তাজমহল

মোঘল সম্রাট শাহজাহান নির্মিত পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল -এর নির্মাণকাল, নির্মাণের প্রেক্ষাপট, স্থাপত্য শৈলী, প্রভাব, আভ্যন্তরীণ স্থাপত্য, ভিত্তি, গম্বুজ, চূড়া, মিনার, কারিগর, উপাদান সামগ্রি সম্পর্কে জানবো।

মোগল সম্রাট শাহজাহানের আমলে নির্মিত তাজমহল প্রসঙ্গে তাজমহল নির্মাণের সময়কাল, তাজমহলের নির্মাণকারী বা স্থপতি বা প্রকৌশলী, তাজমহলের স্থাপত্যশৈলী, তাজমহল নির্মাণের প্রেক্ষাপট, তাজমহলের প্রভাব, তাজমহলের বাগান, তাজমহলের আভ্যন্তরীণ স্থাপত্য, তাজমহলের ভিত্তি, তাজমহলের গম্বুজ, তাজমহলের চূড়া, তাজমহলের মিনার, তাজমহলের জমি, তাজমহল নির্মাণের কারিগর, তাজমহল নির্মাণের উপাদান সামগ্ৰী, তাজমহল নির্মাণের ব্যয়, তাজমহল সম্পর্কে ফরাসি পর্যটক বারনিয়ারের মন্তব্য, সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল, শান্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক তাজমহল, তাজমহলের বর্তমান সমস্যা।

সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল

ঐতিহাসিক নিদর্শনতাজমহল
নির্মাণকারীমোঘল সম্রাট শাহজাহান
নির্মাণকাল১৬৩২-১৬৫৩ খ্রিস্টাব্দ
অবস্থানউত্তর প্রদেশের আগ্রা শহরে
তাজমহল

ভূমিকা :- তাজমহল ভারত -এর উত্তর প্রদেশে আগ্রায় অবস্থিত একটি রাজকীয় সমাধি তথা প্রখ্যাত স্মৃতিসৌধ। পূর্ণিমার রাতে তাজমহলের সৌন্দর্য্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এ যেন কালের কপোল তলে একবিন্দু নয়নের জল – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

তাজমহল নির্মাণের সময়কাল

১৬৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে তাজমহলের মূল সমাধিটি সম্পূর্ণ হয়। তাজমহলের চারদিকে ইমারত ও বাগান তৈরি করতে আরও পাঁচ বছর সময় লেগেছিল।

তাজমহলের নির্মাণকারী

মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম যিনি ইতিহাসে মুমতাজ মহল নামে পরিচিত, তার স্মৃতির উদ্দেশে এই অপূর্ব সৌধটি নির্মাণ করেন।

তাজমহলের স্থাপত্য শৈলী

তাজমহলকে মুঘল স্থাপত্য শৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়। এর নির্মাণ শৈলীতে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে।

অখণ্ড স্থাপত্য তাজমহল

সাদা মার্বেলের গোম্বুজাকৃতি রাজকীয় সমাধিটি বেশি সমাদৃত হলেও তাজমহল আসলে সামগ্রিকভাবে একটি জটিল অখণ্ড স্থাপত্য।

তাজমহল নির্মাণের প্রেক্ষাপট

  • (১) ১৬৩১ খ্রিষ্টাব্দে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রী মুমতাজ মহল-এর মৃত্যুতে প্রচণ্ডভাবে শোকাহত হয়ে পড়েন। মুমতাজ মহল তখন তাদের চতুর্দশ কন্যা গৌহর বেগমের জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
  • (২) তাজমহলের নির্মাণ কাজ মুমতাজের মৃত্যুর পর শুরু হয়। মূল সমাধিটি সম্পূর্ণ হয় ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে এবং এর চারদিকের ইমারত এবং বাগান তৈরি করতে আরও পাঁচ বছর পার হয়ে যায়।

