মহাবিদ্রোহের ফলাফল (Results of the Great Revolt)

মহাবিদ্রোহের ফলাফল (Results of the Great Revolt) হিসেবে কোম্পানির শাসনের অবসান, শাসনতান্ত্রিক পুনর্গঠন, ভারত শাসন আইন পাস, ভারত সচিব নিয়োগ, প্রতিক্রিয়াশীল শাসন ব্যবস্থা, পরিষদ গঠন, সামরিক বিভাগে পরিবর্তন, মহারানীর ঘোষণা পত্র সম্পর্কে জানবো।

মহাবিদ্রোহের ফলাফল প্রসঙ্গে ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের ফলাফল, সিপাহী বিদ্রোহের ফলাফল, মহাবিদ্রোহের গুরুত্ব, মহারানীর ঘোষণাপত্র, মহাবিদ্রোহের ফলাফল স্বরূপ কোম্পানির শাসনের অবসান, মহাবিদ্রোহের ফলাফল স্বরূপ শাসনতান্ত্রিক পুনর্গঠন, মহাবিদ্রোহের ফলাফল স্বরূপ সামরিক বিভাগে পরিবর্তন, মহাবিদ্রোহের ফলাফল স্বরূপ দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে নীতি, ভারত শাসন আইন ও মহাবিদ্রোহের পর ভারতের শাসন ভার গ্ৰহণ।

১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের ফলাফল (Results of the Great Revolt of 1857)

ঐতিহাসিক ঘটনামহাবিদ্রোহের ফলাফল
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ
মহারাণীর ঘোষণা পত্র  প্রকাশ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের, ১ নভেম্বর
ভারতের প্রথম ভাইসরয়লর্ড ক্যানিং
ভারত সম্রাজ্ঞী ভিক্টোরিয়া১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দ
মহাবিদ্রোহের ফলাফল

ভূমিকা :- ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ভারত ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। স্যার লেপেল গ্লিফিন-এর মতে,মহাবিদ্রোহ ভারতীয় আকাশ থেকে বহু মেঘ দূরে সরিয়ে দেয়। তাঁর মতে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ অপেক্ষা কোনও মঙ্গলজনক ঘটনা ইতিপূর্বে ভারত ইতিহাসে সংঘটিত হয় নি।

পানিক্করের অভিমত

ডঃ কে. এন. পানিক্কর বলেন যে, “কোনও ঐতিহাসিক ঘটনার গুরুত্ব যদি আশু সাফল্যের নিরিখে বিচার করা না হয়, তাহলে ১৮৫৭-র বিদ্রোহ নিছক একটি ট্রাজেডি নয়। মহাবিদ্রোহ -এর ব্যর্থতা সত্ত্বেও তা এক মহান উদ্দেশ্য সাধন করেছে।”

নেহেরুর অভিমত

পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু বলেন যে, যদিও এই বিদ্রোহ প্রত্যক্ষভাবে দেশের কিছু অংশকে প্রভাবিত করেছিল মাত্র, তবুও এই বিদ্রোহ সারা ভারতকে বিশেষত ব্রিটিশ প্রশাসনকে কাঁপিয়ে তুলেছিল।

মহাবিদ্রোহের ফলাফল (Results of the Great Revolt)

ভারত ইতিহাসে এই বিদ্রোহের ফলাফল ছিল সুদূর প্রসারী। ভারতীয় রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির ওপর এর প্রভাব ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ।

