মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে ঐতিহাসিক উপাদান

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে ঐতিহাসিক উপাদান প্রসঙ্গে বরণি ও ইসামীর রচনা, বিভিন্ন আকর গ্রন্থ, শিহাবুদ্দিনের রচনা, মহম্মদ কাশিমের রচনা ও অন্যান্য উপাদান সম্পর্কে জানবো।

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে ঐতিহাসিক উপাদান

বিষয়মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে ঐতিহাসিক উপাদান
সুলতানমহম্মদ বিন তুঘলক
বংশতুঘলক বংশ
পূর্বসূরিগিয়াসউদ্দিন তুঘলক
উত্তরসূরিফিরোজ শাহ তুঘলক
মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে ঐতিহাসিক উপাদান

ভূমিকা :- সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের মৃত্যুর পর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র জুনা খান মহম্মদ বিন তুঘলক নাম ধারণ করে দিল্লী সুলতানির সিংহাসনে আরোহণ করেন।

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে বরণী ও ইসামীর রচনা

সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের শাসনকাল সম্পর্কে প্রধান আকরগ্রন্থগুলি হল জিয়াউদ্দিন বরণীর তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী ও মহম্মদ ইসামীর ফুতুহা-উস-সালাতিন। এই দুটি গ্রন্থে সুলতান মহম্মদের সংস্কার সমূহ ও তার শাসননীতি সম্পর্কে তীব্র সমালোচনা পাওয়া যায়।

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে বিভিন্ন আকর গ্ৰন্থ

ইবন বতুতার রাহেলা গ্রন্থেও বহু তথ্য পাওয়া যায়। আমীর খসরুর তুঘলক নামা, ইয়াহিয়া বিন-শিরহিন্দির তারিখ-ই-মুবারক শাহি এবং শামস-ই-সিরাজ আফিফের তারিখ-ই ফিরোজ শাহীও উল্লেখ্য আকর গ্রন্থ।

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে শিহাবুদ্দিনের রচনা

শিহাবুদ্দিন আব্বাসের রচনা মাসালিক-আল-অবসরও একটি মূল্যবান আকর গ্রন্থ। বরণীর রচনার ভুলত্রুটি এতে পাওয়া যায়।

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে অজ্ঞাত লেখকের রচনা

শিরাৎ-ই-ফিরুজ শাহী গ্রন্থ মহম্মদের পরে ফিরোজ শাহ তুঘলক-এর আমলে রচিত হলেও, এই গ্রন্থে মহম্মদ তুঘলক সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য আছে। দুর্ভাগ্যক্রমে গ্রন্থটির লেখক অজ্ঞাতনামা।

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে মহম্মদ কাশিমের রচনা

১৬০৬ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদের মৃত্যুর বহু পরে তারিখ-ই-ফেরিস্তা গ্রন্থটি মহম্মদ কাশিম রচনা করেন। ফেরিস্তা থেকে বহু তথ্য পাওয়া যায়।

সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে অন্যান্য উপাদান

মহম্মদ তুঘলকের আমলে বহু প্রাদেশিক ইতিহাস রচিত হয়। মহম্মদ-বিন-তুঘলক স্মৃতিলিপিও মূল্যবান উপাদান। এছাড়া টমাসের রচনা পাঠান রাজাদের কাহিনীতে মহম্মদের মুদ্রার বিবরণ ও তাঁর মুদ্রাসংস্কার নীতির পটভূমিকা পাওয়া যায়।

মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে রচনা নিরপেক্ষ নয়

  • (১) মহম্মদের রাজত্বকালের ওপর তিন প্রধান ইতিহাসকার বরণী, ইসামী ও ইবন বতুতার রচনাগুলি নিরপেক্ষভাবে লেখা হয়নি। মহম্মদ চিরাচরিত নিয়মকানুন ও প্রথা না মেনে উদ্ভাবনী শক্তি প্রয়োগ করার ফলে বরণী মহম্মদের প্রতি সন্তুষ্ট ছিলেন না।
  • (২) মহম্মদের আদর্শবাদ, তাঁর লক্ষ্যগুলি সম্পর্কে সহানুভূতিশীল ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি তাঁরা নেন নি। মহম্মদের সংস্কারগুলি সম্পর্কে বরণী এতই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে, তিনি এই সংস্কারগুলির সঠিক কারণ ও পটভূমি ব্যাখ্যা করেননি।
  • (৩) তিনি এই সংস্কারগুলির বিফলতাকে বড় করে দেখিয়েছেন। এমনকি তিনি এই সংস্কারগুলির কালানুক্রমিক বর্ণনা দেওয়ার দরকার মনে করেন নি। ইসামী এবং ইবন বতুতাও একই দোষে দুষ্ট হয়েছেন।

উপসংহার :- সুতরাং এই কথা বলাই যায় যে, মহম্মদ বিন তুঘলক সমকালীন যুগের ইতিহাসকারদের কাছে ন্যায়বিচার পাননি।

(FAQ) মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে ঐতিহাসিক উপাদান সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. মহম্মদ বিন তুঘলকের পূর্ব নাম কি ছিল?

জুনা বা জৌনা খান।

২. মহম্মদ বিন তুঘলক কবে সিংহাসন লাভ করেন?

১৩২৫ খ্রিস্টাব্দে।

৩. কোন সুলতান পাগলা রাজা নামে পরিচিত?

মহম্মদ বিন তুঘলক।

৪. কোন দুটি গ্ৰন্থ থেকে মহম্মদ বিন তুঘলক সম্পর্কে জানতে পারি?

বরণীর তারিখ-ই-ফিরোজশাহী ও মহম্মদ ইসামীর ফুতুহা-উস-সালাতিন গ্ৰন্থ।

Leave a Comment