তাজমহলের প্রভাব

  • (১) তাজমহল তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী নকশার উপর, বিশেষ করে পারস্য ও মুঘল স্থাপত্য অনুসারে। নির্দিষ্ট কিছু নকশা তৈমুর ও মুঘল ইমারতের মত হুবহু করা হয়েছে।
  • (২) তৈমুরের গুর-ই-আমির, হুমায়ুন -এর মাজার, ইমাদ-উদ-দৌলার মাজার এবং দিল্লীতে শাহজাহানের নিজের তৈরি দিল্লী জামে মসজিদ প্রভৃতি ইমারতের প্রভাব রয়েছে তাজমহলে।
  • (৩) শাহজাহানের পৃষ্ঠপোষকতায় মুঘল ইমারত পরিমার্জনের এক নতুন স্তরে পৌঁছায়। তাঁর পূর্ববর্তী মুঘল ইমারতসমূহ তৈরি হয়েছিল লাল বেলে পাথরে। কিন্তু তিনি সাদা দামি মার্বেল পাথরের প্রচলন করেছিলেন।

তাজমহলের বাগান

  • (১) তাজমহলের সামনের এলাকায় একটি বড় চারবাগ (মুঘল বাগান পূর্বে চার অংশে বিভক্ত থাকত) করা হয়েছিল। ৩০০ মিটার X ৩০০ মিটার জায়গার বাগানের প্রতি চতুর্থাংশ উঁচু পথ ব্যবহার করে ভাগগুলোকে ১৬টি ফুলের বাগানে ভাগ করা হয়।
  • (২) মাজার অংশ এবং দরজার মাঝামাঝি অংশে এবং বাগানের মধ্যখানে একটি উঁচু মার্বেল পাথরে তৈরি জলের চৌবাচ্চা বসানো আছে এবং উত্তর-দক্ষিণে একটি সরলরৈখিক চৌবাচ্চা আছে যাতে তাজমহলের প্রতিফলন দেখা যায়।
  • (৩) চারবাগ বাগান ভারতে প্রথম করেছিলেন প্রথম মুঘল সম্রাট বাবর। তাজমহলে অন্যগুলোর থেকে এই বাগান আলাদা কারণ এর মাজার অংশটি বাগানের একপ্রান্তে অবস্থিত।
  • (৪) যমুনা নদীর অপর প্রান্তে নতুন আবিষ্কৃত মাহতাব বাগ অন্যরকম তথ্যের আভাস দেয়, যমুনা নদীটি বাগানের নকশায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যাতে তা স্বর্গের নদী হিসেবে অর্থবহ হয়।
  • (৫) বাগানের বিন্যাস এবং এর স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ ঝরনা, ইট অথবা মার্বেলের রাস্তা এবং জ্যামিতিক ইটের রেখার ফুলের বিছানা একেবারে সালিমারের মতো। আর এর নকশা করেছেন প্রকৌশলী আলি মারদান।
  • (৬) পরবর্তীকালে বাগানের গোলাপ, ড্যাফোডিল, বিভিন্ন ফুলের গাছসহ অন্যান্য গাছগাছালির অতি প্রাচুর্যের কথা জানা যায়।

