বিখ্যাত রসরচনা ও ব্যঙ্গ কাব্য রচয়িতা লরেন্স ষ্টার্ণের প্রেমপত্র প্রসঙ্গে লরেন্স ষ্টার্ণের পরিচিতি, লরেন্স ষ্টার্ণের দেশ, লরেন্স ষ্টার্ণের খ্যাতি, লরেন্স ষ্টার্ণের প্রেমিকা ও লরেন্স ষ্টার্ণের মূল প্রেমপত্র সম্পর্কে জানব।
কবি লরেন্স ষ্টার্ণের প্রেমপত্র
ঐতিহাসিক প্রেমপত্র | লরেন্স ষ্টার্ণের প্রেমপত্র |
পরিচিতি | রসরচনা ও ব্যঙ্গ কাব্য রচয়িতা |
দেশ | ইংল্যান্ড |
স্ত্রী | লরেন্স এলিজাবেথ |
প্রেমিকা | লরেন্স এলিজাবেথ, ক্যাথারিণ, এলিজা ড্রেপার |
রসরচনা ও ব্যঙ্গ কাব্য দ্বারা যাঁরা অষ্টাদশ শতকের ইংরাজী সাহিত্যের শ্রীবৃদ্ধি করেছিলেন লরেন্স ষ্টার্ণ ছিলেন তাঁদের অন্যতম। জীবনে তিনি তিনজন নারীর সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। প্রথম, তাঁর পত্নী লরেন্স এলিজাবেথ, দ্বিতীয়, ক্যাথারিণ আর তৃতীয়জন হলেন লন্ডন প্রবাসী কোনো বিদেশীয় আইন ব্যবসায়ীর পত্নী, নাম এলিজা ড্রেপার। স্বীয় পত্নীকে তিনি এক সময় লিখেছিলেন –
ওগো আমার ধ্যানের দেবী,
আমার কি ইচ্ছা হয় জান? এক এক বার মনে করি কাজ কি এই সংসারে থেকে। সব ছেড়ে তোমায় নিয়ে কোথাও চলে যাই না কেন! দূরে-বহুদূরে কোনো পাহাড়ের ধারে কুটীর নির্মাণ করে বাস করি। তুমি আমায় হাত ধরে নিয়ে যাবে তো সুন্দরী?
এই পর্যন্ত লেখার পর হঠাৎ সান্ধ্য প্রার্থনার কথা তাঁর স্মরণ হয়, তিনি লিখলেন –
ওই ঘণ্টা বেজে উঠল, আমি যাই, উপাসনার সময় হল, আমায় ডাকছে – বলছে, এখন ভগবানের আরাধনার সময়, এখন প্রেয়সীর চিন্তা নয়। পত্নী কি ভগবানের চেয়েও বড়? উপরে ঈশ্বর আছেন – তিনি তোমার মঙ্গল করুন। বিদায়!
