সুভাষচন্দ্র বসু

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু -র জন্ম, পিতামাতা, শৈশব, শিক্ষা, বিবেকানন্দের প্রভাব, অরবিন্দ ঘোষের প্রভাব, গান্ধীজীর সাথে সাক্ষাৎ, জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ,

সংবাদপত্রে লেখালেখি, রাজনৈতিক গুরু, জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক, কলকাতার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব, ইউরোপ ভ্রমণ, জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদ অর্জন, সভাপতি পদ ত্যাগ, ফরওয়ার্ড ব্লক দল প্রতিষ্ঠা,

আইন অমান্য আন্দোলনের প্রচার, গৃহবন্দী, পলায়ন, জাপানে গমন, আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্ব গ্রহণগ্রহণ ও তাঁর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের অভিযান সম্পর্কে জানবো।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু

ঐতিহাসিক চরিত্রসুভাষচন্দ্র বসু
জন্ম২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দ
মাতাপ্রভাবতী দেবী
পিতাজানকীনাথ বসু
পরিচিতিভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, আজাদ হিন্দ ফৌজ -এর সংগঠক ও সর্বাধিনায়ক
রাজনৈতিক দলফরওয়ার্ড ব্লক
সুভাষচন্দ্র বসু

ভূমিকা :- ভারত -এর স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা সুভাষচন্দ্র বসু। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র, যাঁর বিদ্রোহী দেশপ্রেম তাঁকে ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্বাধীনতা সংগ্রামী করে তুলেছিল।

সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম

নেতাজী সুভাষচন্দ্র ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি অধুনা ভারতের ওড়িশা রাজ্যের কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাদের আদি নিবাস ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায়।

সুভাষচন্দ্র বসুর পিতামাতা

তার মাতা প্রভাবতী বসু (দত্ত) ছিলেন উত্তর কলকাতার হাটখোলা দত্ত বাড়ির কন্যা এবং পিতা জানকীনাথ বসু ছিলেন একজন সফল ও সরকারি আইনজীবী। সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন তার পিতা-মাতার চৌদ্দ সন্তানের নবম সন্তান তথা ষষ্ঠ পুত্র।

সুভাষচন্দ্র বসুর শৈশব

  • (১) বাড়িতে তার মা হিন্দু দেবী দুর্গা ও কালীর উপাসনা করতেন, মহাভারত ও রামায়ণ মহাকাব্য থেকে গল্প বলতেন এবং বাংলা ভক্তিগীতি গাইতেন। মায়ের কাছ থেকে সুভাষ একটি স্নেহশীল স্বভাব লাভ করেন।
  • (২) তিনি দুর্দশাগ্রস্ত লোকদের সাহায্য করতেন ও প্রতিবেশী ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলা করা ও উদ্যানচর্চা পছন্দ করতেন।

সুভাষচন্দ্র বসুর নামে পরিচিত সুভাষগ্রাম

তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার কোদালিয়া গ্রামে। বর্তমানে সুভাষগ্রাম নামে পরিচিত।