(ক) কোম্পানির শাসনের অবসান

  • (১) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের ফলে ইংল্যান্ড -এর রাজনৈতিক মহলে এই ধারণাই সুদৃঢ় হয় যে, একটি বাণিজ্যিক সংগঠনের হাতে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ভারতের মতো একটি বিশাল দেশের শাসনভার অর্পণ করা অযৌক্তিক।
  • (২) এই কারণে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২রা আগস্ট ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ‘ভারত শাসন আইন’পাশ করে। এই আইনের মাধ্যমে ভারতে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে এবং ভারতের শাসনভার ব্রিটিশ সরকার বা ইংল্যাণ্ডেশ্বরী মহারানি ভিক্টোরিয়ার হস্তে অর্পণ করা হয়।
  • (৩) রানির প্রতিনিধি হিসেবে গভর্নর জেনারেল ভারতীয় শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করতে থাকেন এবং তিনি ‘ভাইসরয়’ উপাধিতে ভূষিত হন।
  • (৪) ভারতে কোম্পানির শাসনের অবসান কোনও আকস্মিক ঘটনা নয়। ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দের রেগুলেটিং অ্যাক্ট, পিটের ভারত শাসন আইন এবং পরবর্তীকালে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন, ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন দ্বারা কোম্পানির হাত থেকে ধীরে ধীরে ক্ষমতা কেড়ে নেবার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়, ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন তারই চূড়ান্ত পরিণতি।
  • (৫)অর্থাৎ ভারতে কোম্পানির শাসনের অবসান কোনও আকস্মিক ঘটনা নয় বা মহাবিদ্রোহ-ই ভারতে কোম্পানির শাসন অবসানের একমাত্র কারণ নয়।

(খ) শাসনতান্ত্রিক পুনর্গঠন

মহাবিদ্রোহের ফলে ভারতে কেবলমাত্র কোম্পানির শাসনের অবসানই হয় নি ভারতীয় শাসন-ব্যবস্থায় বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন ঘটে।

(১) ভারত শাসন আইন পাস

১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের যে আইন দ্বারা ভারতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়, তার নাম ছিল ‘ভারতে উন্নত ধরনের শাসন প্রবর্তনের আইন’ (‘Act for better Government in India)।

(২) ডিরেক্টর সভা ও বোর্ড অফ কন্ট্রোলের ক্ষমতা লোপ

বিদ্রোহের পূর্বে ভারত শাসন সম্পর্কিত সকল বিষয়ে কোম্পানির ‘ডিরেক্টর সভা’ ও ‘বোর্ড অফ কন্ট্রোল’-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নতুন আইন অনুসারে এই দুই সংগঠনের সকল কর্তৃত্ব ‘ও ক্ষমতা বিলুপ্ত করা হয়।

(৩) ভারত সচিব নিয়োগ

এই সংগঠন দু’টি যে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব ভোগ করত তা ‘ভারত সচিব’ বা ‘সেক্রেটারি অফ স্টেটস্ ফর ইন্ডিয়া’ নামক জনৈক পদাধিকারীর ওপর অর্পিত হয়।

(৪) ইন্ডিয়া কাউন্সিল গঠন

ইংল্যাণ্ডের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্য থেকেই ‘ভারত সচিব’ নিযুক্ত হতেন এবং তাঁর কাজের জন্য তিনি পার্লামেন্টের কাছে দায়ী থাকতেন। ভারত সচিবকে সাহায্যের জন্য আরও পনেরো জন সদস্যকে নিয়ে একটি সভা গঠিত হয়, যার নাম ‘ইন্ডিয়া কাউন্সিল’।

(৫) ভারত সচিব সর্বেসর্বা

এই আইন দ্বারা ভারত শাসন ব্যাপারে ‘ভারত সচিব-ই সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন। আইনত তিনি পার্লামেন্টের কাছে দায়ী থাকলেও, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারত সম্পর্কে উদাসীন ছিল।

(৬) ইন্ডিয়া কাউন্সিলের ক্ষমতা

ভারত সচিবকে পরামর্শদানের জন্য গঠিত ‘ইন্ডিয়া কাউন্সিল’-এর পরামর্শ গ্রহণ করা বা না-করা সম্পূর্ণভাবে ভারত সচিবের ইচ্ছাধীন ছিল।

(৭) ইংল্যাণ্ড ও ভারতের মধ্যে দুরত্ব হ্রাস

পূর্বে ভারতে শাসন-নীতি নির্ধারণে গভর্নর জেনারেলদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, কিন্তু ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে সুয়েজ খাল খননের ফলে ইংল্যাণ্ড ও ভারতের মধ্যে দূরত্ব অনেক হ্রাস পায়।

(৮) গভর্নর জেনারেল ভারত সচিবের মুখাপেক্ষী

১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে ভারত ও ইংল্যাণ্ডের মধ্যে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা গড়ে উঠলে গভর্নর জেনারেল প্রতিটি সিদ্ধান্তের জন্য ভারত সচিবের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েন।

