ভার্সাই সন্ধির সমালোচনা

১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে জুন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত জার্মানি ও বিজয়ী মিত্রপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত ভার্সাই সন্ধির সমালোচনা প্রসঙ্গে মৃত্যুর পরিকল্পনা, জবরদস্তিমূলক সন্ধি, অপমানজনক সন্ধি, সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য করা, ন্যায় নীতি লঙ্ঘিত, জাতীয়তাবাদ উপেক্ষিত, ক্ষতিপূরণের বোঝা, অর্থহীন ও অবাস্তব শর্ত এবং সন্ধির স্বপক্ষে যুক্তি সম্পর্কে জানবো।

ভার্সাই সন্ধির সমালোচনা

ঐতিহাসিক ঘটনাভার্সাই সন্ধি
সময়কাল২৮ জুন, ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ
স্বাক্ষরকারীজার্মানি ও মিত্রপক্ষ
প্রেক্ষাপটপ্রথম বিশ্বযুদ্ধ
পরবর্তী যুদ্ধদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
ভার্সাই সন্ধি

ভূমিকা:- বিজয়ী মিত্রপক্ষ ও পরাজিত জার্মানির মধ্যে সন্ধিটি ভার্সাইয়ের রাজপ্রাসাদে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৮শে জুন স্বাক্ষরিত হয় বলে তা ভার্সাই সন্ধি নামে পরিচিত।

ভার্সাই সন্ধির সমালোচনা

আধুনিক ইতিহাস -এর যুগে ভার্সাই সন্ধি সমকাল ও পরবর্তীকালে নানাভাবে সমালোচিত হয়েছে। বস্তুত আধুনিক ইতিহাসের যুগ-এ এমন বিতর্কিত চুক্তি খুব কমই দেখা যায়। যেমন –

(১) মৃত্যুর পরিকল্পনা

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে জার্মানিতে যে নতুন যৌথ মন্ত্রিসভা গঠিত হয়, তার চ্যান্সেলার ফিলিপ সীডম্যান ভার্সাই সন্ধিকে একটি ‘মৃত্যু পরিকল্পনা’ ও ‘দাসত্বের শৃঙ্খল’ বলে অভিহিত করেন।

(২) জবরদস্তিমূলক সন্ধি

জার্মান ঐতিহাসিকেরা এই সন্ধিকে ‘একতরফা ও জবরদস্তিমূলক সন্ধি’ (‘Dictated Peace’) এবং ‘একটি ম্যাকিয়াভেলীয় সন্ধি’ বলে অভিহিত করেছেন।

(৩) অপমানজনক সন্ধি

অধ্যাপক কিম্‌স্‌ একে ‘কার্থেজিয়ান পিস’ বলে উল্লেখ করেছেন। অধ্যাপক ল্যাসিং-এর মতে, এই চুক্তি ছিল অস্বাভাবিক কঠোর ও অপমানজনক। জার্মান ঐতিহাসিকদের মতে, এই সন্ধির মূলে মিত্রশক্তিবর্গের প্রতিহিংসামূলক মনোভাব কাজ করে।

(৪) আপত্তিপত্র জমা

এই সন্ধি রচনাকালে জার্মান প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয় নি। বিজয়ী মিত্রপক্ষ একতরফাভাবে ২৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী এই সন্ধির খসড়া রচনা করে জার্মান প্রতিনিধিদের তাদের আপত্তিগুলি জানাতে বলে। জার্মান প্রতিনিধিরা এ সম্পর্কে ৪৪৩ পৃষ্ঠাব্যাপী একটি আপত্তিপত্র জমা দেয়।

(৫) সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য করা

কোনও বিচার-বিবেচনা ব্যতীতই সেই আপত্তিগুলি নাকচ করা হয় এবং জার্মানির উপর বিমান আক্রমণের ভয় দেখিয়ে জার্মান প্রতিনিধিদের সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য করা হয়।

(৬) প্যারিসের কাঁটাতারের বেড়া

যুদ্ধাপরাধী জার্মানির প্রতীক হিসেবে জার্মান প্রতিনিধি দলকে প্যারিসে কাটাতারের বেড়ার মধ্যে বাস করতে বাধ্য করা হয়।

(৭) লয়েড জর্জের মন্তব্য

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লয়েড জর্জ মন্তব্য করেন “যদি জার্মানি ভার্সাই শহরে সন্ধি স্বাক্ষর করতে রাজি না হয় তবে তাকে বার্লিনে বসে সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য করা হবে।” এই মন্তব্যই প্রমাণ করে যে, এই সন্ধির স্বরূপ কেমন ছিল।