সুভাষচন্দ্র বসুর শিক্ষা

  • (১) ১৯০২ সালে তিনি তার পাঁচ বড় ভাইয়ের সাথে কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয় স্কুলে (অধুনা স্টুয়ার্ট স্কুল) ভর্তি হন। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র বসু বিদ্যালয়টিতে পঠন-পাঠন করেন।
  • (২) বিদ্যালয়টিতে সমস্ত শিক্ষাদানের মাধ্যম ছিল ইংরেজি, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ইউরোপীয় বা মিশ্রিত ব্রিটিশদের অ্যাংলো-ভারতীয় ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছিলেন।
  • (৩) পাঠ্যক্রমে ইংরাজী সঠিকভাবে লিখিত ও কথ্য লাতিন, বাইবেল, সহবত শিক্ষা, ব্রিটিশ ভূগোল এবং ব্রিটিশ ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত ছিল। কোনও ভারতীয় ভাষা শেখানোর ব্যবস্থা ছিল না।
  • (৪) এই বিদ্যালয় তার পিতা জানকীনাথের পছন্দ ছিল। তিনি চেয়েছিলেন তার ছেলেরা যেন নির্দ্বিধায় ত্রুটিহীন ইংরেজি বলতে পারে। ভারতে ব্রিটিশদের মাঝে থাকার জন্য তিনি বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষাকেই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করতেন।
  • (৫) এরপর পাঁচ ভাইকে অনুসরণ করে সুভাষকে ১৯০৯ সালে ১২ বছর বয়সে কটকের রাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি করা হয়। এখানে বাংলা ও সংস্কৃত শেখানো হত এবং পাশাপাশি বাড়িতে সাধারণত গৃহীত না হওয়া হিন্দু ধর্মগ্রন্থ যেমন- বেদ ও উপনিষদ সম্পর্কে পাঠদান করা হত।
  • (৬) যদিও এখানে পাশ্চাত্য শিক্ষার তৎপরতা অব্যাহত ছিল তবুও তিনি ভারতীয় পোশাক পরতেন এবং ধর্মীয় ভাবনাচিন্তার সাথে জড়িত ছিলেন।
  • (৭) ব্যস্ততা সত্ত্বেও সুভাষচন্দ্র বসু পড়াশোনায় মনোযোগ, প্রতিযোগিতা ও পরীক্ষায় সফল হওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
  • (৮) তিনি ১৯১২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ম্যাট্রিক পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন।
  • (৯) দর্শনকে অধ্যয়ন বিষয় হিসাবে  নির্বাচন করে সুভাষচন্দ্র বসু ১৯১৩ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ -এ ভর্তি হন। তিনি ক্যান্ট, হেগেল, বের্গসন ও অন্যান্য পাশ্চাত্য দার্শনিকদের সম্পর্কে পড়াশোনা করেন।
  • (১০) সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় ভাল নম্বর পেয়ে তিনি প্রায় নিয়োগপত্র পেয়ে যান। কিন্তু বিপ্লব-সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সেই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “কোনো সরকারের সমাপ্তি ঘোষণা করার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হল তা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া”।

সুভাষচন্দ্র বসুর উপর জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রভাব

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড -এর ঘটনার পর সুভাষ তীব্র বৃটিশ বিরোধী হয়ে উঠেন। ফলে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা প্রত্যাখ্যান করে তিনি ভারতে ফিরে আসার উদ্যোগ নেন।

ধর্মপ্রাণ হিন্দু সুভাষচন্দ্র বসু

সুভাষচন্দ্র ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দু। কিন্তু আজাদ হিন্দ ফৌজ পরিচালনা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে তিনি ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবধারায় সকল ধর্মাবলম্বীদের ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন।

সুভাষচন্দ্র বসুর উপর বিবেকানন্দের প্রভাব

তিনি ধ্যানে অনেক সময় অতিবাহিত করতেন। স্বামী বিবেকানন্দ -এর ভাবাদর্শ তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ছাত্রাবস্থা থেকে তিনি তাঁর দেশপ্রেমিক সত্তার জন্য পরিচিত ছিলেন।

সুভাষচন্দ্র বসুর উপর অরবিন্দ ঘোষের প্রভাব

সুভাষ চন্দ্রকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিলেন ঋষি অরবিন্দ ঘোষ। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে অরবিন্দ বামপন্থী চিন্তাধারা তুলে ধরে ছিলেন, পূর্ণ স্বাধীনতার দাবীও তুলেছেন। সুভাষ চন্দ্র অরবিন্দকে জীবনের পথপ্রদর্শক হিসেবে শ্রদ্ধা করেছেন।

গান্ধীজীর সাথে সুভাষচন্দ্র বসুর সাক্ষাৎ

১৯২১ সালের ১৬ জুলাই ২৪ বছর বয়সী সুভাষচন্দ্র বসু ইংল্যান্ড থেকে ফিরে ভারতের বোম্বেতে পাড়ি দেন এবং অবিলম্বে গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের আয়োজন করেন। সেই সময় ৫১ বছর বয়স্ক গান্ধী, অসহযোগ আন্দোলন -এর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ও গান্ধীজির ভিন্ন মত

