ধরসানা সত্যাগ্রহ

ধরসানা সত্যাগ্রহ -এর সূচনা, পূর্ণ স্বরাজের দাবি, লবণ সত্যাগ্রহ, উদ্দেশ্য, নেতৃত্ব, বিশিষ্ট নেতাদের কারাবন্দী, ধরসানা মিছিল, সহিংসতা ত্যাগ, পুলিশের লাঠিচার্জ, মারধর ও ব্রিটিশ শাসনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করা সম্পর্কে জানবো।

ধরসানা সত্যাগ্ৰহ প্রসঙ্গে ধরসানা সত্যাগ্ৰহ কি, ধরসানা লবণ সত্যাগ্ৰহ, ধরসানা লবণ গোলা সত্যাগ্ৰহ, ধরসানা সত্যাগ্ৰহের নেতৃত্ব, ধরসানা সত্যাগ্ৰহের সূচনা, ধরসানা সত্যাগ্ৰহের উদ্দেশ্য, ধরসানা সত্যাগ্ৰহের মিছিল, ধরসানা সত্যাগ্ৰহে পুলিশের লাঠিচার্জ ও মারধর।

গুজরাটের ধরসানা সত্যাগ্রহ

ঐতিহাসিক ঘটনাধরসানা সত্যাগ্রহ
সময়কাল৪ মে, ১৯৩০
স্থানগুজরাটের ধরসানা
নেতৃত্বমহাত্মা গান্ধী,
সরোজিনী নাইডু
ধরসানা সত্যাগ্রহ

ভূমিকা :- ১৯৩০ সালের মে মাসে ঔপনিবেশিক ভারত -এ ব্রিটিশ সরকারের লবণ করের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ ছিল ধরসানা সত্যাগ্রহ।

সত্যাগ্রহ

সত্যাগ্রহ হল আক্ষরিক অর্থে সত্যের প্রতি আগ্রহ। কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির আঙিনায় মহাত্মা গান্ধী প্রবর্তিত সত্যাগ্রহ ছিল সত্য ও অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত এবং অন্যায়ের বিরূদ্ধে পরিচালিত সংগ্রাম।

সত্যাগ্রহের উদ্দেশ্য

তাঁর আদর্শের উপর গীতার ইংরাজী ভাষ্য, লিও তলস্তয়, রাসকিন প্রমুখ পশ্চিমী লেখক এবং বৈষ্ণবজৈন ধর্মতত্ত্বের প্রভাব ছিল। তাঁর মতে, মানুষের সত্যের শক্তিকে ব্যবহার করে অশুভ শক্তির অন্তরের শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটানোই হল সত্যাগ্রহের উদ্দেশ্য।

তিনটি আঞ্চলিক সত্যাগ্রহ

সর্বভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের আগে গান্ধীজী তিনটি আঞ্চলিক সত্যাগ্রহ –চম্পারণ সত্যাগ্রহ, খেদা সত্যাগ্রহআমেদাবাদ সত্যাগ্রহ পরিচালনা করেন।

ধরসানা সত্যাগ্রহের সূচনা

ডান্ডিতে লবণ সত্যাগ্রহ সমাপ্তির পর মহাত্মা গান্ধী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রতিবাদ হিসেবে গুজরাটের ধরসানা সত্যাগ্রহের মাধ্যমে অহিংস অভিযানের পথ বেছে নেন।

পূর্ণ স্বরাজের দাবি

১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি গান্ধী এবং জওহরলাল নেহেরুর নেতৃত্বে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রকাশ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা বা পূর্ণ স্বরাজ জারি করে।

লবণ সত্যাগ্রহ

১৯৩০ সালের ৬ এপ্রিল গান্ধী কর্তৃক অবৈধ লবণ তৈরির মাধ্যমে লবণ সত্যাগ্রহ ব্রিটিশ লবণের ট্যাক্সের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ শুরু করেন।

ধরসানা সত্যাগ্রহের উদ্দেশ্য

১৯৩০ সালের ৪ মে মহাত্মা গান্ধী ভারতের ভাইসরয় লর্ড আরউইনকে চিঠি লিখে ধরাসনা লবণ সত্যাগ্রহের  অভিযান চালানোর উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন।

ধরসানা সত্যাগ্রহের আগেই নেতৃবৃন্দের কারাবন্দী

সঙ্গে সঙ্গে গান্ধীকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রস্তাবিত কর্মপরিকল্পনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নেহেরু, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল সহ অনেক কংগ্রেস নেতাকে পরিকল্পিত দিনের আগেই গ্রেফতার করা হয়।

ধরসানা সত্যাগ্রহ মিছিল

  • (১) মিছিলটি পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে গিয়েছিল। ৭৬ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত বিচারক আব্বাস তৈয়বজি গান্ধীর স্ত্রী কস্তুরবাইকে তার পাশে রেখে সত্যাগ্রহের নেতৃত্ব দেন।
  • (২) ধরাসনায় পৌঁছানোর আগেই দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের গ্রেফতারের পর সরোজিনী নাইডু এবং মৌলানা আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলতে থাকে।
  • (৩) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের শত শত স্বেচ্ছাসেবক ধরসানার দিকে যাত্রা শুরু করে। নাইডু এবং সত্যাগ্রহীরা  পুলিশের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হন। এক পর্যায়ে তারা বসে বসে আটাশ ঘণ্টা অপেক্ষা করে। আরও শতাধিক গ্রেফতার হন।

ধরসানা সত্যাগ্রহে সহিংসতা ত্যাগ

সরোজিনী নাইডু সচেতন ছিলেন যে সত্যাগ্রহীরা যেন সহিংস না হয়। তাদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন, “আপনাদের কোনো অবস্থাতেই কোনো সহিংসতা ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনাকে মারধর করা হবে, তবে আপনাকে প্রতিরোধ করা উচিত নয়: আপনাকে আঘাত করা থেকে রক্ষা করার জন্য একটি হাতও তুলতে হবে না।”

ধরসানা সত্যাগ্রহে পুলিশের লাঠিচার্জ

২১ মে সত্যাগ্রহীরা লবণের প্যানগুলিকে রক্ষা করে কাঁটাতারের বেড়া টেনে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। পুলিশ লাঠি চার্জ করে এবং তাদের আটক করা শুরু করে।

ধরসানা সত্যাগ্রহের মারধর

ধরাসনায় শত শত সত্যাগ্রহীকে ব্রিটিশ কমান্ডের সৈন্যরা মারধর করে।

ধরসানা সত্যাগ্রহের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের বৈধতাকে প্রশ্ন

পরবর্তী প্রচার ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং ভারতে ব্রিটিশ শাসনের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “ধরসানা সত্যাগ্রহ” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) ধরসানা সত্যাগ্রহ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. ধরসানা সত্যাগ্রহ কী?

১৯৩০ সালের মে মাসে ঔপনিবেশিক ভারতে ব্রিটিশ সরকারের লবণ করের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ ছিল ধরসানা সত্যাগ্রহ।

২. ধরসানা সত্যাগ্রহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কারা?

সরোজিনী নাইডু ও আব্বাস তৈয়বজি।

৩. কোন জেলায় ধরসানা সত্যাগ্রহ হয়েছিল?

গুজরাটের ভালসাদ জেলায়।

অন্যান্য ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি

Leave a Comment