রম্পা বিদ্রোহ

রম্পা বিদ্রোহ -এর সময়কাল, স্থান, প্রধান নেতা, বিদ্রোহের কারণ হিসেবে মহাজনি শোষণ, ইংরেজ সরকারের আইন, বেগার খাটতে বাধ্য করা, বিদ্রোহ ঘোষণা, আল্লুরী সীতারাম রাজুর পরিচিতি, গান্ধীবাদী সীতারাম, সীতারামের প্রচার, গণ-বিদ্রোহ, বিদ্রোহের বিস্তার ও আল্লুরী সীতারাম রাজুর মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।

রম্পা বিদ্রোহ

ঐতিহাসিক ঘটনারম্পা বিদ্রোহ
সময়কাল১৯২২-২৪ খ্রিস্টাব্দ
স্থানঅন্ধ্রের গোদাবরী উপত্যকা
প্রধান নেতাআল্লুরী সীতারাম রাজু
ফলাফলব্যর্থতা
রম্পা বিদ্রোহ

ভূমিকা:- অসহযোগ আন্দোলন কালে অন্ধ্রের গোদাবরী উপত্যকায় বসবাসকারী রম্পা উপজাতিদের বিদ্রোহ (১৯২২-২৪ খ্রিঃ) সরকারকে যথেষ্ট বিব্রত করে।

রম্পা বিদ্রোহের কারণ

১৯২২-২৪ খ্রিস্টাব্দে রম্পা বিদ্রোহ সংঘটিত হওয়ার পিছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। যেমন –

(১) মহাজনি শোষণ

নানা ধরনের মহাজনি শোষণে জর্জরিত রম্পারা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুব্ধ ছিল। মহাজনশ্রেণী নানা অছিলায় তাদের জমিগুলি কেড়ে নেয় ও তাদের ঋণভারে জর্জরিত করে।

(২) ইংরেজ সরকারের আইন

ইংরেজ সরকার আইন করে রম্পা উপজাতিদের বন থেকে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ এবং বনে গোচরণ নিষিদ্ধ করে।

(৩) বেগার খাটতে বাধ্য করা

এই সময় ব্যাস্টিয়ান নামে জনৈক শ্বেতাঙ্গ প্রশাসক অরণ্য ও পার্বত্য অঞ্চলে রাস্তা তৈরির কাজে রম্পাদের বেগার খাটতে বাধ্য করে। তারা আপত্তি করলেও তাদের ওপর নানা অত্যাচার শুরু হয়।

রম্পা বিদ্রোহ ঘোষণা

এই সময় আল্লুরী সীতারাম রাজু নামে গান্ধী-অনুরাগী এক তরুণের নেতৃত্বে আদিবাসী রম্পারা ইংরেজের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

রম্পা বিদ্রোহের নেতা সীতারামের পরিচিতি

আল্লুরী সীতারাম রাজু কিন্তু কোনো আদিবাসী সন্তান ছিলেন না। ১৮৯৭ সালে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। তিনি সন্ন্যাসীর বেশে পাহাড়ে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেন।

গান্ধীবাদী সীতারাম

গোদাবরী উপত্যকার আদিবাসী রম্পাদের জীবনধারা তাকে ব্যথিত করে। তিনি তাদের সংগঠিত করেন। গান্ধীবাদী হয়েও তিনি মনে করতেন যে, সর্বদা অহিংসভাবে আন্দোলন পরিচালনা করা সম্ভব নয়।

সীতারামের প্রচার

তিনি নিজেকে দৈবী শক্তির অধিকারী বলে প্রচার করতেন এবং বলতেন যে, ইংরেজের আগ্নেয়াস্ত্র তাঁর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

গণ-বিদ্রোহ

আল্লুরী সীতারাম রাজুর ডাকে হাজার হাজার আদিবাসী কৃষক গণ সত্যাগ্রহ -এর সামিল হয়। ফলে অচিরেই তা রূপান্তরিত হয় গণ-বিদ্রোহে।

রম্পা বিদ্রোহের বিস্তার

২৫০০ মাইল এলাকা জুড়ে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চলতে থাকে।

সীতারামের মৃত্যু

অবশেষে ১৯২৪ সালের ৬ই মেসীতারাম রাজু ধরা পড়েন। কথিত আছে যে, তিনি নাকি পালাতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মারা যান। তার মৃত্যুর পর আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে।

উপসংহার:- সরকার বল্গাহীন নিষ্ঠুরতার পথ ধরে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় এবং সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই আন্দোলন স্তব্ধ হয়ে যায়। এই আন্দোলন দমন করতে মাদ্রাজ সরকারকে ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হয়।

(FAQ) রম্পা বিদ্রোহ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. রম্পা বিদ্রোহ কখন, কোথায় সংঘটিত হয়?

১৯২২-২৪ খ্রিস্টাব্দে, অন্ধ্রের গোদাবরী উপত্যকায়।

২. রম্পা বিদ্রোহের প্রধান নেতা কে ছিলেন?

আল্লুরী সীতারাম রাজু।

৩. কোন সর্বভারতীয় আন্দোলন কালে রম্পা বিদ্রোহ হয়?

অসহযোগ আন্দোলন।

Leave a Comment