আফগানিস্তান

আফগানিস্তান দেশটি প্রসঙ্গে অবস্থান, সীমা, রাজধানী ও শহর, ঐতিহাসিক দিক, বিভিন্ন সাম্রাজ্য, জলবায়ু, অর্থনীতি, প্রশাসনিক অঞ্চল, সরকার ব্যবস্থা, জাতি বৈচিত্র্য, ধর্ম ও স্থাপত্য সম্পর্কে জানবো।

পাহাড়ী দেশ আফগানিস্তান দেশটি প্রসঙ্গে আফগানিস্তানের অবস্থান, আফগানিস্তানের সীমা, আফগানিস্তানের আয়তন, আফগানিস্তানের জনসংখ্যা, আফগানিস্তানের রাজধানী, আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক দিক, আফগানিস্তানের ভৌগোলিক দিক, আফগানিস্তানের বিশাল সাম্রাজ্য, আফগানিস্তানের অর্থনীতি, আফগানিস্তানের ভাষা, আফগানিস্তানের ধর্ম, আফগানিস্তানের সরকার ব্যবস্থা, আফগানিস্তানের স্থাপত্য ও আফগানিস্তানের জাতি বৈচিত্র্য।

স্বাধীন রাষ্ট্র আফগানিস্তান

ঐতিহাসিক স্থানআফগানিস্তান
মহাদেশএশিয়া
রাজধানীকাবুল
সরকারি ভাষাপশতু
প্রধানমন্ত্রীমোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ
আফগানিস্তান

ভূমিকা :- পাহাড়ি স্থলবেষ্টিত একটি দেশ হল আফগানিস্তান। আফগানিস্তান শব্দটির অর্থ “আফগান তথা পশতুন জাতির দেশ”। অনেক সময় আফগানিস্তানকে দক্ষিণ এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অংশ হিসেবেও গণ্য করা হয়।

আফগানিস্তানের অবস্থান

দেশটি ইরান, পাকিস্তান, চীন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ও তুর্কমেনিস্তানের মধ্যস্থলে একটি ভূ-বেষ্টিত মালভূমির উপর অবস্থিত।

আফগানিস্তানের সীমা

দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণে পাকিস্তান, পশ্চিমে ইরান, উত্তরে তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তান এবং উত্তর-পূর্বে চীন।

আফগানিস্তানের রাজধানী ও শহর

দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী হল কাবুল। দেশটির অন্যান্য প্রধান শহরের মধ্যে রয়েছে কান্দাহার, হিরাট, মাজরে শরীফ। ছোট শহরগুলির মধ্যে আছে জালালাবাদ, চারিকার, কন্দোজ ও ফয়েজাবাদ।

আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক দিক

  • (১) প্রাগৈতিহাসিক যুগ -এর প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান খুঁড়ে দেখা গেছে উত্তর আফগানিস্তানে প্রায় ৫০,০০০ বছর আগে মনুষ্যবসতি ছিল। ধারণা করা হয় যে, আফগানিস্তানের কৃষি খামার সম্প্রদায় বিশ্বের প্রাচীনতম খামারগুলোর একটি।
  • (২) ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পর মধ্য এশিয়া থেকে এই অঞ্চলে লোক আসতে শুরু করে। এদের অধিকাংশই ছিল আর্য, যারা ইরান ও ভারত -এও বসতি স্থাপন করেছিল। তখন এই অঞ্চলের নাম ছিল আরিয়ানা।
  • (৩) খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে পারস্য সাম্রাজ্য আরিয়ানা দখল করে। মহামতি আলেকজান্ডার ৩৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পারস্যের সম্রাটকে পরাজিত করে আরিয়ানার পূর্ব সীমান্ত ও তারও পূর্বে চলে যেতে সক্ষম হন।
  • (৪) ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর অনেকগুলি সাম্রাজ্য তার এশীয় সাম্রাজ্যের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। এদের মধ্যে সেলুসিড সাম্রাজ্য, ব্যাকট্রিয়া সাম্রাজ্য ও ভারতের মৌর্য সাম্রাজ্য উল্লেখযোগ্য।
  • (৫) খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে মধ্য এশীয় কুষাণ জাতি আরিয়ানা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। তৃতীয় থেকে অষ্টম শতাব্দী পর্যন্ত বৌদ্ধ ধর্ম ছিল এখানকার প্রধান ধর্ম। এই সময়ের অনেক বৌদ্ধমন্দিরের ধ্বংস স্তুপ আজও আফগানিস্তানে দেখতে পাওয়া যায়। হুন নামের মধ্য এশীয় এক তুর্কীয় জাতি চতুর্থ শতাব্দীতে এসে কুষাণদের পতন ঘটায়।
  • (৬) খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে আরব সেনারা আফগানিস্তানে ইসলাম ধর্ম নিয়ে আসে। পশ্চিমের হিরাট ও সিস্তান প্রদেশ আরবদের নিয়ন্ত্রণে আসে, কিন্তু আরব সেনা চলে যাওয়া মাত্রই সেখানকার জনগণ তাদের পুরনো ধর্মে ফিরে যায়।
  • (৭) দশম শতকে বর্তমান উজবেকিস্তানের বুখারা থেকে সামানিদ নামের মুসলিম শাসকবংশ আফগান এলাকায় প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে। দশম শতকে গজনীতে গজনভী রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • (৮) গজনীর সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা মামুদ গজনভি ৯৯৮-১০৩০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই অঞ্চল শাসন করেন এবং তার সময়েই তিনি কাফিরিস্তান ব্যতীত বাকি হিন্দু রাজাদের পরাজিত করে সমগ্র আফগানিস্তানে ইসলাম ধর্ম সুপ্রতিষ্ঠিত করেন।
  • (৯) গজনী সাহিত্য ও শিল্পের কেন্দ্রে পরিণত হয় এবং মামুদ বুদ্ধিজীবীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। এর মধ্যে ইতিহাসবিদ অল বিরুনী ও কবি ফিরদৌসী বিশেষ উল্লেখযোগ্য। মামুদের মৃত্যুর পর গজনীর প্রভাব হ্রাস পেতে থাকে।
  • (১০) দ্বাদশ শতকে পশ্চিম-মধ্য আফগানিস্তানের ঘুর শহরে ঘুরি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ঘুরিরা আবার ১২১৫ খ্রিস্টাব্দে মধ্য এশিয়ার খোয়ারিজম শাহদের কাছে পরাজিত হয়।
  • (১১) ১২১৯ খ্রিস্টাব্দে মঙ্গল সেনাপতি চেঙ্গিস খান তার সৈন্যদল নিয়ে খোয়ারিজম শহর হিরাট ও বালখে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেন। মোঙ্গলদের এই ক্ষতিসাধনের ফলে অনেক স্থানীয় লোকজন কৃষিজমি পরিপূর্ণ গ্রামীণ এলাকায় চলে যেতে বাধ্য হয়।
  • (১২) চতুর্দশ শতাব্দীর শেষে মধ্য এশীয় সেনাপতি তৈমুর লঙ আফগানিস্তান জয় করেন ও ভারত অভিযান করেন। তার বংশধরেরা বর্তমান আফগানিস্তানের অধিকাংশ হিরাট থেকে শাসন করতে সক্ষম হয়।
  • (১৩) ঘুরি থেকে তৈমুরীয় সাম্রাজ্যের শাসনকালে এখানে ইসলামী স্থাপত্যের বিকাশ ঘটে। এই সময়ে তৈরি বহু মসজিদ ও মিনার আজও হিরাট, গজনী ও মাজার-ই-শরিফে অস্তিত্ব রয়েছে।
  • (১৪) মায়ের দিক থেকে চেঙ্গিস খানের এবং বাবার দিক থেকে তৈমুর লঙের বংশধর ছিলেন জহিরুদ্দীন মহম্মদ বাবর ১৫০৪ সালে কাবুল দখল করেন। তারপর ১৫২৬ সালে তিনি ভারতে গিয়ে দিল্লী সুলতানি সাম্রাজ্যের লোদি রাজবংশকে পরাজিত করে মুঘল সাম্রাজ্য স্থাপন করেন।
  • (১৫) ১৭০৯ সালে স্থানীয় ঝিলজাই গোত্রের নেতা মিরওয়াইস হুতাক সাফাভিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন গুরগিন খানকে পরাজিত করে স্বাধীন আফগানিস্তান স্থাপন করেন। ১৭৪৭ সালে আহমদ শাহ দুররানি কান্দাহার শহরকে রাজধানী করে এখানে দুররানি সাম্রাজ্যের পত্তন করেন।
  • (১৬) ১৭৭২ সালের দুররানির মৃত্যু হলে তার পুত্র তৈমুর শাহ দুররানি তার স্থলাভিষিক্ত হন এবং তিনি আফগানিস্তানের রাজধানী কান্দাহার থেকে কাবুলে স্থানান্তরিত করেন। এই সময় থেকে দেশটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির কাছে অনেক অঞ্চল হারাতে শুরু করে।