আগ্রার তাজমহলের অভ্যন্তরীণ স্থাপত্য

  • (১) তাজমহলের চত্বরটি বেলে পাথরের দুর্গের মতো দেওয়াল দিয়ে তিন দিক থেকে বেষ্টিত। নদীর দিকের পাশটিতে কোনো দেওয়াল নেই।
  • (২) দেওয়ালবেষ্টনির বাইরে শাহজাহানের অন্য স্ত্রীদের সমাধি এবং মুমতাজের প্রিয় পরিচারিকাদের একটি বড়ো সমাধি আছে।
  • (৩) এই সব স্থাপত্য প্রধানত লাল বেলে পাথর দ্বারা তৈরি। আর দেখতে সেই সময়কার ছোটো আকারের মুঘল সাধারণ সমাধির মত।
  • (৪) ভিতরের দিকে দেওয়ালগুলো স্তম্ভ এবং ছাদ-সংবলিত। দেয়ালগুলো বিচিত্র গম্বুজাকৃতির ইমারত দিয়ে সংযুক্ত, যা থেকে বেশ কিছু জায়গা নজরে আসে, যা পর্যবেক্ষণ চৌকি হিসেবে ব্যবহার করা হত। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
  • (৫) তাজমহলে ঢোকার প্রধান ফটক বা দরজাও তৈরি হয়েছে মার্বেল পাথরে। দরজাটির নকশা ও ধরন মুঘল সম্রাটদের স্থাপত্যের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এর ছাদে অন্যান্য বেলে পাথরের ইমারতের মতোই সুন্দর সুন্দর জ্যামিতিক আকৃতির নকশা করা আছে।
  • (৬) চত্বরের একেবারে শেষে বেলেপাথরের দু’টো বিশাল ইমারত আছে, যার সমাধির দিকের অংশ খোলা। এদের পিছন ভাগ পূর্ব ও পশ্চিম দিকের দেওয়ালের সমান্তরাল।
  • (৭) দু’টো ইমারত যেন একটা আরেকটির প্রতিচ্ছবি। পূর্ব দিকের ইমারতটি মসজিদ। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারসাম্য রক্ষা করা। এটি মুঘল আমলে মেহমানদের থাকার জন্য ব্যবহৃত হত।
  • (৮) জাওয়াব আলাদা শুধু এর মেহরাম নেই আর এর মেঝে নকশা করা যেখানে মসজিদের মেঝেতে ৫৬৯ জনের নামাজ পড়ার জন্য কালো পাথর দিয়ে দাগ কাটা।

তাজমহলের ভিত্তি

  • (১) তাজমহলের মূলে হল তার সাদা মার্বেল পাথরের সমাধি। ভিত্তি কাঠামোটি বিশাল এবং কয়েক কক্ষবিশিষ্ট। প্রধান কক্ষটিতে মুমতাজ মহল ও শাহজাহানের স্মৃতিফলক বসানো হয়েছে, তাদের কবর রয়েছে এক স্তর নিচে।
  • (২) এর নকশা সম্পূর্ণভাবে প্রতিসম এবং ইমারতের প্রতিটি দিকেই একই রকম। চারটি মিনার রয়েছে, ভিত্তির প্রতিটি কোণায় একটি করে মিনার, ভাঙা কোণার দিকে মুখ করে আছে।

তাজমহলের গম্বুজ

  • (১) সমাধির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল সমাধির উপরের মার্বেল পাথরের গম্বুজ। এর আকার প্রায় ইমারতের ভিত্তির আকারের সমান, যা প্রায় ৩৫ মিটার।
  • (২) আকৃতি অনুসারে এই গম্বুজকে কখনো পেয়াজ গম্বুজ অথবা পেয়ারা গম্বুজ বলেও ডাকা হয়। একটি পদ্মফুল দিয়ে গম্বুজের উপরের দিক সাজানো হয়েছে, যা তার উচ্চতাকে আরও দৃষ্টি গোচর করে।
  • (৩) গম্বুজের উপরে একটি পুরনো সম্ভবত তামা বা কাসার দণ্ড রয়েছে যাতে পারস্যদেশীয় ও হিন্দু ঐতিহ্যবাহী অলঙ্করণ রয়েছে।
  • (৪) বড় গম্বুজটির চার কোণায় আরও চারটি ছোট গম্বুজ আছে। ছোট গম্বুজগুলোও দেখতে বড় গম্বুজটির মতই। ছোট গম্বুজগুলোতেও কাসা বা তামার পুরনো দণ্ড আছে।
  • (৫) লম্বা মোচাকার চূড়া বা গুলদস্তা ভিত্তি দেওয়ালের পাশ দিয়ে উপরে উঠেছে এবং গম্বুজের উচ্চতায় দৃষ্টিগোচর হয়। পদ্মফুল ছোট গম্বুজ ও গুলদাস্তাতেও আছে।

