ভীমরাও রামজী আম্বেদকর

ভারতের সংবিধানের মুখ্য প্রণেতা ড. ভীমরাও রামজী আম্বেদকর -এর জন্ম, পিতামাতা, শিক্ষা, স্কুল জীবনের ঘটনা, অধ্যক্ষ পদ লাভ, বিহার ও মধ্যপ্রদেশ ভাগ করার প্রস্তাব, বিদ্যুৎ নীতির প্রবর্তন, দলিতদের হয়ে আন্দোলন, বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ, গোলটেবিল বৈঠকে যোগদান, পুনা চুক্তি স্বাক্ষর, শ্রমিক দল প্রতিষ্ঠা, ভারতের প্রথম আইন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন, সংবিধান রচনা, গ্রন্থ রচনা ও তার মৃত্যু সম্পর্কে জানবো।

ভারতের সংবিধান রচয়িতা ভীমরাও রামজি আম্বেদকর প্রসঙ্গে ভীমরাও রামজি আম্বেদকরের মাহার সম্প্রদায়ে জন্ম, আম্বেদকরের পিতামাতার নাম, আম্বেদকরের পূর্ব নাম ও পুরো নাম, আম্বেদকরের শিক্ষা জীবন, আম্বেদকর কর্তৃক জীবন চরিত প্রকাশ, আম্বেদকরের কর্মজীবন, আম্বেদকরের বৌদ্ধ ধর্ম গ্ৰহন, দলিতদের হয়ে আম্বেদকরের আন্দোলন, আম্বেদকর ও গান্ধীজির মধ্যে পুনা চুক্তি, ভারতের সংবিধান খসড়া কমিটির সভাপতি আম্বেদকর, ভারতের সংবিধানের রচয়িতা আম্বেদকর, আম্বেদকরের গ্ৰন্থ রচনা, আম্বেদকরের মৃত্যু, আম্বেদকরের প্রতি সম্মাননা, আম্বেদকরের জীবনীর উপর নির্মিত চলচ্চিত্র বা সিনেমা ও আম্বেদকরের জীবনী রচনা।

ড. ভীমরাও রামজী আম্বেদকর

ঐতিহাসিক চরিত্রভীমরাও রামজী আম্বেদকর
জন্ম১৪ই এপ্রিল ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দ
মৃত্যু৬ই ডিসেম্বর ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ
ডাক নামবাবা, বাবা সাহেব, বোধিসত্ত্ব, ভীমা, মুখ্যনায়ক, আধুনিক বুদ্ধ
ধর্মবৌদ্ধ ধর্ম
মুখ্য অবদানসংবিধান রচনা
ভীমরাও রামজী আম্বেদকর

ভূমিকা :-  একজন ভারতীয় ব্যবহারশাস্ত্রজ্ঞ (জ্যুরিস্ট), রাজনৈতিক নেতা, বৌদ্ধ আন্দোলনকারী, দার্শনিক, চিন্তাবিদ, নৃতত্ত্ববিদ, ঐতিহাসিক, সুবক্তা, বিশিষ্ট লেখক, অর্থনীতিবিদ, পণ্ডিত, সম্পাদক, রাষ্ট্রবিপ্লবী ও বৌদ্ধ পুনর্জাগরণবাদী হিসেবে বিখ্যাত হয়ে আছেন ড. ভীমরাও রামজী আম্বেদকর।

ড. ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের জন্ম

ভীমরাও রামজি আম্বেদকর ১৪ই এপ্রিল ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে ভারত -এর গরিব “মাহার”(Mahar) পরিবারে (তখন অস্পৃশ্য জাতি হিসেবে গণ্য হত) জন্ম গ্রহণ করেন।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের পিতামাতা

তিনি ছিলেন রামজী মালোজী শাকপাল এবং ভীমাবাইের ১৪ তম তথা সর্বকনিষ্ঠ পুত্র। তার পরিবার ছিল মারাঠী অধ্যুষিত বর্তমান কালের “মহারাষ্ট্র”-এর রত্নগিরি জেলার “আম্বোভাদ” শহরে।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের শিক্ষা