আফগানিস্তানের বিভিন্ন সাম্রাজ্য

আফগানিস্তানে অনেক সাম্রাজ্য ও রাজ্য ক্ষমতায় এসেছিল, যেমন গ্রেকো-ব্যাট্রিয়ান, কুষাণ, হেফথালিটিস, কাবুল শাহী, সাফারি, সামানি, গজনভী, ঘুরি, খলজি, মুঘল সবশেষে দুররানি সাম্রাজ্য।

আফগানিস্তানের জলবায়ু

আফগানিস্তান একটি রুক্ষ এলাকা, যার অধিকাংশ এলাকা পর্বত ও মরুভূমি আবৃত। শুধু পার্বত্য উপত্যকা এবং উত্তরের সমভূমিতে গাছপালা দেখা যায়। এখানকার গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া গরম ও শুষ্ক, কিন্তু শীতকালে প্রচণ্ড শীত পড়ে।

আফগানিস্তানের অর্থনীতি

স্বাধীন রাষ্ট্র আফগানিস্তানের অধিবাসীরা মূলত কৃষক ও পশুপালক। বিশ শতকে খনি ও ভারী শিল্পের উন্নতি ঘটলেও স্থানীয় হস্তশিল্প গুরুত্ব হারায়নি। ইউরোপ, আমেরিকাজাপান -এর সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধির উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পগুলি সাফল্যের মুখ দেখে। এছাড়া বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির সহায়তায় আফগানিস্তান রাস্তা, বাঁধ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, বিমানবন্দর, কারখানা ও সেচ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।

আফগানিস্তানের প্রশাসনিক অঞ্চল

আফগানিস্তানে ৩৪টি প্রদেশ বা ওয়েলায়েত আছে। প্রতিটি প্রদেশের নিজস্ব রাজধানী আছে। প্রদেশগুলি জেলায় বিভক্ত। এক একটি জেলা সাধারণত একটি করে শহর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল নিয়ে গঠিত। প্রদেশ গুলি হল –

  • (১) বাদাখশান,
  • (২) বাদগিস,
  • (৩) বাগলান,
  • (৪) বালখ,
  • (৫) বামিয়ান,
  • (৬) দাইকুন্ডি,
  • (৭) ফারাহ,
  • (৮) ফারিয়াব,
  • (৯) গজনি,
  • (১০) ঘাওর,
  • (১১) হেলমান্দ,
  • (১২) হিরাট,
  • (১৩) জোওযজান,
  • (১৪) কাবুল,
  • (১৫) কান্দাহার,
  • (১৬) কাপিসা,
  • (১৭) খোস্ত,
  • (১৮) কুনার,
  • (১৯) কুন্দুজ,
  • (২০) লাগমান,
  • (২১) লোওগার,
  • (২২) নানকারহার,
  • (২৩) নিমরুজ,
  • (২৪) নুরেস্তান,
  • (২৫) ওরুজগান,
  • (২৬) পাকতিয়া,
  • (২৭) পাক্তিকা,
  • (২৮) পাঞ্জশির,
  • (২৯) পারভান,
  • (৩০) সামাংগান,
  • (৩১) সারে বোল,
  • (৩২) তাখার,
  • (৩৩) ওয়ার্দাক,
  • (৩৪) জাবুল।

