট ব্রাউনিং |
স্বামী | রবার্ট ব্রাউনিং |
কবিদম্পতি ব্রাউনিং-এর কোর্টশিপের কথা পাশ্চাত্য সাহিত্যানুরাগী মাত্রই জানেন। এলিজাবেথের Sonnets from the Portuguese এবং ব্রাউনিং-এর প্রত্যুত্তর One Word More প্রেমের অভিব্যক্তিরূপে অপরূপ। বিশ্বের কোনো সাহিত্যেই তার তুলনা দুর্লভ। তাঁদের একখানি চিঠির নমুনা –
প্রেমিকা লিখছেন তাঁর প্রণয়ীকে :
প্রিয়তমে, আমাকে কি বলে সুখী করতে হয় তা তুমি জান। কি করলে যে আমি সুখী হই তা তুমি ভাব না – তুমি ভাব খালি কি কথা বললে আমি সুখী হই। আমি কিন্তু ওই দুটোর একটাও ভাবি না। আমি মাত্র এইটুক জানি যে তুমিই আমার সুখ – সুখই তুমি। আবার আমার জন্য় কি সুখ সৃষ্টি করবে? তুমি নিজেই যে সুখ – আনন্দ! আমি এ কথা ভেবেছি, কিন্তু বলতে পারি নি – তাই আজ তোমায় লিখে জানাচ্ছি – কারণ লেখাটা সহজ।
সুখের কথা বলছ? বলব? তবে প্রতিজ্ঞা কর যে তুমি রাগ করবে না। আমি যদি নিজেকে বড় করে দেখতাম – নিজেকে যদি স্বয়ং সম্পূর্ণ ভাবতাম তাহলে তো তোমায় সুখী করতে পারতাম না প্রিয়ে! যেহেতু তুমি আমার প্রিয়, যেহেতু তুমি আমার থেকে মহান, আমি নিজের সুখকে তো বড় করে দেখতে পারি না! তোমার প্রাণে ব্যথা আমি যে দিতে পারি না প্রাণাধিক! তোমার সুখেই আমার সুখ, আমি যদি তোমার জীবনে ভারস্বরূপ হই – তাতে তুমি যে ব্যথা পাবে তাতে কি আমি সুখী হতে পারি?
তুমি মিষ্টিমধুর কথায় আমায় আনন্দ দাও, আবার রূঢ় কথা বলে আমায় ভয় দেখাও – আমার মুখের হাসিটি কেড়ে নাও, আমি আতঙ্কে শিউরে উঠি – বেতস লতার মত আমার দেহখানি থর থর করে কেঁপে ওঠে।
আমি যে কি তা আমি জানি – তাই তুমি যখন আমায় জানতে চাও তখন আমার ভয় হয় পাছে তুমি নিরাশ ও অসন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যাও! আমি যে অতি ক্ষুদ্র – তোমার যোগ্য তো নই – তাই সর্বদাই আশঙ্কা পাছে তোমার মনোমত না হই। তোমাকে সুখী করতে পারব কি না – নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি – কোনো উত্তর পাই না।
আমার কোনো ক্ষমতাই নেই – কোনো ধন কোনো গুণ নেই যা দিয়ে তোমায় সুখী করতে পারি – কিন্তু আছে শুধু তোমায় ভালবাসবার শক্তি – তোমার প্রতি আমার প্রেমদানের ক্ষমতা। আমি তো আমার প্রেম নিঃশেষ করে তোমায় ঢেলে দিয়েছি – সেই আমার সুখ, সেই আমার গৌরব। যে কোনো নারী তোমায় ভালবাসতে পারে – কিন্তু আমি অহঙ্কার করে বলতে পারি যে আমার মত কেউ তোমায় ভালবাসতে পারে না – সে ক্ষমতা তাদের নেই। অনেকে হয়ত তোমাকে সফল প্রিয়ের প্রিয় করতে পারে কিন্তু আমার মত একমাত্র প্রিয় করতে পারে না। তাদের অনেক প্রিয়ের মধ্যে তুমি হবে প্রিয়তম – কিন্তু আমার কাছে তুমি সকল প্রিয়ের একমাত্র প্রতিনিধি; তারা সব প্রিয়কে চাইবে তারই মাঝে তোমায় চাইবে বেশী করে কিন্তু আমি তোমায় এমন ভাবে চাই যাতে তোমায় পেলেই সব পাওয়া হয়। তাদের কাছে তুমি সুখের রাজমুকুট, তুমি শ্রেষ্ঠ মহামূল্য, কিন্তু আমার কাছে তুমি সর্বস্ব, অমূল্য। তারা তোমায় দেখবে নক্ষত্র খচিত আকাশে শশিকলার মত – আর আমি দেখব পূর্ণচন্দ্রের মত।
যাক সে কথা। তোমার কথা জানতে গিয়ে নিজেই অহঙ্কার প্রকাশ করে ফেললাম। প্রতি পত্রেই তুমি কেমন আছ জানাও, কিন্তু এবার তো তা লেখ নি। কেন? সেদিন বৃষ্টিতে ভিজেছিলে কিনা জানালে না কেন? আজ বিদায় –
এলিজাবেথ
(FAQ) এলিজাবেথ ব্যারেটের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
একজন বিখ্যাত ইংরেজ কবি ও লেখক।
রবার্ট ব্রাউনিং।
ইংল্যান্ড।