স্মৃতিসৌধ তাজমহলের চূড়া

  • (১) বড় গম্বুজের উপর মুকুটের মত একটি পুরনো মোচাকার চূড়া আছে। চূড়াটি প্রথমে স্বর্ণের নির্মিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে এটি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি। এই চূড়াটিই পারস্যদেশীয় এবং হিন্দুদের শোভাবর্ধক উপাদানের মিলনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
  • (২) চূড়ার উপরের অংশে একটি চাঁদ আছে, যা ইসলামিক উপাদান, এবং চূড়ার শিং আছে স্বর্গ বা বেহেস্তের দিকে মুখ করে।
  • (৩) বড় গম্বুজের উপর চূড়ার চাঁদ এবং শিং মিলে একটি ঐতিহ্যবাহী চিহ্নের আকার ধারণ করে, যা হিন্দু দেবতা শিব এর চিহ্নের মত।

তাজমহলের মিনার

  • (১) মিনারগুলোর মূল বেদিকার কোণাগুলিতে আছে চারটি বড় চৌকি যাদের প্রতিটির উচ্চতা ৪০ মিটারেরও বেশি।
  • (২) চৌকিগুলো নকশা করা হয়েছে প্রথাগত মিনারের নকশায়। প্রতিটি মিনারেরই দুটি বারান্দা দিয়ে তিনটি সমান উচ্চতায় ভাগ করা হয়েছে।
  • (৩) মিনারের একেবারে উপরে শেষ বারান্দা আছে যার উপরে সমাধির ছাতাগুলোর একই রকম একটি ছাতা আছে।
  • (৪) প্রতিটি মিনারই বেদিকার থেকে বাইরের দিকে কিছুটা হেলানো আছে যাতে মিনার কখনও ভেঙ্গে পড়লেও যেন তা মূল সমাধির উপরে না পড়ে।

তাজমহলের জমি

আগ্রা শহরের দক্ষিণ অংশের একটি জমিতে তাজমহল তৈরি করা হয়েছিল, যার মালিক ছিলেন মহারাজা জয় সিংহ। শাহজাহান তাকে আগ্রার একটি বিশাল প্রাসাদ দেওয়ার বদলে জমিটি নেন।

তাজমহল নির্মাণের কারিগর

সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল কোনো একজন ব্যক্তির দ্বারা নকশা করা নয়। এই ধরনের প্রকল্পে অনেক প্রতিভাধর লোকের প্রয়োজন।

  • (১) পারস্যদেশীয় স্থপতি ওস্তাদ ঈসা চত্বরের নকশা করার বিশেষ ভূমিকায় তার নাম পাওয়া যায়।
  • (২) বড় গম্বুজটির নকশা করেছিলেন অটোমান সাম্রাজ্য থেকে আসা ইসমাইল খান, যাকে সেই যুগের একজন প্রধান গম্বুজ নির্মাতা মনে করা হয়।
  • (৩) লাহোরের বাসিন্দা কাজিম খাঁন বড় গম্বুজের চূড়ায় যে স্বর্ণের দণ্ডটি তৈরি করেছিলেন।
  • (৪) দিল্লী থেকে আগত একজন পাথর খোদাইকারক চিরঞ্জিলাল প্রধান ভাস্কর ও মোজাইকারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
  • (৫) প্রধান চারুলিপিকর পারস্যের আমানত খানের নাম তাজমহলের প্রবেশপথের দরজায় প্রত্যায়িত করা আছে।
  • (৬) রাজমিস্ত্রিদের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন মহম্মদ হানিফ।
  • (৭) ইরান থেকে আগত মীর আব্দুল করিম এবং মুক্কারিমাত খাঁন ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক দিকগুলো সামাল দিতেন।

