শাহজাহানের রাজ্য বিস্তার নীতি

শাহজাহানের রাজ্য বিস্তার নীতি প্রসঙ্গে খান্দেশ জয়, বালুচ উপজাতিদের দমন, গোণ্ড উপজাতীয় রাজার বশ্যতা স্বীকার, গাড়োয়াল রাজ্যের বশ্যতা স্বীকার, শাহজাহানের সময় কামরূপ, হাজো অবরোধ ও কামরূপে মোঘল আধিপত্য সম্পর্কে জানবো।

শাহজাহানের রাজ্য বিস্তার নীতি

ঐতিহাসিক ঘটনাশাহজাহানের রাজ্য বিস্তার নীতি
সম্রাটশাহজাহান
খান্দেশবাহারজি
সিন্ধু প্রদেশবালুচ উপজাতি
কামরূপবালি নারায়ণ
শাহজাহানের রাজ্য বিস্তার নীতি

ভূমিকা :- পিতামহ আকবর-এর নীতি অনুসরণ করে শাহজাহান মুঘল সাম্রাজ্য-এর সীমান্তে অবস্থিত রাজ্যগুলিকে গ্রাস করার নীতি নেন।

রাজ্য বিস্তার সম্পর্কে শাহজাহানের যুক্তি

এই বিষয়ে শাহজাহানের যুক্তি ছিল যে, মুঘলের আলোকিত শাসনে এলে এই সকল রাজ্যের লোকের উপকার হবে।

শাহজাহানের খান্দেশ জয়

সুরাট থেকে বুরহানপুর সড়কের ধারে অবস্থিত রাজপুত রাজ্য বাগলানা, স্থানীয় রাজা বাহারজিকে পদচ্যুত করে তিনি খান্দেশ সুবার অন্তর্ভুক্ত করেন। বাহারজির পুত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

শাহজাহান কর্তৃক বালুচ উপজাতিরদের দমন

সিন্ধু প্রদেশের অন্তর্গত পশুচারণকারী বালুচ উপজাতিদের দমন করে তিনি তার সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। সিন্ধু প্রদেশের বাণিজ্য এর ফলে সুরক্ষিত হয়।

শাহজাহানের নিকট গোণ্ড উপজাতীয় রাজার বশ্যতা স্বীকার

বুন্দেলখণ্ডে ও ওরচা রাজ্যে জুঝর সিংহের বিদ্রোহ দমন ও ওরচা অধিকারের পর মুঘল বাহিনী প্রতিবেশী গোণ্ড অঞ্চলের উপজাতীয় রাজাকে বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করে। গোণ্ড উপজাতীয় রাজা ২০টি হাতি উপঢৌকন দিতে ও বছরে ৮০ হাজার টাকা নজরানা দিতে অঙ্গীকার করেন।

শাহজাহানের নিকট গাড়োয়াল রাজ্যের বশ্যতা স্বীকার

এরপর শাহজাহান হিমাচল প্রদেশের গাড়োয়াল রাজ্য আক্রমণ করেন। প্রথম যুদ্ধে মুঘল সেনা পরাজিত হলেও, পালটা আক্রমণে মুঘল কামানের গোলায় গাড়োয়াল রাজধানী ক্ষতিগ্রস্থ হলে গাড়োয়াল রাজ বশ্যতা স্বীকার করেন।

শাহজাহানের বালটিস্থান আক্রমণ

এরপর শাহজাহান কাশ্মীরের উত্তরে বালটিস্থান আক্রমণ করেন। প্রথম অভিযান বিফল হলে, মুঘল সেনাপতি জাফর খান দ্বিতীয় অভিযান দ্বারা বালটিস্থানের সুলতান আবদলকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ও শাহজাহানের নামে খুৎবা পাঠ করতে বাধ্য করেন।

শাহজাহানের সময় কামরূপ

শাহজাহান যখন সিংহাসনে বসেন তখন পূর্ব ভারতে মুঘল সীমান্ত ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সীমান্ত বরাবর অবস্থিত ছিল। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা বা কামরূপে ভূতপূর্ব রাজার ভাইপো বালি নারায়ণ ব্রহ্মপুত্র পূর্ব অঞ্চল বা কামরূপে রাজত্ব করতেন।

শাহজাহানের সময় হাজো অবরোধ

কামরূপের পূর্ব দিকে আহোম রাজারা রাজত্ব করতেন। ১৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে বালিনারায়ণ মুঘলের বিরুদ্ধতা করায় তিনি ও আহোম রাজ পূর্বসীমান্তে মুঘল শাসনকেন্দ্র হাজো অবরোধ করেন।

শাহজাহানের সময় কামরূপে মুঘল আধিপত্য

মুঘল সেনাপতি ১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে বরপেটার স্থল ও জলযুদ্ধে বালি নারায়ণ ও আহোম রাজাকে পরাস্ত করে। আহোম রাজা নতুন সেনাদল দ্বারা প্রতিরোধ করায় শেষ পর্যন্ত এক সন্ধি দ্বারা কামরূপের ওপর মুঘল আধিপত্য আহোমরাজ স্বীকার করেন। আহোম রাজার স্বাধীনতা শাহজাহান মেনে নেন।

উপসংহার :- শাহজাহানের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি দাক্ষিণাত্যে এবং মধ্য এশিয়ায় বিশেষভাবে প্রত্যক্ষ করা যায়।

(FAQ) শাহজাহানের রাজ্য বিস্তার নীতি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. শাহজাহানের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতি বিশেষ ভাবে প্রত্যক্ষ করা যায় কোথায়?

দাক্ষিণাত্যে।

২. সিন্ধু প্রদেশের পশুচারণকারী উপজাতির নাম কি ছিল?

বালুচ উপজাতি।

৩. মুঘল সেনাপতি আহোম রাজাকে পরাজিত করে কখন?

১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে।

৪. শাহজাহানের সময় কামরূপে রাজত্ব করতেন কে?

বালি নারায়ণ।

Leave a Comment