গান্ধী এবং বসু প্রথম সাক্ষাতেই আন্দোলনের উপায় সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করেন। গান্ধী অহিংস আন্দোলন সম্পর্কে ছিলেন আপোষহীন। কিন্তু সুভাষচন্দ্রের মতে ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে যেকোনো উপায়ই গ্রহণযোগ্য ছিল।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর কাঙ্খিত নেতা

ঐতিহাসিক গর্ডনের মতে, ‘গান্ধী অবশ্য সুভাষচন্দ্র বসুকে বাংলায় কংগ্রেস ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদের নেতা সি আর দাশের পথে পরিচালিত করেন এবং তার মধ্যে বসু তার কাঙ্ক্ষিত নেতা খুঁজে পান।’

সুভাষচন্দ্র বসুর জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ

চিত্তরঞ্জন দাশ সুভাষচন্দ্র বসুকে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ করান। এরপর সুভাষচন্দ্র প্রায় ২০ বছর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।

সুভাষচন্দ্র বসুর সংবাদপত্রে লেখালিখি

ভারতে ফিরে সুভাষচন্দ্র ‘স্বরাজ’ নামক সংবাদপত্রে লেখালেখি শুরু করেন এবং বঙ্গীয় প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রচারের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। তিনি চিত্তরঞ্জন দাস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ফরওয়ার্ড পত্রিকার সম্পাদক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।

সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি সুভাষচন্দ্র বসু

১৯২৩ সালে সুভাষচন্দ্র সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি এবং একই সাথে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সম্পাদক নির্বাচিত হন।

সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক গুরু

তার রাজনৈতিক গুরু ছিলেন বাংলায় মহান জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। ১৯২৪ সালে দেশবন্ধু কলকাতার মেয়র নির্বাচিত হলে সুভাষচন্দ্র তার অধীনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

যক্ষ্মায় আক্রান্ত সুভাষচন্দ্র বসু

১৯২৫ সালে অন্যান্য জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে তাকেও বন্দি করে মান্দালয়ে নির্বাসিত করা হয়। এখানে তিনি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সুভাষচন্দ্র বসু

১৯২৭ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সুভাষচন্দ্র ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হন এবং জওহরলাল নেহেরু সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন।

কংগ্রেসের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর জিওসি সুভাষচন্দ্র বসু

১৯২৮ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে বসু কলকাতায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক সভার আয়োজন করেন। কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) হিসেবে তার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে স্মরণীয়।

কলকাতার মেয়র সুভাষচন্দ্র বসু

এরপর সুভাষচন্দ্র বসুকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয় এবং আইনঅমান্য আন্দোলনের জন্য জেলে পাঠানো হয়। মুক্তি পাওয়ার পর ১৯৩০ সালে তিনি কলকাতার মেয়র নির্বাচিত হন।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ইউরোপ ভ্রমণ

১৯৩০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সুভাষচন্দ্র বসু ইউরোপ ভ্রমণ করেন। এই সময় বেনিতো মুসোলিনি সহ বিভিন্ন ভারতীয় ছাত্র ও ইউরোপীয় রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করেন। তিনি দলীয় সংগঠন এবং কমিউনিজম ও ফ্যাসিবাদের প্রয়োগ পর্যবেক্ষণ করেন।

সুভাষচন্দ্র-প্যাটেল ইস্তাহার

১৯৩৪ সালে লবণ সত্যাগ্রহ বন্ধ করলে তিনি ও বীঠলভাই প্যাটেল ইউরোপ থেকে সুভাষচন্দ্র-প্যাটেল ইস্তাহার দেন। বীঠলভাই প্যাটেল তার সম্পত্তির চার ভাগের তিন ভাগ নেতাজিকে দান করেন।

জালিয়াতি বদনাম

পরবর্তীতে বীঠলভাই প্যাটেলের ছোটো ভাই বল্লভভাই প্যাটেল তার দাদার এই দান অস্বীকার করে এবং তাঁকে জালিয়াত সহ নানা খারাপ আখ্যা দেন।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর কারাবরণ

রাজনীতি জীবনের কুড়ি বছরের মধ্যে সুভাষচন্দ্র মোট ১১ বার গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাঁকে ভারত ও রেঙ্গুনের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে তাকে ইউরোপে নির্বাসিত করা হয়।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বিবাহ