তার শিক্ষা জীবন ছিল খুবই কষ্টের ও সমস্যাকর।

  • (১) অনেক ধর্না দেওয়ার পর কাকুতি-মিনতি করে দাপোলিতে তিনি প্রথম স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তখন গোটা স্কুলে তারা কেবল ছয়জন দলিত ছিলেন। তাদের জন্য আলাদা একটি কক্ষের বন্দোবস্ত ছিল।
  • (২) ছয় জন দলিত ছাত্রের মধ্যে থেকে একমাত্র ভীমরাও একাই প্রাথমিক স্কুল পেরিয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন।
  • (৩) পরবর্তীতে তার পরিবার দাপোলি থেকে সতরে চলে আসে। এখানে অবশ্য তিনি ক্লাসের ভেতরে ঢোকার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ক্লাসের এক কোনে নিজের নিয়ে আসা পাটের বস্তাটি বিছিয়ে বসতে হত।
  • (৪) তিন ছেলে বালারাম, আনান্দ্রা ও ভীমরাও এবং দুই মেয়ে মঞ্জুলা ও তুলাসাদের মধ্যে একমাত্র আম্বেদকরই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সমর্থ হন এবং কলেজের স্নাতক ডিগ্রি লাভে সক্ষম হন।
  • (৫) ১৯০৭ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রথম অস্পৃশ্য হিসেবে তৎকালীন বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। এই সাফল্য তাঁর সম্প্রদায়ে উৎসাহ যোগায়।
  • (৬) ১৯১২ সালে তিনি বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক বিজ্ঞানে ডিগ্রি লাভ করেন।
  • (৭) ১৯১৩ সালে তিনি এম. এ. পরীক্ষায় অধীত মূল বিষয় অর্থনীতিতে উত্তীর্ণ হন। এছাড়াও তিনি অন্য বিষয়, যেমন সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শনশাস্ত্র এবং নৃতত্ত্ব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
  • (৮)১৯২২ সালে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে আরো একবার আম্বেদকর লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্স এম এস সি (অর্থনীতি)-র জন্য গবেষণা লব্ধ প্রবন্ধ সম্পূর্ণ করেন ও তাকে আইনজীবী সম্প্রদায়ে যোগদানের জন্য আহবান করা হয়।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের স্কুল জীবনের একটি ঘটনা

বোম্বের এলফিনস্টন হাই স্কুলের শিক্ষক উদাহরণের একটি সমস্যা সমাধানের জন্য ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসা একজন ছাত্রকে ডাকলেন। ভীমরাও নামের ছাত্রটি উঠে আসছিল ব্ল্যাকবোর্ডের দিকে। মুহূর্তের মধ্যে যেন পুরো ক্লাসে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে গেল। অন্যান্য ছাত্ররা তাদের টিফিন বক্স রাখত ব্ল্যাকবোর্ডের পেছনে। ভীমরাও ব্ল্যাকবোর্ডের কাছে আসার আগেই সবাই তাড়াহুড়ো করে নিজেদের টিফিন বক্স সরাতে লাগল। কারণ, ভীমরাও কাছাকাছি আসলে তাদের খাবার অপবিত্র হয়ে যাবে।

আম্বেদকরের জীবনচরিত প্রকাশ

একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের পর তিনি তার শিক্ষক কৃষ্ণজী অর্জুন বেলুস্কর -এর পরামর্শে “গৌতম বুদ্ধ -এর জীবনী”র উপর একটি জীবনচরিত প্রকাশ করেন।

অধ্যক্ষ ভীমরাও রামজী আম্বেদকর

ডঃ আম্বেদকর ১৯৩৫ সালে মুম্বাইয়ের সরকারি আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন। এই পদে তিনি দু’বছর অধিষ্ঠিত ছিলেন।