আফগানিস্তানের সরকার ব্যবস্থা

  • (১) আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী প্রতিটি প্রদেশে একজন করে গভর্নর নিয়োগ করেন। গভর্নর কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। প্রদেশের পুলিশ প্রধানকেও অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী নিয়োগ দেন।
  • (২) অবশ্য কাবুল শহরে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। সেখানে শহরের মেয়রকে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন এবং শহরটির প্রশাসন কাবুল প্রদেশ থেকে স্বতন্ত্র।

আফগানিস্তানের জাতি বৈচিত্র্য

আফগানিস্তানে বহু বিচিত্র জাতির বসবাস দেখা যায়। এদের অধিকাংশই মুসলিম। মধ্য এশিয়া, চীন, ভারতীয় উপমহাদেশ ও ইরান – এই চার সাংস্কৃতিক অঞ্চলের মিলন ঘটেছে এখানে। এর ফলে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছে বিপুল ভাষাগত ও জাতিগত বৈচিত্র্য। এখানকার মানুষ ইরান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, কিরগিজস্তান, মঙ্গোলিয়া, চীন, আরব উপদ্বীপ ও আরও বহু জায়গা থেকে এসেছে।

আফগানিস্তানের ধর্ম

স্বাধীন রাষ্ট্র আফগানিস্তানের বিভক্ত জাতিসত্তার দৃঢ়তম বন্ধন হল ধর্ম। এখানকার প্রায় ৯৯ শতাংশই মুসলিম, এর মধ্যে ৮৪ শতাংশ সুন্নি এবং প্রায় ১৫ শতাংশ শিয়া মুসলিম। এখানে অল্পসংখ্যক হিন্দু, শিখ, পারসিক ও ইহুদী আছেন। এখানকার হজরত আলির কবর মাজার-এ-শরিফ অনেক মুসলিমের তীর্থস্থান।

আফগানিস্তানের স্থাপত্য

আফগানিস্তানে গ্রিক ও বৌদ্ধ স্থাপত্যের ধ্বংসস্তুপ, মন্দির, খিলান, স্তম্ভ, সূক্ষ্ম কারুকাজের ইসলামী মিনার ও দুর্গ এখনও বিদ্যমান। সবচেয়ে বিখ্যাত হল হেরাত ও মাজার-এ-শরিফের মসজিদ। এছাড়া রয়েছে জাম শহরের একটি মসজিদের মিনার, ১০০০ বছরের পুরনো কালে-ইয়ে বোস্তের মহান খিলান, চেল জিনা বা চল্লিশ ধাপ, কান্দাহারের সম্রাট বাবরের রেখে যাওয়া পাথরের খোদাইকর্ম, বামিয়ানের বুদ্ধ, গজনীর বিজয় চূড়া, বাবরের সমাধি ও কাবুলের বালা হিস্‌সার।

উপসংহার :- প্রাচীনকাল থেকেই আফগানিস্তান এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। বহু প্রাচীন বাণিজ্য ও বহিরাক্রমণ এই দেশের মধ্য দিয়েই সংঘটিত হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বহু লোক আফগানিস্তানের ভেতর দিয়ে চলাচল করেছেন।


প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই “আফগানিস্তান” পোস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই adhunikitihas.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। যে কোনো প্রশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলো করুণ এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তুলুন।

সবশেষে আপনার কাছে আমাদের অনুরোধ যদি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে Comment ও Share করে দিবেন, (ধন্যবাদ)।

(FAQ) আফগানিস্তান দেশ সম্পর্কে জিজ্ঞাস্য?

১. আফগানিস্তান কোন মহাদেশে অবস্থিত?

এশিয়া।

২. আফগানিস্তানের রাজধানী কোথায়?

কাবুল।

৩. আফগানিস্তানের সরকারি ভাষা কি?

পশতু।

৪. আফগানিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কে?

মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ।

অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থানগুলি

Leave a Comment