১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে ভিয়েনাতে তিনি তার প্রথম প্রেম এমিলি শেঙ্কলের সঙ্গে পরিচিত হন। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁরা ব্যাড গ্যাস্টিনে বিয়ে করেন বলে মনে করা হয়।

জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু

১৯৩৮ সাল পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র জাতীয় পর্যায়ের নেতায় পরিণত হয়েছিলেন এবং কংগ্রেস দলের সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন গ্রহণ করতে সম্মত হন। ১৯৩৯ সালে তিনি গান্ধীর পছন্দের প্রার্থী পট্টভি সীতারামাইয়াকে পরাজিত করে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর কংগ্রেসের সভাপতি পদ ত্যাগ

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে গান্ধী নেতৃত্বাধীন দলের বিভিন্ন কৌশলের কারণে, সুভাষচন্দ্র কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ফরওয়ার্ড ব্লক দল প্রতিষ্ঠা

১৯৩৯ সালের ২২ জুন সুভাষচন্দ্র ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অভ্যন্তরে নিখিল ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক সংগঠিত করেন মূলত বামপন্থী রাজনৈতিকদের মজবুত করার লক্ষ্যে। কিন্তু এর প্রধান শক্তি ছিল তার নিজের রাজ্য বাংলায়।

বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে সুভাষচন্দ্র বসুর সাক্ষাৎ

ইংল্যান্ডে তিনি ব্রিটিশ লেবার পার্টির বিভিন্ন নেতা ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ, যেমন – লর্ড আরউইন, জর্জ ল্যান্সবারি, ক্লিমেন্ট এটলি, আর্থার গ্রীনউড, হ্যারল্ড লাস্কি, জে বি এস হ্যালডেন, আইভর জেনিংস, গিলবার্ট মারে, জর্জ ডগলাস হাওয়ার্ড কোল, স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস‌ প্রমুখের সঙ্গে ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মত বিনিময় করেন।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মতে একনায়কতন্ত্রের প্রয়োজন

সুভাষচন্দ্র বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে, স্বাধীন ভারতের অন্তত দুই দশক পর্যন্ত তুরস্ক -এর মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা -র অনুরূপ সমাজতান্ত্রিক একনায়কতন্ত্র প্রয়োজন।

আইন অমান্য আন্দোলনের প্রচারে সুভাষচন্দ্র বসু

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড লিনলিথগো কংগ্রেস নেতৃত্বের সাথে আলোচনা না করেই ভারতের পক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। সুভাষচন্দ্র বসু এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করার জন্য গণ আইন অমান্য আন্দোলন আয়োজনের পক্ষে প্রচার শুরু করেন

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে গণবিক্ষোভ

তিনি কলকাতার অন্ধকূপ হত্যা ঘটনার স্মরণে, ডালহৌসি স্কোয়ারের এক কোণে নির্মিত ‘হলওয়েল মনুমেন্ট’ অপসারণের দাবিতে গণ বিক্ষোভের আয়োজন করেন।

গৃহবন্দী সুভাষচন্দ্র বসু

১৯৪১ সালে সুভাষচন্দ্র বসুকে গৃহবন্দী করা হয়। এসময় সিআইডি তার বাড়ি নজরদারিতে রাখে। তবুও তিনি আফগানিস্তান এবং সোভিয়েত রাশিয়া হয়ে জার্মানিতে পালাতে সক্ষম হন।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর পলায়ন

১৯৪১ সালের ১৭ জানুয়ারি রাতে কলকাতায় তার এলগিন রোডের বাড়ি থেকে ব্রিটিশদের নজরদারি এড়িয়ে ভাগ্নে শিশির কুমার বসুকে সঙ্গে নিয়ে সুভাষচন্দ্র বসু পালিয়ে তৎকালীন বিহার রাজ্যের (বর্তমানে ঝাড়খণ্ড) গোমোহ্‌ রেলওয়ে স্টেশনে পৌছান। বর্তমানে এটি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু গোমোহ্‌ স্টেশন নামে পরিচিত।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সুভাষচন্দ্র বসুর গমণ