(৯) প্রতিক্রিয়াশীল শাসন ব্যবস্থা

সুতরাং এর ফলেভারতীয় শাসননীতিতে ব্রিটিশ শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও ব্যাঙ্ক মালিকদের প্রভাব ক্রমবর্ধমানহয়ে ওঠে। এর স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে ভারতীয় শাসনব্যবস্থা পূর্বের তুলনায় অধিকতর প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।

(১০) ভারতীয়দের মতামত গ্ৰহণের ব্যবস্থা অনুপস্থিত

মহাবিদ্রোহের বা সিপাহী বিদ্রোহের কারণ হিসেবে অনেকে শাসক ও শাসিতের মধ্যে যোগাযোগের অভাবেরকথা বলে থাকেন। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের আইনে শাসনকার্যে ভারতীয়দের মতামত গ্রহণ বা ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগের কোনও ব্যবস্থা ছিল না।

(১১) ১৮৬১ -এর ভারত শাসন আইন পাস

এই সব নানা অসুবিধা দূর করার উদ্দেশ্যে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ‘ভারত শাসন আইন’ পাশ করা হয়। এই আইন অনুসারে বড়লাট বা ভাইসরয়ের আইন পরিষদ বা কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভায় ৬ থেকে ১২ জন সদস্য রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

(১২) সদস্য নির্বাচন

স্থির হয় যে, এই সব সদস্যদের মধ্যে অর্ধেক হবেন বেসরকারি সদস্য। বেসরকারি সদস্য বলতে বেসরকারি ইংরেজ ও ভারতীয় উভয় ধরনের সদস্যদেরই বোঝানো হত।

(১৩) পরিষদ গঠন

বাংলা, মাদ্রাজ ও বোম্বাই প্রভৃতি প্রদেশগুলিতেও কেন্দ্রের অনুরূপ ব্যবস্থা পরিষদ গঠিত হয় এবং এগুলিতে বেসরকারি অর্থাৎ ইংরেজ ও ভারতীয় সদস্যের সংখ্যা ছিল ৪ থেকে ৮ জন। ভারত সচিব স্যার চার্লস উড বলেন যে, এই ব্যবস্থা ‘এ দেশীয় উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের আমাদের শাসন মেনে নিতে সাহায্য করবে’।

(১৪) দুর্বল প্রাদেশিক পরিষদ

কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা পরিষদ বা প্রাদেশিক ব্যবস্থা পরিষদ পার্লামেন্টের মতো কোনও শক্তিশালী সংস্থা ছিল না। এটাকে বড় জোর একটি পরামর্শদাতা সভা বলা যেতে পারে এবং এখানে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোচনাও হত না।

(১৫) রাজস্বের বিভাজন

পূর্বে অর্থসংক্রান্ত ব্যাপারে প্রাদেশিক সরকারগুলির কোনও ক্ষমতা ছিল না। ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে লর্ড লিটন ভূমিরাজস্ব, আবগারি, সাধারণ প্রশাসন, আইন ও বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ব্যয়ের দায়িত্বও প্রদেশগুলির ওপর অর্পণ করেন।

(১৬) স্থানীয় স্বায়ত শাসন

স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের বিকাশ এই সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।মহাবিদ্রোহের পরবর্তীকালে কেন্দ্র ও প্রদেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণের নীতি গৃহীত হলে প্রাদেশিক সরকারগুলির পক্ষে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন খাতে অর্থ ব্যয় করা সম্ভবপর হয়। রিপন প্রবর্তিত স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা মোটামুটিভাবে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কার্যকরী ছিল।

(১৭) ভারতে ব্রিটিশ পুঁজির অনুপ্রবেশের ব্যাপকতা

১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনের বলে ভারতে কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যাধিকার বন্ধ হয় এবং এর ফলে ভারত ইংল্যাণ্ডের অন্যান্য বণিকদের কাছে উন্মুক্ত হয়। ভারতে অধিক পরিমাণে ব্রিটিশ পুঁজির অনুপ্রবেশ ঘটতে থাকে এবং ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের পর তা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।

(গ) সামরিক বিভাগে পরিবর্তন

বিদ্রোহের ফলশ্রুতি হিসেবে সেনাবাহিনীতেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটানো হয়। সেনাবাহিনীতে ব্রিটিশ সৈন্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। ভারতীয় ও ব্রিটিশ সৈন্য সংখ্যার মধ্যে তারতম্য হ্রাস করা হয়।