(৮) নৈতিক বাধ্যকতা

সুতরাং এই ধরনের ‘জবরদস্তিমূলক সন্ধি’ পালনের ব্যাপারে জার্মানির কোনও নৈতিক বাধ্যবাধকতা ছিল না।

(৯) দুটি নীতি

ঐতিহাসিক রাইকার বলেন যে, জার্মানির সঙ্গে সন্ধি স্থাপনে মিত্ররাষ্ট্রবর্গ দুটি নীতির দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল এবং তারই প্রতিফলন ঘটেছে এই সন্ধিপত্রে। যেমন –

  • (ক) যুদ্ধসৃষ্টির অপরাধে জার্মানিকে কঠোর শাস্তি দেওয়া।
  • (খ) ভবিষ্যতে যাতে জার্মানি ইউরোপ-এর নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটাতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করা।

এই দুটি নীতিকে কার্যকর করতে গিয়ে সম্মেলনের নেতৃবৃন্দ জার্মানির প্রতি অস্বাভাবিক কঠোর নীতি গ্রহণ করে তার মৌলিক স্বার্থ ও মর্যাদার উপর চরম আঘাত হানেন।

(১০) জার্মানির আক্রমণাত্মক ভূমিকা

অপমানিত জার্মানি শুরু থেকেই এই অপমানজনক সন্ধির বিরোধিতা করতে থাকে এবং সন্ধি স্বাক্ষরিত হওয়ার কুড়ি বছরের মধ্যেই এই অপমানজনক সন্ধি ভেঙে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

(১১) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ নিহিত

অধ্যাপক এডওয়ার্ড হ্যালেড কার বলেন যে, এই সন্ধির শর্তগুলির মধ্যেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীজ নিহিত ছিল। ঐতিহাসিক লিপসন বলেন যে, মিত্রশক্তিবর্গ যদি জার্মানির প্রতি কিছুটা নমনীয় ও সদয় আচরণ করত, তাহলে জার্মানি ভালোভাবেই এই সন্ধি মেনে নিত।

(১২) ন্যায়-নীতি লঙ্ঘিত

এই সন্ধিতে ন্যায়-নীতি সম্পূর্ণভাবে লঙ্ঘিত হয়। যুদ্ধের জন্য সব দেশই কম-বেশি দায়ী থাকলেও একতরফাভাবে জার্মানির উপরেই সেই দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়। যেমন –

(ক) সামরিক অস্ত্র হ্রাস

উইলসনের চোদ্দোদফা নীতি অনুসারে স্থির ছিল যে, এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দেশই যুদ্ধের সাজ-সরঞ্জাম ও উদ্বৃত্ত সামরিক অস্ত্রাদি হ্রাস করবে। বলা বাহুল্য, এই নীতি কেবল পরাজিত জার্মানির ক্ষেত্রেই প্রযুক্ত হয়, বিজয়ী মিত্রশক্তির প্রতি নয়। জার্মানির মতো বৃহৎ দেশের সামরিক শক্তি বেলজিয়ামের মতো ক্ষুদ্র দেশ অপেক্ষাও হ্রাস করা হয়।

(খ) উপনিবেশ দখল

সুশাসন প্রবর্তন ও স্বায়ত্তশাসনের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার অজুহাতে জার্মানির উপনিবেশগুলি কেড়ে নিয়ে সেগুলিকে জাতিসংঘ বা লিগ অব নেশনস্-এর পরিদর্শনাধীনে মিত্রপক্ষের উদার ও দায়িত্বপূর্ণ শাসনাধীনে আনা হয়। মিত্রপক্ষ সেগুলি নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয় এবং এই উপনিবেশগুলিতে তারা সাম্রাজ্যবাদী শাসনব্যবস্থাই প্রবর্তন করে। এছাড়া, মিত্রপক্ষ নিজেদের উপনিবেশগুলিতেও চিরাচরিত সাম্রাজ্যবাদী শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রাখে।

(গ) জাতীয়তাবাদ উপেক্ষা

উইলসনের চোদ্দোদফা নীতিতে জাতীয়তাবাদ ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের কথা বলা হলেও জার্মানির ক্ষেত্রে এই নীতি প্রযুক্ত হয় নি। জার্মানি থেকে জার্মান-অধ্যুষিত বহু অঞ্চল বিচ্ছিন্ন করে প্রতিবেশী অ-জার্মান রাজ্যগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয় এবং এইভাবে জার্মান জাতীয়তাবাদকে উপেক্ষা করা হয়। ফলে পিতৃভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন জার্মানরা অন্যান্য দেশে উপেক্ষিত সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়।