  • (১) ১৯৪১ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনি আফগানিস্তান সংলগ্ন ব্রিটিশ ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ দিয়ে রাশিয়া পৌঁছানোর জন্য যাত্রা শুরু করেন।
  • (২) জিয়াউদ্দিন নামে একজন পশতুন বীমা এজেন্ট সেজে আফগানিস্তানে পৌছানোর পর, তিনি তার ছদ্মবেশ পরিবর্তন করে একজন ইতালির অভিজাত ব্যক্তি, “কাউন্ট অরল্যান্ডো মাজোত্তা” সেজে ইতালীয় পাসপোর্টে মস্কো পৌঁছান।
  • (৩) মস্কো থেকে তিনি রোম -এ পৌছান, এবং সেখান থেকে জার্মানিতে পাড়ি দেন। তিনি বার্লিনে ফ্রি ইন্ডিয়া সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের মধ্য থেকে সৈন্য নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী গঠন করেন।
  • (৪) সুভাষচন্দ্র বসু ১৯৪১ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত বার্লিনে বসবাস করেন।
  • (৫) ১৯৪৩ সালে জার্মানি ভারতের স্বাধীনতা অর্জনে সাহায্য করতে পারবে না বুঝতে পেরে ডুবোজাহাজে করে সুভাষচন্দ্র বসু জাপান চলে যান।

আজাদ হিন্দ বাহিনী

সব মিলিয়ে ৩০০০ ভারতীয় যুদ্ধবন্দী নিয়ে বার্লিনে গঠিত বাহিনী আজাদ হিন্দ বাহিনী নামে পরিচিত।

আজাদ হিন্দ বাহিনীর শপথ

এই বাহিনীর সদস্যরা হিটলার এবং সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে, “আমি ঈশ্বরের শপথ করে বলছি যে সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে, ভারতের জন্য যুদ্ধে আমি জার্মান জাতি ও রাষ্ট্রের নেতা আডলফ হিটলারকে জার্মান সামরিক বাহিনীর সেনাপতি হিসেবে মেনে চলব”।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ভারত আক্রমণের প্রস্তুতি

তিনি আজাদ হিন্দ বাহিনীর নেতৃত্বে নাৎসি সৈন্যদের দ্বারা সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে ভারত আক্রমণের পরিকল্পনা করতেও প্রস্তুত ছিলেন।

আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন

প্রবাসী জাতীয়তাবাদী নেতা রাসবিহারী বসুর নেতৃত্বে পরিচালিত তৎকালীন ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের সমর্থনে ১৯৪১ সালের ডিসেম্বর মাসে ফুজিওয়ারা ও মোহন সিং এর মধ্যে আলোচনার ফলে প্রথম আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠিত হয়। ১৯৪২ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তারা যৌথভাবে এর নাম মনোনীত করেন।

আজাদ হিন্দ ফৌজের ভাঙন

১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে হিকারি কিকান এবং মোহন সিং মধ্যে মতানৈক্য ঘটার পর প্রথম আজাদ হিন্দ ফৌজ ভেঙ্গে দেওয়া হয়

সুভাষচন্দ্র বসুকে দায়িত্ব প্রদান

১৯৪৩ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর আগমনের সঙ্গে স্বাধীনতার জন্য সেনাবাহিনী গঠনের ধারণাটি আবারো পুনরুজ্জীবিত হয়। জুলাই মাসে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত একটি সভায় রাসবিহারী বসু সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।

ঝাঁসীর রাণী রেজিমেন্ট

আজাদ হিন্দ ফৌজে একটি পৃথক নারী বিভাগ ছিল, যার নাম ঝাঁসীর রাণী রেজিমেন্ট (রাণী লক্ষ্মীবাঈ -এর নামে নামকরণ হয়)। ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সেহগল এর নেতৃত্বে এই বাহিনী গঠিত হয়।

বার্মার সমাবেশে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বক্তৃতা

১৯৪৪ সালের ৪ জুলাই বার্মায় ভারতীয়দের এক সমাবেশে আজাদ হিন্দ ফৌজ এর জন্য একটি ভাষণ প্রদানের সময় সুভাষচন্দ্রের সবচেয়ে বিখ্যাত উক্তিটি উচ্চারিত হয়- “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো !”