বিহার ও মধ্যপ্রদেশ ভাগ করার আম্বেদকরের প্রস্তাব প্রদান

তিনি বিহার এবং মধ্যপ্রদেশকে ভাগ করার প্রস্তাব দেন, যার প্রতিফলন ঘটেছে ২০০০ সালে বিহার ভেঙে ঝাড়খন্ড ও মধ্যপ্রদেশ ভেঙে ছত্তিশগড় গঠন করার মাধ্যমে।

বিদ্যুৎ নীতির প্রবর্তক আম্বেদকর

তিনি ভারতবর্ষের জল ও বিদ্যুতনীতির প্রবর্তক। কেন্দ্র ও রাজ্য স্তরের সেচ প্রকল্প গুলির উন্নতির জন্য তিনি কেন্দ্রীয় জল কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন।

আম্বেদকরের দ্বারা প্রযুক্তিগত বল পরিষদ গঠন

তিনি কেন্দ্রীয় প্রযুক্তিগত বল পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় বিদ্যুত কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠা করেন।

দলিতদের হয়ে আম্বেদকরের আন্দোলন

১৯২৭ সালে আম্বেদকর অস্পৃশ্যতা’র বিরুদ্ধে সক্রিয় আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি গণ আন্দোলন শুরু করেন এবং সুপেয় পানির উৎস দানে সংগ্রাম চালিয়ে যান

আম্বেদকরের বৌদ্ধ ধর্ম গ্ৰহণ

তিনি বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মান্তরিত হন এবং হাজারো অস্পৃশ্যদের থেরবাদী বৌদ্ধ ধর্মে স্ফুলিঙ্গের মতো রূপান্তরিত করে খ্যাত হয়েছিলেন।

শ্রেষ্ঠ ভারতীয় ভীমরাও রামজী আম্বেদকর

২০১২ সালে হিস্ট্রি টি. ভি. ১৮ আয়োজিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে ভারতীয়দের ভোটের দ্বারা তিনি “শ্রেষ্ঠ ভারতীয়”ও নির্বাচিত হন।

দলিত আন্দোলনের পুরোধা আম্বেদকর

তিনি ছিলেন ভারতীয় জাতীয়তাবাদী এবং ভারতের দলিত আন্দোলনের অন্যতম পুরোধাপুরুষ।

কলেজে শিক্ষা অর্জনে প্রথম দলিত ব্যক্তি আম্বেদকর

বহু সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ভারতে কলেজ শিক্ষা অর্জনে আম্বেদকর প্রথম “দলিত ব্যক্তি” হিসেবে স্বীকৃতি পান ।

গোলটেবিল বৈঠকে আম্বেদকরের যোগদান

আম্বেদকরের প্রসিদ্ধি এবং অস্পৃশ্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সমর্থনের কারণে তাকে ১৯৩২ সালে লন্ডনে দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠক -এ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

আম্বেদকর ও গান্ধীজির মধ্যে পুনা চুক্তি

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে অস্পৃশ্যদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতিতে তিনি গান্ধীজীর সাথে পুনা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের সংবাদপত্র প্রকাশ

তিনি ভারতের অস্পৃশ্যদের সামাজিক অধিকার ও সামাজিক স্বাধীনতার উপর ওকালতির সময় সংবাদপত্রও প্রকাশ করেছিলেন।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের শ্রমিক দল প্রতিষ্ঠা

১৯৩৬ সালে আম্বেদকর স্বনির্ভর শ্রমিক দল বা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ল্যাবর পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৭ সালের কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়ন পরিষদ বা বিধানসভার নির্বাচনে এই দল ১৫টি আসন লাভ করে।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের বোধিসত্ত্ব উপাধি গ্রহণ

ভারতীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা তিনি “বোধিসত্ত্ব” (বুদ্ধত্ব লাভে যিনি পারমী পূরণ করছেন) উপাধিতে সম্মানিত হয়েছিলেন। অবশ্য তিনি নিজেকে “বোধিসত্ত্ব” হিসেবে কখনো দাবি করেননি।

ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গঠনের রূপরেখা ও নীতি প্রণয়নে আম্বেদকরের ভূমিকা

