উইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেমপত্র

বিখ্যাত নাট্যকার উইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে উইলিয়াম কনগ্রিভের পরিচিতি, উইলিয়াম কনগ্রিভের খ্যাতি, উইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেম, উইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেমিকা ও উইলিয়াম কনগ্রিভের মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।

নাট্যকার উইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেমপত্র

ঐতিহাসিক প্রেমপত্রউইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেমপত্র
দেশইংল্যান্ড
পরিচিতিনাট্যকার
সঙ্গীনীমিসেস আরাবেলা হান্ট, মিসেস হেনরিয়েটা-মার্লবরোর ডিউকের পত্নী
প্রেমিকামিসেস আরাবেলা
উইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেমপত্র

উইলিয়াম কনগ্রিভ ছিলেন ইংরেজ নাট্যকার। ড্রাইডেনের পরই ছিল তাঁর স্থান। তাঁর নাটকগুলির মধ্যে The way of the World, Love for Love এবং Old Bachelor এই তিন খানি নাটকই সমধিক প্রসিদ্ধ। তিনি নিজে যেমন ছিলেন সাহিত্যিক তেমনি শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকদের সঙ্গে তিনি মেলামেশা করতেন এবং সেই সঙ্গে মিশতেন সুন্দরী সমাজে। তাঁর সঙ্গীনীদের মধ্যে সুগায়িকা ও নটি মিসেস আরাবেলা হান্ট, মিসেস হেনরিয়েটা, মার্লবরোর ডিউকের পত্নী – এরাই ছিলেন প্রধানা।

মিসেস আরাবেলাকে একসময়ে তিনি লিখেছিলেন :

সুপ্রিয়াসু! তোমাকে যে ভালবাসি তা কি তোমার বিশ্বাস হয় না? এতখানি অবিশ্বাসী হবার ভান করা তোমার উচিত নয় কিন্তু? বেশ, আমার কথায় যদি তোমার বিশ্বাস না হয় তবে দেখ আমার দিকে চেয়ে – আমার চোখই আমার কথা তোমায় জানিয়ে দেবে। একবার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তোমার চোখের দিকে তাকাও বুঝতে পারবে – বুঝতে পারবে তোমার চোখে কি মোহ আছে। আমি আমার অন্তর দিয়ে তা বুঝতে পারি।

কাল রাত্রির কথা মনে কর, মনে কর সেই প্রেম-চুম্বন-সে ত ঈশ্বরের দান! সে আগ্রহ, সে ভয়ব্যাকুলতা – সেই স্বর্গীয় সুধার স্বাদ – সেই হৃদয়-গলানো চুম্বন। সে আবেগে আমার শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে উঠেছিল, সেই দুরু দুরু কম্পন ও প্রেমগুঞ্জন আমার সমস্ত সত্ত্বাকে বিচলিত করেছিল। সব যেন ঘুলিয়ে দিয়ে আমার মাঝে যে আলোড়ন এনেছিল সে কি সব বৃথা? তোমার ওষ্ঠাধরের সেই আঘাতে আমার হৃদয় ক্ষত বিক্ষত – আমার প্রাণশক্তি লুপ্তপ্রায়। আমিতো রোধ করতে পারি নি প্রিয়ে। কিন্তু তবু সে বড় মধুর চির আকাঙক্ষাময় বস্তু!

একদিনে কী না হতে পাবে? কাল রাতে আমার মনে হয়েছিল আমার মত সুখী বোধ হয় কেউ নেই – আমার কোনো অভাবই নেই। মনে হয়েছিল সবাই বুঝি আমারই মত সুখী! মনে হয়েছিল দূরে, বহুদূরে কেউ কোথাও নেই – কিছু নেই, শুধু আছি আমি আর তুমি। প্রেম সর্ব শক্তিমান – সে সব পাবে, এত লোকের আনাগোনা, বাহির বিশ্বের এত কোলাহল – সবই যেন নীবর মনে হয়েছিল – সকলের মাঝে আমি যেন একাকী!

তুমি ছাড়া অন্য কেউ আমার মনকে ধরে রাখতে পারে না। এ মনেও আর কারো ঠাঁই নেই – কেবল তোমার জন্যই খালি স্থান – তুমি ছাড়া আর কারো জন্য সে ভাবে না। মনে হয় সে কোন দেশে সুদূর জনমানবহীন মর্ত্যে বুঝি আমি একটি মাত্র সঙ্গী নিয়ে নির্বাসিত। কিন্তু সেখানে কোনো অভাব নেই, যা চাই তাই পাওয়া যায়। আচ্ছা, সত্যই যদি তা সম্ভব হত তাহলে তোমায় নিয়ে জীবনটা সানন্দে কাটিয়ে দিতাম।

আমার জীবন নাট্যের দৃশ্য যেন হঠাৎ বদলে গেছে। করুণ দৃশ্য! আমার চারিদিকে আজ শুষ্কতার বেড়াজাল – নীরস প্রেমহীন – সবই একসঙ্গে আজ তোমারই আশা পথ চেয়ে আছে। তোমার অভাবে সব অভাব। জগতের সৌন্দর্য যেন তোমাতেই রূপ পরিগ্রহ করেছে, সব সৌন্দর্য তোমাতেই লীন হয়ে আছে প্রাণেশ্বরী। তবু এ বড় মধুর – বড় আনন্দনয় মনের এই অবস্থা। এর কারণ তুমিই প্রেয়সী, আমার মন আজ স্থির, চিত্ত একাগ্র, একান্ত আগ্রহে তোমাতেই নিবদ্ধ। তুমি আজ একমাত্র ধ্যান-ধারণা-উপাস্য, তোমারই গুণ কীর্তনে আজ আমার আনন্দ। আমার যা কিছু ইহকাল-পরকাল, সম্পদ-বিপদ, আশা-আকাঙ্খা সবই আজ আমার তুমি।

তুমি – তুমি যদি আজ বিরূপ হও তবে আমার ভাগ্য চির-অন্ধকার – অনন্ত দুখ। বেদনা ও হতাশাতেই হবে এর পরিসমাপ্তি।

(FAQ) উইলিয়াম কনগ্রিভের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. উইলিয়াম কনগ্রিভ কে ছিলেন?

একজন বিখ্যাত ইংরেজ নাট্যকার।

২. উইলিয়াম কনগ্রিভের উল্লেখযোগ্য নাটকের নাম লেখ।

The way of the World, Love for Love এবং Old Bachelor.

৩. উইলিয়াম কনগ্রিভের সঙ্গিনী কারা ছিলেন?

মিসেস আরাবেলা হান্ট, মিসেস হেনরিয়েটা-মার্লবরোর ডিউকের পত্নী।

৪. উইলিয়াম কনগ্রিভ কাকে তার প্রেমপত্র প্রেরণ করেন?

মিসেস আরাবেলা হান্ট।

Leave a Comment