আজাদ হিন্দ সরকারকে স্বীকৃতি

তৎকালীন নয়টি রাষ্ট্র – জার্মানি, জাপান, ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, ক্রোয়েশিয়া, চীন, বর্মা, মাঞ্চুকুও, জাপান নিয়ন্ত্রিত ফিলিপাইন আজাদ হিন্দ সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।

সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের অভিযান

  • (১) আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রথম দায়িত্ব ছিল পূর্ব ভারতীয় সীমান্তের মণিপুরের দিকে জাপানি আগ্রাসনে সহায়তা করা।
  • (২) জাপানিরা ১৯৪২ সালে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ দখল করে আজাদ হিন্দ ফৌজের হাতে সমর্পণ করে। দ্বীপগুলির নাম পরিবর্তন করে শহীদ ও স্বরাজ রাখা হয়।
  • (৩) ভারতের মূল ভূখণ্ডে, উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুরের মৈরাং শহরে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অনুকরণে তৈরীকৃত একটি ত্রিবর্ণ পতাকা প্রথমবারের মত উত্থাপিত হয়।
  • (৪) এরপর ইম্ফল ও কোহিমার পার্শ্ববর্তী শহরগুলো জাপানি সেনাবাহিনীর কিছু অংশ এবং আজাদ হিন্দ ফৌজ এর গান্ধী ও নেহরু ব্রিগেডের সহায়তায় ঘেরাও ও অবরোধ করা শুরু করে। অক্ষশক্তি ভারতের মূল ভূখণ্ড জয় করার এই প্রচেষ্টাকে অপারেশন ইউ-গো আখ্যায়িত করে।
  • (৫) এই অপারেশনের সময় ১৯৪৪ সালের ৬ জুলাই সিঙ্গাপুর থেকে আজাদ হিন্দ রেডিও কর্তৃক সম্প্রচারিত একটি বক্তৃতায় সুভাষচন্দ্র বসু মহাত্মা গান্ধীকে “জাতির পিতা” বলে সম্বোধন করেন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য তার আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা কামনা করেন।
  • (৬) এই দুই শহর দখল করার দীর্ঘ প্রচেষ্টায় জাপানি সম্পদ ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে ও পরিশেষে অপারেশন ইউ-গো ব্যর্থ হয়।
  • (৭) কোহিমা ও ইম্ফলের যুদ্ধে জাপানিদের পরাজয়ের পর ভারতের মূল ভূখণ্ডে আজাদ হিন্দ সরকারের একটি ঘাঁটি স্থাপনের লক্ষ্য চিরকালের জন্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
  • (৮) তবুও আজাদ হিন্দ ফৌজ বর্মায় ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মেইকটিলা, মান্দালয়, বাগো, মাউন্ট পোপা ইত্যাদি অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে।
  • (৯) রেঙ্গুনের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সুভাষচন্দ্র বসুর সরকার একটি কার্যকর রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে।
  • (১০) এরপর লেফটেন্যান্ট কর্নেল লোগনাথনের অধীনে আজাদ হিন্দ ফৌজের একটি বড়ো অংশ আত্মসমর্পণ করে। অবশিষ্ট সৈন্যরা সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে মালয়ে পশ্চাদপসরণ করে অথবা থাইল্যান্ডের দিকে যাত্রা করে।
  • (১১) যুদ্ধ শেষে জাপানের আত্মসমর্পণ আজাদ হিন্দ ফৌজের কাহিনীর সমাপ্তি ঘটায়। এরপর বন্দীদের ভারতে ফেরত পাঠানো হয় এবং কিছু সৈন্যকে বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে দণ্ডিত করা হয়।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু রচিত গ্ৰন্থ

তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ হল তার আত্মজীবনী ‘Indian Pilgrim’ এবং ‘India’s Struggle for Freedom’।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনা

ঐতিহাসিকদের মতে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট সুভাষচন্দ্র বসুকে বহনকারী জাপানের তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু ঘটে। তবে তার অনেক অনুগামীই এবং বিশেষত বাংলায় সেই সময় ঘটনাটি অস্বীকার করে। এমনকি এখনো তার মৃত্যু সম্পর্কিত পরিস্থিতি ও তথ্য আমরা অবিশ্বাস করি।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বিখ্যাত উক্তি

