জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি

মুসলিম লীগের প্রধান নেতা মহম্মদ আলি জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি পেশ, নেহেরু রিপোর্টের প্রস্তাবের একেবারে বিপরীত, জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবির প্রস্তাব সমূহ, ও জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবির প্রস্তাব সমূহের সমালোচনা সম্পর্কে জানবো।

মহম্মদ আলি জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি প্রসঙ্গে জিন্নার মুসলিম লীগে প্রত্যাবর্তন, মুসলিমদের দাবি, মুসলিম লীগের দিল্লি অধিবেশনে জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি পেশ, নেহেরু রিপোর্টের প্রস্তাবের বিপরীত প্রস্তাব জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি, জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবির বিষয় সমূহ ও জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবির সমালোচনা সম্পর্কে জানব।

জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি

ঐতিহাসিক ঘটনাজিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি
সময়কালমার্চ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ
অধিবেশনলীগের দিল্লি অধিবেশন
পেশ করেনমহম্মদ আলি জিন্না
উদ্দেশ্যমুসলিমদের স্বার্থ রক্ষা
জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি

ভূমিকা :- আইন অমান্য আন্দোলনের পূর্বে মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে মহম্মদ আলি জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। পরের বছর মহাত্মা গান্ধীও সরকারের কাছে এগারো দফা দাবি পেশ করেন।

চৌদ্দ দফা দাবি পেশ

ভারত-এর মুসলিমদের স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম লিগ -এর অধিবেশনে সভাপতি মহম্মদ আলি জিন্না তাঁর বিখ্যাত চৌদ্দ দফা দাবি পেশ করেন।

নেহরু রিপোর্টের প্রস্তাবের বিপরীত

জিন্নার চৌদ্দ দফার অধিকাংশ প্রস্তাবই ছিল নেহরু রিপোর্ট -এর প্রস্তাবগুলির একেবারে বিপরীত। পরবর্তীকালে এই চৌদ্দ দফা দাবিগুলিই মুসলিম লিগের প্রচারের প্রধান কর্মসূচি হয়ে দাঁড়ায়।

জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবির বিষয় সমূহ

চৌদ্দ দফা দাবিগুলি ছিল নিম্নরূপ। –

  • (১) ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন।
  • (২) প্রদেশগুলিতে স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন।
  • (৩) আইনসভাগুলিতে মুসলিমদের যথেষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ দান।
  • (৪) মুসলিমদের জন্য কেন্দ্রীয় আইনসভায় ১/৩ অংশ আসন সংরক্ষণ।
  • (৫) মুসলিমদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
  • (৬) বাংলা, পাঞ্জাব ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় রেখে ভারতের প্রদেশগুলির পুনর্গঠন।
  • (৭) সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়কে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দান।
  • (৮) কোনো আইনসভার যে কোনো সম্প্রদায়েরই ৩/৪ অংশ সদস্য কোনো বিলের বিরোধিতা করলে সেই বিল প্রত্যাহার।
  • (৯) প্রাদেশিক আইনসভার অনুমতি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন না করা।
  • (১০) কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মন্ত্রীসভায় ১/৩ অংশ মুসলিম সদস্য গ্রহণ করা।
  • (১১) রাজ্য ও স্থানীয় সংস্থাগুলিতে মুসলিমদের জন্য পদ সংরক্ষণ করা।
  • (১২) সিন্ধু প্রদেশকে বোম্বাই প্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নতুন প্রদেশ গঠন করা।
  • (১৩) বেলুচিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে সাংবিধানিক সংস্কার ঘটানো।
  • (১৪) মুসলিম শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ।

জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবির সমালোচনা

জিন্নার চোদ্দো দফার অধিকাংশ দাবিই ছিল গণতান্ত্রিক আদর্শের পরিপন্থী। কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এই দাবিগুলি খুবই সমর্থনযোগ্য বলে মনে হতে থাকে। ফলে মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির সম্ভাবনা বিনষ্ট হয়।

উপসংহার :- ড. রমেশচন্দ্র মজুমদারের মতে চৌদ্দ দফা দাবির ফলে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সাংবিধানিক সংস্কারের বিষয়ে মতের পার্থক্য ক্রমে বাড়তে থাকে এবং ভারতে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ বৃদ্ধি পেতে থাকে।

(FAQ) জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবি কে পেশ করেন?

মহম্মদ আলি জিন্না।

২. কবে,কোন অধিবেশনে চৌদ্দ দফা দাবি পেশ করা হয়?

মার্চ ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে লীগের দিল্লি অধিবেশনে।

৩. জিন্নার চৌদ্দ দফা দাবির উদ্দেশ্য কি ছিল?

মুসলিম সমাজের স্বার্থ রক্ষা করা।

Leave a Comment