(তাঁর দ্বিতীয়া বান্ধবী ক্যাথারিণকে লেখা কোনো পত্রের সন্ধান পাওয়া যায় না। তৃতীয়া প্রেমিকা ড্রেপারকে তিনি লিখেছিলেন) –
প্রিয়তমে এলিজা,
আজ সকালে একটা নতুন লেখায় হাত দিয়েছি। তুমি তা দেখতে পাবে – তোমায় দেখাব কিন্তু তুমি ইংল্যাণ্ডের ফিরে আসবার পূর্বেই যদি আমি মরি তাহলে এটা তোমারই সম্পত্তি হবে। শেষের কথাগুলো লিখে তোমার মনে বোধহয় ব্যাথা দিলাম। আচ্ছা, এবার যাতে তোমার আনন্দ হয় এমন কথা লিখব, কি বল? মনে পড়ে সেই প্রথম দিনের কথা। তুমি এসেছিলে বেশ পরিপাটি করে সেজে! তোমার সমস্ত সৌন্দর্যটুকু মুখে ফুটিয়ে তুলতে তুমি কত চেষ্টাই না করেছিলে! চেষ্টা করেছিলে তুমি তোমার রূপের আলোতে সব কিছু ঝলসে দিতে। তুমি যেন জোর করে তোমার চোখের জ্যোতি বাড়িয়ে তুলতে চেয়েছিলে – মনে পড়ে। আর আমি তখন তোমায় কি বলেছিলাম – মনে নেই? আমার তো বেশ মনে আছে সেদিনকার তোমার জোর করে ভাল দেখানর ভাব আমার মোটেই ভাল লাগে নি – তাই বলেছিলাম “সাধাসিদে পোষাকে এস, তাতেই তোমায় বেশ মানাবে। সিল্কের পোষাক আর জড়োয়ার চাকচিক্য তোমার রূপের জৌলুস কমাবে বই আর বাড়াবে না” – মনে আছে যে সব কথা। সত্যই বলছি, তোমার বেশভূষা ও অলঙ্কারের আতিশয্য আমার চোখে বড় বিসদৃশ ঠেকেছিল। তখন তোমার দেখে আমার মনে এসেছিল অনুকম্পা, কারণ সেই পোষাকে তোমায় বিশ্রী দেখাচ্ছিল। কিন্তু এখন আর তোমায় খারাপ দেখায় না।
তুমি সুন্দরী নও কিম্বা তোমার মুখে সৌন্দর্য নেই একথা কেউ বলবে না। এখন তুমি শুধু সুন্দরী নও – তুমি যেন আরও কিছু। সত্য বলছি আমার কথায় কিছু মাত্র আতিশয্য নেই – তোমার মত বুদ্ধিমতী আর আমি দেখি নি; তোমার মত প্রাণের সজীবতা বুঝি আর কারো নেই! তোমার সঙ্গে ঘণ্টাকতক বসে আলাপ করলে মুগ্ধ হবে না এমন লোক বোধহয় কেউ নেই, কেউ থাকতে পারে না। তোমার হতে চাইবে না এমন লোক আজ বিরল; তোমার প্রশংসা না করে কেউ থাকতে পারবে না। বিজাতীয় কৃত্রিমতার হাত হতে মুক্ত হয়ে অনাড়ম্বর সাজ পোষাকে তোমার প্রকৃতির দেওয়া সৌন্দর্য মহীয়ান হয়ে উঠেছে। তোমার নয়নে, তোমার কণ্ঠে এমন একটা কিছু আছে যা আর কোনো নারীর মধ্যে আমি প্রত্যক্ষ করি নি, মনে হয় এ এক অভিনব মোহ – যে মোহে যে কোনো সুরুচি সম্পন্ন পুরুষের চিত্ত মুগ্ধ হয়ে ওঠে। তোমার স্বামী আজ ইংল্যাণ্ডে থাকলে তাঁকে বলতাম “আপনি যদি অর্থ চান তো নিন পাঁচশ পাউণ্ড, আর তার বদলে শুধু আপনার স্ত্রীকে আমার সামনে বসিয়ে রাখুন, আমি তাঁকে দেখি আর লিখি আমার সাহিত্য গ্রন্থ – কি বলেন?” তোমায় সামনে বসিয়ে রেখে যে সাহিত্য রচিত হবে তার মূল্য পাঁচশ পাউণ্ডের চেয়ে ঢের বেশী। কি, পড়ে কিছু আনন্দ পেলে?
ষ্টার্ণ
(FAQ) লরেন্স ষ্টার্ণের প্রেমপত্র সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?
ইংল্যান্ডের বিখ্যাত রসরচনা ও ব্যঙ্গ কাব্য রচয়িতা।
ইংল্যান্ড।
লরেন্স এলিজাবেথ।
লরেন্স এলিজাবেথ, ক্যাথারিণ, এলিজা ড্রেপার।