(ঘ) জার্মানির ক্ষোভ

জাতীয়তাবাদকে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মেলনের নেতৃমণ্ডলী ফ্রান্সকে আলসাস-লোরেন, পোল্যান্ডকে পশ্চিম প্রাশিয়া ও পোজেন, ডেনমার্ককে স্লেজউইগ প্রভৃতি অঞ্চল ছেড়ে দেন, কিন্তু অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম, চেকোশ্লোভাকিয়া, বোহেমিয়া প্রভৃতি স্থানে বসবাসকারী বিপুল সংখ্যক জার্মানদের প্রতি এই নীতি প্রযুক্ত হয় নি। পক্ষপাতদুষ্ট এই নীতি জার্মানদের মনে প্রবল বিক্ষোভের সঞ্চার করে এবং এর ফলে ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু সমস্যার উদ্ভব হয়।

(ঙ) জার্মানির জাতীয়তাবাদ আহত

মধ্য দিয়ে পোল্যান্ডকে সংযোগপথ বা ‘করিডোর’ দেওয়ার ফলে জার্মানির দ্বিখণ্ডীকরণ, জার্মান বন্দর ডানজিগ ও বিভিন্ন নদীকে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণাধীনে আনা, সার অঞ্চলকে জার্মানি থেকে পৃথক করা এবং অন্যান্য কারণে জার্মান জাতীয়তাবাদ প্রবলভাবে আহত হয়।

(১৩) অর্থনৈতিক শর্ত

লিপসন বলেন যে, ১৯১৪-১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের যুদ্ধে পরাজয়ের মূল্য হিসেবে জার্মানিকে ভার্সাই সন্ধি স্বাক্ষর করতে হয়। জার্মানির উপর অবাস্তব অর্থনৈতিক শর্ত আরোপিত হয়। যেমন –

(ক) ল্যাংসামের মন্তব্য

ঐতিহাসিক ল্যাংসাম বলেন যে, এই সন্ধির ফলে জার্মানিকে ২৫ হাজার বর্গমাইল অঞ্চল, ৭০ লক্ষ জনসমষ্টি, শতকরা ১৫ ভাগ চাষযোগ্য জমি, ১২ ভাগ পশুসম্পত্তি ও ১০ ভাগ বৃহদায়তন শিল্প হারাতে হয়। তার কয়লার শতকরা ৪০ ভাগ, লোহার ৬৫ ভাগ এবং উৎপাদিত রবারের প্রায় সবটাই মিত্রপক্ষকে দিয়ে দিতে হয়। খনিজ সম্পদে পূর্ণ সার অঞ্চল হস্তচ্যুত হয় এবং নদীগুলি প্রায় সবই আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

(খ) ক্ষতিপূরণের বোঝা

এইভাবে জার্মান অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার পরেও তার উপর চাপানো হয় ক্ষতিপূরণের বিশাল বোঝা, যা বহন করার শক্তি জার্মানির ছিল না।

(গ) রাইকারের মন্তব্য

ঐতিহাসিক রাইকার যথার্থই বলেছেন যে, এই সন্ধির নৈতিক ও বাস্তব উভয় দিকই ত্রুটিপূর্ণ। তিনি আরও বলেন যে, “রাজহংসীকে উপবাসী রেখে তার কাছ থেকে সোনার ডিম প্রত্যাশা করা অবাস্তব।

(ঘ) অর্থহীন ও অবাস্তব শর্ত

উইনস্টন চার্চিল ভার্সাই সন্ধির এই অর্থনৈতিক শর্তাবলীকে ‘এক বিরাট অর্থহীন ও অবাস্তব’ বলে অভিহিত করেছেন। অধ্যাপক জে. এল. কারভিন বলেন যে, সমস্যা সমাধানের নামে ভার্সাই সন্ধি দ্বারা নতুন সমস্যার উদ্ভাবন করা হয়েছিল।

ভার্সাই সন্ধির স্বপক্ষে যুক্তি

ডেভিড টমসন, গ্যাথন হার্ডি প্রমুখ ঐতিহাসিক অবশ্য এই সন্ধির মধ্যে অন্যায় বা অযৌক্তিক কিছু দেখেন নি। তাদের বক্তব্য হল –