(ঘ) মহারানির ঘোষণাপত্র

১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর মহারানি ভিক্টোরিয়া এক ঘোষণাপত্র মারফৎ ভারতের শাসনভার গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন এবং ভারতীয় শাসনব্যবস্থায় নতুন নীতি ও আদর্শের কথা ঘোষণা করে জনসাধারণকে আশ্বস্ত করেন। এই ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে,

  • (১) ভারতবাসীর ধর্মীয় ও সামাজিক কোনও ব্যাপারেই সরকার কোনও প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না।
  • (২) প্রত্যেক ভারতবাসী ধর্মীয়স্বাধীনতা ভোগ করবে।
  • (৩) জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যোগ্যতাসম্পন্ন সকল ভারতবাসীই সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত হতে পারবে।
  • (৪) স্বত্ববিলোপ নীতি পরিত্যক্ত হয়।
  • (৫) দেশীয় রাজন্যবর্গকে দত্তক গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়।
  • (৬) বলা হয় যে,সরকার ভারতে আর সাম্রাজ্য বিস্তারে আগ্রহী নয়।
  • (৭) দেশীয় রাজ্যগুলিকে আশ্বস্ত করা হয় যে, কোম্পানির সঙ্গে স্বাক্ষরিত তাদের সব চুক্তি ও সন্ধিগুলিকে মেনে চলা হবে।

(ঙ) দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে নীতি

মহাবিদ্রোহের পূর্বে দেশীয় রাজ্যগুলি গ্রাস করাই ছিল ইংরেজ সরকারের নীতি, কিন্তু মহাবিদ্রোহের পর মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্রে সম্পূর্ণ এক ভিন্ন নীতি ঘোষণা করা হয়।

(১) বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন

মহাবিদ্রোহ -এর পর আগামী দিনে প্রজা বিদ্রোহের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই সরকার দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে বন্ধুত্বের নীতি গ্রহণ করে। এক কথায়, এই পর্বে ব্রিটিশ সরকারের উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের স্তম্ভে পরিণত করা।

(২) অধীনস্থ মিত্র

১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের পর একদিকে অধীনস্থ মিত্র দেশীয় রাজ্যগুলিকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে, রাজ্যগুলি জয় করা হবে না, আবার অপরদিকে রাজ্যগুলিকে সম্পূর্ণভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনস্থ করা হয়।

(৩) ভারত সম্রাজ্ঞী ভিক্টোরিয়া

১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে মহারানি ভিক্টোরিয়াকে “ভারত সম্রাজ্ঞী” বলে ঘোষণা করা হয়। এর ফলে সমগ্র ভারতের ওপর মহারানির সার্বভৌমত্ব আরোপিত হয়।

(৪) দেশীয় রাজ্যের পরিণতি

দেশীয় রাজ্যগুলির ওপর ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণ প্রবলভাবে বৃদ্ধি পায় এবং সরকার প্রত্যেকটি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে থাকে। বলা বাহুল্য, পরবর্তীকালে প্রজাবিদ্রোহ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের কালে দেশীয় রাজন্যবর্গ ব্রিটিশ শক্তির মিত্র হিসেবে ভারতীয়দের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়।

উপসংহার :- ইংরেজ ঐতিহাসিক পি. ই. রবার্টস-এর মতে দেশীয় রাজ্যগুলি ছিল ‘ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রক্ষাপ্রাচীর’।মহাত্মা গান্ধী-র মতে, এই রাজারা ছিলেন ‘ভারতীয় পোশাক পরিহিত ব্রিটিশ রাজকর্মচারী’। জওহরলাল নেহরু -র মতে এঁরা হলেন ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ।’


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “মহাবিদ্রোহের ফলাফল” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) মহাবিদ্রোহের ফলাফল সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. মহারানীর ঘোষণা পত্র কবে প্রকাশিত হয়?

১ নভেম্বর ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে।

২. ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে ছিলেন?

লর্ড ক্যানিং।

৩. রাণী ভিক্টোরিয়া কবে ভারত সম্রাজ্ঞী উপাধিতে ভূষিত হন?

১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে।

অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনা বা গল্পগুলি

Leave a Comment