  • (১) সুভাষচন্দ্র বসুর সবচেয়ে বিখ্যাত উক্তি হল “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব”।
  • (২) তিনি আইএনএ সেনাবাহিনীকে অনুপ্রাণিত করার জন্য তাঁর বিখ্যাত উক্তি “দিল্লি চলো” ব্যবহার করেন।
  • (৩) জয় হিন্দ তার ব্যবহৃত আরও একটি স্লোগান। এটি পরবর্তিতে ভারত সরকার এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক গৃহীত হয়েছিল।
  • (৪) তাঁর উদ্ভাবিত আর একটি স্লোগান ছিল “ইত্তেহাদ, এতেমাদ, কুরবানী”।
  • (৫) আজাদ হিন্দ ফৌজে “ইনকিলাব জিন্দাবাদ” স্লোগানটি ব্যবহার করেছিলেন। এটি অবশ্য মওলানা হযরত মোহানি দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি সম্মাননা

  • (১) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুভাষচন্দ্র বসুকে ‘দেশনায়ক’ আখ্যা দিয়ে তাসের দেশ নৃত্যনাট্যটি তাকে উৎসর্গ করেন।
  • (২) নেতাজির জন্মদিন বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে, ত্রিপুরায়, অসমে ও ওডিশায় রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।
  • (৩) স্বাধীনতার পর কলকাতার একাধিক রাস্তা তার নামে নামাঙ্কিত করা হয়। বর্তমানে কলকাতার একমাত্র ইন্ডোর স্টেডিয়াম তার নামে নামাঙ্কিত হয় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম।
  • (৪) নেতাজির জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে দমদম বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখা হয়।
  • (৫) তার নামে কলকাতায় স্থাপিত হয় নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও নেতাজি সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং দিল্লিতে স্থাপিত হয় নেতাজি সুভাষ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি।
  • (৬) কলকাতা মেট্রোর দুটি স্টেশন বর্তমানে নেতাজির নামাঙ্কিত। এগুলি হল’নেতাজি ভবন‘ (পূর্বনাম ভবানীপুর) ও ‘নেতাজি’ (পূর্বনাম কুঁদঘাট)।
  • (৭) ভারতের রেলপথ মন্ত্রক ২৩ শে জানুয়ারি ২০২১ থেকে ভারতের অন্যতম পুরাতন কালকা মেল ট্রেনের নাম পাল্টে নেতাজি এক্সপ্রেস দিয়েছে।
  • (৮) সুভাষচন্দ্র বসু ১৯৬৪, ১৯৯৩, ১৯৯৭, ২০০১, ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে ভারতের ডাকটিকিটে নির্বাচিত ছিলেন।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে সুভাষচন্দ্র বসু

  • (১) সুভাষচন্দ্রের জীবনীর উপর ভিত্তি করে ১৯৬৬ সালে বাংলা চলচ্চিত্র নির্মিত হয়, যার পরিচালক ছিলেন পীযুষ বসু।
  • (২) ২০০৪ সালে শ্যাম বেনেগল “নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস: দ্য ফরগোটেন হিরো” নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন।

উপসংহার :- আমাদের কাছে নেতাজি সুভাষ মৃত্যুঞ্জয়। আমরা বিশ্বাস করি, এমন মহাত্মা মানুষের মৃত্যু নেই। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আমাদের মনের মনিকোঠায় বেঁচে আছেন এক উজ্জ্বল দীপশিখা হয়ে।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মায়ের নাম কী?

প্রভাবতী দেবী।

২. নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর স্ত্রীর নাম কী?

এমিলি শেংকেল।

৩. নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর আত্মজীবনীর নাম কী?

The Indian’s Struggle.

৪. নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছদ্মনাম কী ছিল?

অরল্যান্ডো মাজোট্টা।

৫. সুভাষচন্দ্র বসুকে সর্বপ্রথম নেতাজি বলে সম্বোধন করেন?

আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনারা।

Leave a Comment