তাজমহল নির্মাণের উপাদান সামগ্রী

আগ্রার তাজমহল তৈরি হয়েছে সারা এশিয়া থেকে আনা বিভিন্ন উপাদান সামগ্রী দিয়ে।

  • (১) নির্মাণ কাজের সময় ১০০০ এরও বেশি হাতি ব্যবহার করা হয়েছিল নির্মাণ সামগ্রী বহন করে আনার জন্য।
  • (২) আলো-প্রবাহী অস্বচ্ছ সাদা মার্বেল পাথর আনা হয়েছিল রাজস্থান থেকে, ইয়াশ্‌ব্‌- লাল, হলুদ বা বাদামী রঙের মধ্যম মানের পাথর আনা হয়েছেল পাঞ্জাব থেকে।
  • (৩) চীন থেকে আনা হয়েছিল ইয়াশ্‌ম্‌- কঠিন, সাদা, সবুজ পাথর, স্ফটিক টুকরো। তিব্বত থেকে বৈদূর্য সবুজ-নীলাভ রঙের রত্ন এবং আফগানিস্তান থেকে নীলকান্তমণি আনা হয়েছিল।
  • (৪) নীলমণি- উজ্জ্বল নীল রত্ন এসেছিল শ্রীলঙ্কা এবং রক্তিমাভাব খয়েরি বা সাদা রঙের মূল্যবান পাথর এসেছিল আরব থেকে।

তাজমহল নির্মাণের খরচ

সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল নির্মাণে খরচ হিসেব করা কঠিন ও সমস্যার ব্যাপার। তাজমহল নির্মাণে তৎকালীন আনুমানিক ৩২ মিলিয়ন রুপি খরচ হয়েছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু শ্রমিকের খরচ, নির্মাণকাল এবং ভিন্ন অর্থনৈতিক যুগের কারণে একে অমূল্য বলা হয়।

তাজমহল সম্পর্কে ফরাসি পর্যটক বারনিয়ারের বর্ণনা

১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে আগ্রা ভ্রমণ করে ফ্রান্স -এর পর্যটক ফ্রান্সিস বারনিয়ার (François Bernier) লিখছেন যে,

“I shall finish this letter with a description of the two wonderful mausoleums which constitute the chief superiority of Agra over Delhi. One was erected by Jehanguyre in honor of his father Ekbar; and ChahJehan raised the other to the memory of his wife Tage Mehale, that extraordinary and celebrated beauty, of whom her husband was so enamoured it is said that he was constant to her during life, and at her death was so affected as nearly to follow her to the grave.

সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল

বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম হল তাজমহল। তখন একে বলা হয়েছিল ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের সর্বজনীন প্রশংসিত শ্রেষ্ঠকর্ম।’

তাজমহলের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি

১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তাজমহলকে তালিকাভুক্ত করা হয়।

শান্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক তাজমহল

বিশ্বের অপূর্ব সুন্দর স্মৃতিসৌধ ও মনোমুগ্ধকর নিদর্শন তাজমহল। ভালোবাসার অবিশ্বাস্য স্মরণীয় ভাস্কর্য এবং ইসলামিক স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন, যা শান্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক।

তাজমহলের বর্তমান সমস্যা

তাজমহল সম্প্রতি যে হুমকির মুখে পড়েছে তা হল যমুনা নদীর তীরের পরিবেশ দূষণ এবং মথুরা শহরের তেল পরিশোধনাগারের কারণে সৃষ্ট এসিড বৃষ্টি।

উপসংহার :- নির্মাণের পর থেকেই তাজমহল বহু পর্যটককে আকর্ষিত করেছে। পর্যটকদের জন্য সরাইখানা ও বাজার তৈরি করা হয়েছে যাতে পর্যটক এবং কারিগরদের চাহিদা পূরণ হয়। বর্তমানে তাজমহলে ২ থেকে ৩ মিলিয়ন পর্যটক আসে যার মধ্যে ২০০০০০ পর্যটক বিদেশি। ফলশ্রুতিতে তাজমহল ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

(FAQ) তাজমহল সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. তাজমহল কোন পাথরে নির্মিত হয়?

সাদা মার্বেল পাথরে।

২. তাজমহল নির্মাণে কত টাকা খরচ হয়েছিল?

তৎকালীন আনুমানিক ৩২ মিলিয়ন রুপি।

৩. তাজমহল নির্মাণে কত বছর লেগেছিল?

প্রায় ২২ বছর।

৪. কোন সম্রাট তাজমহল নির্মাণ করান?

মোঘল সম্রাট শাহজাহান।

৫. তাজমহলের মূল নকশা কে তৈরি করেন?

ওস্তাদ আহমেদ লাহোরি মতান্তরে ওস্তাদ ঈশা।

Leave a Comment