(১) বিজয়ী পক্ষের একতরফা চাপ

বলা হয় যে, পৃথিবীর কূটনৈতিক ইতিহাসে বিজয়ী পক্ষ বিজেতাদের উপর সর্বদাই একতরফভাবে চুক্তি চাপিয়ে দেয়। জার্মানির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। জার্মানি বিজয়ী হলে সে-ও বিজিত পক্ষের সঙ্গে ঠিক এই আচরণই করত।

(২) পূর্বে জার্মানির আচরণ

১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে স্যাডানের যুদ্ধ বা ফ্রাঙ্কো-প্রাশিয়ান যুদ্ধের পর ফ্রাঙ্কফুটের সন্ধি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে রাশিয়ার সঙ্গে ব্রেস্ট-লিটোভস্কের সন্ধি (১৯১৮ খ্রিঃ) এবং রুমানিয়ার সঙ্গে জার্মানির বুখারেস্টের সন্ধি-তে জার্মানির এই আচরণই প্রতিফলিত হয়েছে।

(৩) জার্মানি সম্পর্কে ঘৃণা

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপের জনমানসে তখন জার্মানি সম্পর্কে এমন ঘৃণার সঞ্চার হয়েছিল যে, সন্ধির শর্তাবলী রচয়িতাদের পক্ষে জার্মানি সম্পর্কে অন্য কিছু করা সম্ভব ছিল না।

(৪) শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা

শাস্তিচুক্তি রচয়িতাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইউরোপে শক্তির ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা। এই ভারসাম্য এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে আগামীদিনে জার্মানির অভ্যুত্থান সম্ভব না হয়, এবং তার বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা চিরস্থায়ী ও সুদৃঢ় হয়।

(৫) জাতীয় রাষ্ট্র গঠন

শান্তিচুক্তি রচয়িতাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল জাতীয়তার ভিত্তিতে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপকে ঢেলে সাজানো। এই কারণে জার্মানি কর্তৃক বিজিত অঞ্চলগুলি তাদের ন্যায্য অধিকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে অত্যাচারিত জাতিগুলি মুক্তি পায় এবং ‘জাতীয় রাষ্ট্র‘ গড়ে ওঠে।

(৬) জার্মানি ক্ষতিগ্ৰস্ত নয়

ভার্সাই সন্ধি দ্বারা জার্মানি প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি, এবং অন্যান্য পরাজিত দেশ অপেক্ষা জার্মানির শাস্তির পরিমাণও ছিল খুব কম। যুদ্ধের পূর্বে জার্মানি যে সব অঞ্চলগুলি দখল করেছিল, কেবলমাত্র সেগুলিই তার হস্তচ্যুত হয়। তার মূল শিল্পাঞ্চলগুলি বহাল ছিল।

(৭) টেলরের মন্তব্য

ঐতিহাসিক টেলর-এর মতে, জার্মানির ‘অন্তর্নিহিত শক্তি’ বা ‘Potential Power অব্যাহত ছিল। সুতরাং এই চুক্তিকে অবাস্তব বা কঠোর বলা যুক্তিসম্মত হবে না।

ভার্সাই সন্ধির সীমাবদ্ধতা

ভার্সাই চুক্তির মূল সীমাবদ্ধতা এর অন্তর্নিহিত দুর্বলতা নয়, আসলে এই চুক্তি সঠিকভাবে রূপায়িত হয় নি। এই চুক্তি ছিল ক্ষণস্থায়ী। ১৮১৫ সালের ভিয়েনা চুক্তি প্রায় একশো বছর স্থায়ী হয়, কিন্তু ভার্সাই চুক্তি এক দশকের মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে।

উপসংহার:- অধ্যাপক ডেভিড টমসন বলেন যে, এই সন্ধির রচয়িতারা “ভ্রান্ত স্থানে কঠোরতা ও অবিজ্ঞোচিত উদারতা’ দেখান। চুক্তি রচনাকালে তাঁরা জার্মানির প্রতি কঠোর মনোভাব দেখালেও চুক্তি রূপায়ণে তাঁরা দুর্বলতা দেখান। এর ফলে ভার্সাই সন্ধি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

(FAQ) ভার্সাই সন্ধির সমালোচনা সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. কবে কাদের মধ্যে ভার্সাই সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

২৮ জুন ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি ও মিত্রপক্ষ।

২. কোন যুদ্ধবসানে ভার্সাই সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।

৩. পোলিশ কোরিডোর লাভ করে কে?

পোল্যাণ্ড।

৪. একতরফা ও জবরদস্তিমূলক সন্ধি কাকে বলা হয়?

ভার্সাই সন্ধি।

Leave a Comment