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক বা আরবিআই এর রূপরেখা ও নীতি নির্দেশিকা হিল্টন ইয়ং কমিশনে তাঁর দেওয়া প্রস্তাবনা থেকেই তৈরি হয়।

ভারতের প্রথম আইন মন্ত্রী আম্বেদকর

১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার দিবস -এর দিন নব গঠিত কংগ্রেস শাসিত সরকার আম্বেদকরকে জাতির প্রথম আইন মন্ত্রী পদ অর্পণ করেন, যা তিনি সানন্দে গ্রহণ করেছিলেন।

সংবিধান খসড়া সমিতির সভাপতি আম্বেদকর

২৯ ই আগস্ট আম্বেদকরকে সংবিধান খসড়া সমিতির সভাপতি করা হয়। স্বাধীন ভারতের নতুন সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে বিধানসভা কর্তৃক এই দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়।

সংবিধানের রচয়িতা আম্বেদকর

তিনি ভারতের সংবিধানের খসড়া কার্যনির্বাহক সমিতির সভাপতি ছিলেন। তিনি ভারতের সংবিধানের মুখ্য রচয়িতা।

মন্ত্রিপরিষদ থেকে আম্বেদকরের পদত্যাগ

আম্বেদকর ১৯৫১ সালে হিন্দু কোড বিল খসড়াটি সংসদে পড়ে থাকার কারণে বা রাখার কারণে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন।

লোকসভায নির্বাচনে আম্বেদকরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা

আম্বেদকর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১৯৫২ সালের নির্বাচনে লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পরাজিত হন।

আম্বেদকরের রাজ্যসভার সাংসদ পদ বহাল

পরে তাকে রাজ্যসভার সাংসদ পদে আসীন করা হয়। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি এই সদস্যপদে বহাল ছিলেন।

আম্বেদকরের দ্বারা লিঙ্গ সমতার নীতি প্রতিষ্ঠা

তার হিন্দু কোড পৈতৃক সম্পত্তি, বিবাহ ও অর্থনীতি আইনের আওতায় লিঙ্গসমতার নীতি প্রতিষ্ঠা করে। প্রধানমন্ত্রী নেহেরু, মন্ত্রিসভা ও অনেক কংগ্রেস নেতারা একে সমর্থন জানালেও বেশিরভাগ সাংসদ এর সমালোচনা করেন।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের মৃত্যু

১৯৪৮ সাল থেকে আম্বেদকর ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। অবশেষে ৬ই ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে তার দিল্লীর নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় চির নিদ্রায় শায়িত হন।

ভীম জয়ন্তী

তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করে আম্বেদকর জয়ন্তী বা ভীম জয়ন্তী হিসেবে পালিত হয়।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের প্রতিকৃতি

ভারতের সংসদ ভবনে আম্বেদকরের একটি বিশাল প্রতিকৃতি প্রদর্শিত আছে। এছাড়াও গ্রেট ব্রিটেন হোটেল (সরাইখানা), ৪৪৭ চার্চ স্ট্রিট, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার সামনে ডঃ আম্বেদকরের প্রতিকৃতি শোভা পায়।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরকে সম্মাননা

(১) ১৯৯০ সালে মরণোত্তর “ভারতরত্ন” (ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় উপাধি) উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

(২) তার সম্মানে বহু সরকারি প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়। যেমন –

  • (ক) হায়দ্রাবাদের ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর ওপেন ইউনিভার্সিটি।
  • (খ) অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম ডঃ বি আর আম্বেদকর ইউনিভার্সিটি।
  • (গ) মুজাফ্‌ফরপুরের বি আর আম্বেদকর বিহার ইউনিভার্সিটি।
  • (ঘ) জলন্ধরের বি আর আম্বেদকর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।
  • (ঙ) নাগপুরের ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

প্রশংসিত নাম ভীমরাও রামজী আম্বেদকর

আম্বেদকর নামটি উৎপীড়িত ও দীর্ঘমেয়াদী শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠে। “জয় ভীম” নামটি সমগ্র ভারতে বৌদ্ধদের কাছে প্রশংসিত হয়ে উঠে।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে ভীমরাও রামজী আম্বেদকর

তার জীবনী ও দর্শনের উপর কতিপয় চলচ্চিত্র, নাটক এবং সাহিত্য বিষয়ক লেখা তৈরি হয়।

  • (১) ২০০০ সালে জব্বার প্যাটেল পরিচালিত তার জীবনী নির্ভর ইংরেজি চলচ্চিত্র (পরে হিন্দি ও অন্য ভারতীয় ভাষায় অনূদিত) “ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর”। ভারতীয় অভিনেতা মম্মত্ত আম্বেদকর চরিত্রে অভিনয় করে সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে লাভ করেন।
  • (২) ডেভিড ব্লান্ডেল, ইউসিএলএ নৃতত্ত্বের অধ্যাপক এবং মানবজাতিতত্ত্ববিদ এরাইজিং লাইট নামের একটি ধারাবাহিক ঘটনাবহুল চিত্র ভারতের সামাজিক সমৃদ্ধির জন্য নির্মাণ করেন। এরাইজিং লাইট হল আম্বেদকরের জীবনী ও ভারতের উন্নতির উপর একটি চলচ্চিত্র।
  • (৩) রাজেশ কুমার লিখিত এবং অরভিন্দ গর পরিচালিত নাটকে “আম্বেদকর ও গান্ধী” ইতিহাসের দুই ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গান্ধী ও ভীমরাও আম্বেদকরকে তুলে ধরা হয়।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকরের জীবনী রচনা

বৈদিক পণ্ডিত প্রভাকর জোশি “ডঃ বি আর আম্বেদকর”এর উপর ২০০৪ সালে একটি জীবনী লেখেন। এর জন্য মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক তিনি মহাকবি কালিদাস পুরস্কার লাভ করেন।

ভীমরাও রামজী আম্বেদকর রচিত গ্ৰন্থ

তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্ৰন্থ হল :- ‘বুদ্ধ ও কার্ল মার্কস‘, ‘বিপ্লব ও বিপ্লব-বিরোধী প্রাচীন ভারত’, ‘বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম‘, ‘ওয়েটিং ফর অ্যা ভিসা’, থটস্‌ অন পাকিস্তান’, ‘আত্মজীবনচরিত’, ‘অস্পৃশ্য বা ভারতের ঘেটো শিশুরা’ (১৯৫১’র আদমশুমার হিসেবে বিবেচিত হয়।

উপসংহার :- আম্বেদকরের সারা জীবনই যেন এক প্রেরণার বাতিঘর। সেই ক্লাসে পাটের বস্তা বিছিয়ে বসা ছেলেটির বিশ্বব্যাপী সমাদৃত জ্ঞানী হয়ে ওঠা, দলিতদের নিয়ে তার আন্দোলন গড়ে তোলা এবং সবশেষে সংবিধানের স্থপতি ও ভারতের প্রথম আইনমন্ত্রী হওয়া – পুরো জীবন যেন অনন্য এক সংগ্রামী সফর।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “ভীমরাও রামজী আম্বেদকর” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) ভীমরাও রামজী আম্বেদকর সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. বি আর আম্বেদকর কেন বিখ্যাত?

দলিত আন্দোলনের নেতা এবং ভারতের সংবিধানের মুখ্য প্রণেতা হিসেবে।

৩. আম্বেদকর জন্মগ্রহণ করেন কোন সম্প্রদায়ে?

মাহার সম্প্রদায়ে (তখন অস্পৃশ্য জাতি হিসেবে গণ্য)।

২. আম্বেদকরের লেখা দুটি গ্ৰন্থের নাম লেখ?

‘বুদ্ধ ও কার্ল মার্ক্স’, ‘বুদ্ধ ও তাঁর ধর্ম’।

৪. বি আর আম্বেদকর এর পুরো নাম কি?

ভীমরাও রামজী আম্বেদকর।

৫. বি আর আম্বেদকর কোন সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন?

মাহার সম্প্রদায়।

Leave a Comment